ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালায় হুরিয়াত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালায় হুরিয়াত কাশ্মীরি লেখক ও বুদ্ধিজীবী জুনাইদ কুরেশি। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরি লেখক ও বুদ্ধিজীবী জুনাইদ কুরেশি সর্বদলীয় হুরিয়াত কনফারেন্সের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘তারা পাকিস্তানের আদর্শ প্রচারে নিয়োজিত রয়েছে এবং কাশ্মীরিদের উন্নয়নে কখনো কাজ করেনি।’

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের লেখক এবং রাজনৈতিক কর্মী ড. শাবির চৌধুরী সঙ্গে আলাপকালে জুনাইস কুরেশি পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসাদ দুরানির ‘দ্য স্পাই ক্রনিক্যালস’ এর বরাত দিয়ে বলেন, ‘হুরিয়াত সৃষ্টিতে পাকিস্তান গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা ছিল। ’

অল পার্টিস হুরিয়াত কনফারেন্স (এপিএইচসি) বা তেহরীক-ই-হুরিয়াত হচ্ছে ২৬টি রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠনের জোট, যা ১৯৯৩ সালের ৯ মার্চ গঠিত হয়।

তাদের ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতার পক্ষে কাজ করা।

জুনাইদ বলেন, ‘১৯৯৩ সালে যখন হুরিয়াত গঠিত হলো, এর সঙ্গে যুক্ত সব রাজনৈতিক দলের একটি করে জঙ্গি শাখা ছিল, যেমন জামাত-ই-ইসলামির জঙ্গি শাখা ছিল হিজবুল মুজাহিদীন। ’

‘হুরিয়াত কনফারেন্স কখনোই জম্মু ও কাশ্মীরের শান্তি প্রক্রিয়া সমর্থন করেনি, বরং মানুষের মধ্যে সন্ত্রাস ও বিচ্ছিন্নতাবাদে মদদ দিয়ে আসছিল। ’

আমস্টারডাম ভিত্তিক ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের (ইএফএসএএস) পরিচালক জুনাইদ আরও বলেন, ‘২০০০ সালের ২৬ জুলাই হিজবুল মুজাহিদীনের অধিনায়ক আবদুল মজিদ দার একটি একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। কিন্তু হুরিয়াত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এ যুদ্ধবিরতির সমালোচনা করে। এতে প্রমাণিত হয়, হুরিয়াত রক্তবন্যা চায় এবং কাশ্মীর নিয়ে রাজনীতি চালিয়ে যেতে চায়। ’

‘হুরিয়াত নিজেকে জম্মু ও কাশ্মীরের একটি রাজনৈতিক মুখ হিসেবে উপস্থাপন করতো এবং শান্তি প্রক্রিয়ায় কখনো কোনো সন্ত্রাসী দলকে যোগ দিতে দেয়নি। ’

‘হুরিয়াত কনফারেন্স নিজেদের জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের একমাত্র প্রতিনিধি বলে দাবি করে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারা কখনো কাশ্মীর উপত্যকার জনগণের প্রতিনিধিত্বও করেনি। ’

জুনাইদ বলেন, ‘তিনটি হুরিয়াত কনফারেন্স থাকলেও তাদের কোনোটিতেই জম্মু ও লাদাখের কোনো সদস্য নেই। এমনকি উপত্যকার কিছু অঞ্চলের অল্প মানুষকেই তারা প্রতিনিধিত্ব করে। হিন্দু পণ্ডিত, দোগ্রা ও শিখসহ অন্য সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধি হুরিয়াতে নেই। ’

‘হুরিয়াত কনফারেন্স পাকিস্তানের পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালায় এবং তাদের দাবি অনুযায়ী তারা যদি জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণের একমাত্র প্রতিনিধি হয়, তাহলে আমাদের কি হুরিয়াতের দরকার আছে? পাকিস্তানও একই কথা বলে। তাহলে মধ্যস্থতার জন্য হুরিয়াতকে দরকার কেন?’

‘২০০৪ সালে একবার এবং ২০১৪ সালে আরেকবার ভাঙনের মুখে পড়ে অল পার্টিস হুরিয়াত কনফারেন্স। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আদর্শ এক হওয়া সত্ত্বেও তারা ঐক্যবদ্ধ থাকতে ব্যর্থ হয়েছে। ’

এ বুদ্ধিজীবী মনে করেন, কাশ্মীরে বসবাসকারী মুসলমান জনগোষ্ঠীর বিশাল একটি অংশ পাকিস্তানের আদর্শ সমর্থন করে না কারণ উপত্যকার মুসলমানরা সুফিবাদে বিশ্বাসী, ইসলামী আদর্শে নয়।

তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান নিজেই জম্মু-কাশ্মীরের উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করে আছে, অথচ তারা কাশ্মীর উপত্যকায় হুরিয়াত কনফারেন্সকে সমর্থন দিচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য, যা অযৌক্তিক। ’

‘হুরিয়াতের অনেক নেতা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী এখন কারাগারে বন্দি। কয়জন কাশ্মীরি তাদের সমর্থনে বিক্ষোভ করছে? কাশ্মীর উপত্যকায় তাদের কতটা সমর্থন রয়েছে, তা এর মাধ্যমেই বোঝা যায়। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।