ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

চীনা সেনাদের আগ্রাসন রুখতে ভারতের নতুন কৌশল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
চীনা সেনাদের আগ্রাসন রুখতে ভারতের নতুন কৌশল

ঢাকা: নিঃশব্দে ভারতীয় সীমান্তে আগ্রাসন চালাচ্ছে চীন। অরুণাচল প্রদেশের বিতর্কিত অঞ্চলে গড়ে তুলেছে একটি গ্রাম, উপগ্রহ চিত্রে যা স্পষ্ট ধরা পড়েছে।

দেখা যায়, সীমান্ত থেকে প্রায় ৪.৫ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে অরুণাচলের আপার সুবানসিরি জেলায় গ্রামটি গড়ে তুলেছে চীনের সেনাবাহিনী।

ঐতিহাসিক পটভূমি বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, ওই অঞ্চলটি ১৯৫৯ সালের ২৫ আগস্ট লংজু ঘটনার পর থেকেই চীনাদের দখলে রয়েছে। ১৯৫৯ সালে প্রথম এখানেই সামনাসামনি যুদ্ধ হয় পিপলস লিবারেশন আর্মি ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর। লংজুতে ভারতীয় পোস্টে হামলা চালিয়ে আসাম রাইফেলসের চার সদস্যকে যুদ্ধবন্দি করেছিল চীনা বাহিনী।

এই অঞ্চলটি চীন দখল করার পর তার তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত। প্রতিবাদের মুখে সাময়িকভাবে পিছু হটলেও আবারও ওই অঞ্চল দখলে নেয় চীন সেনাবাহিনী।

২০২০ সালের ২১ নভেম্বর ভারতে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র জি রং চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতি টুইট করেন। তিনি বলেন, জাঙ্গানা (চীন অধিকৃত তিব্বতের দক্ষিণ অংশ) সম্পর্কে চীনের অবস্থান ধারাবাহিক এবং স্পষ্ট। আমরা কখনও চীনা ভূখণ্ডে অবৈধভাবে প্রতিষ্ঠিত তথাকথিত ‘অরুণাচল প্রদেশ’কে আমরা স্বীকৃতি দিতে পারি না। চীনের নিজস্ব ভূখণ্ডে যেকোনো পরিকাঠানো গড়ে তোলা সম্পূর্ণভাবে সার্বভৌমত্বের বিষয়।

আবার সিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল স্ট্র্যাটেজি ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর কিয়ান ফেং বলেন, ভারত ও চীন এখনও এই অঞ্চলের সীমান্ত রেখাটি চিহ্নিত করেনি। তাই ভারতীয় ভূখণ্ডে চীনা গ্রাম গড়ে তোলার অভিযোগ তারা করতে পারে না।

সম্প্রতি একটি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত খবরে দেখা যায় তাসরি চু নদীর তীরে একটি গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে। ওই গ্রামে প্রায় ১০১টি ঘর তৈরি করেছে চীনা সেনা। ছবিটি ২০২০ সালের ১ নভেম্বর তোলা হয়েছে বলে দাবি। ২০১৯ সালের ২৬ আগস্ট ঠিক একই এলাকার একটি উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায় জঙ্গলাকীর্ণ নদীর তীরে জনবসতির কোনো চিহ্ন নেই। কিন্তু আড়াই মাস আগে তোলা ছবিতে দেখা যাচ্ছে একটি গ্রাম।

এদিকে সীমান্তবর্তী এলাকার উন্নয়নে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ৭৮৩.৭১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল ভারত। এর মধ্যে ১৯০ কোটি বরাদ্দ হয়েছিল ভারত-চীন সীমান্তের জন্য। ভারত মনে করে পর্যটনের জন্য সীমান্তবর্তী এলাকা খুলে দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। সীমান্ত এলাকা গোপন করার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।

বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী ৩৮তম প্যারালালে না গেলে দক্ষিণ কোরিয়ার সফর সম্পূর্ণ হয় নয়। তাই এখানেই সীমান্তবর্তী এলাকায় পর্যটনের পক্ষেই সওয়াল করেছে ভারত। বিশেষজ্ঞদের মতে, আমাদের দেশের পর্যটন শিল্প কোনো অংশে কম নয়। আর সীমান্তে পর্যটকদের ভিড় বাড়লেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কমবে চীনা আগ্রাসন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।