তিব্বতে ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যার’ আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন নির্বাসিত তিব্বত সরকারের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা পেপ্পা সেরিং। একইসঙ্গে তিনি ২০২২ সালের শীতকালীন অলিম্পিকের আগে আন্তার্জাতিক সম্প্রদায়কে চীনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার তিনি বলেছেন, তিব্বতে ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যার’ একটি হুমকি রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ২০২২ বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিকের আগে চীনের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
পেপ্পা সেরিং এ মাসেই কেন্দ্রীয় তিব্বতী প্রশাসনের (সিটিএ) সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি রয়টার্সকে বলেন, তারা চীনের সাথে শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু বেইজিংয়ের বর্তমান নীতি তিব্বতী সংস্কৃতির ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।
ভারতের ধর্মশালা থেকে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেরিং বলেন, সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। একবার এটি নির্মূল হয়ে গেলে, কোনও কিছুর জন্য লড়াই করার কোনও মানে হয় না।
তিব্বতের অধিকার গোষ্ঠী এবং তিব্বতীরা বলছে, সরকার ধর্ম, ভাষা শিক্ষা এবং শ্রমের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ রেখেছে। অন্যদিকে চীনের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী হান জনগণের অভিবাসনকে উৎসাহিত করছে।
‘আমি সবসময় বলে এসেছি, আমরা বহুসংস্কৃতিবাদের বিরুদ্ধে নই...। কিন্তু একটি একক সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসংখ্যা একটি সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি অপ্রতিরোধ্য করে তোলে, যা সাংস্কৃতিক গণহত্যার সমান, বিশেষ করে যখন এটি রাষ্ট্র দ্বারা প্রয়োগ করা হয়,’ সেরিং বলেন।
তবে তিব্বতী জনগণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অবিযোগ অস্বীকার করে বেইজিং। তারা বলছে, চীন যা করছে তা দারিদ্র্য দূর করার জন্য এবং জনগণ তা সমর্থন করে।
চীনা সৈন্যরা ১৯৫০ সালে তিব্বত দখল করে। বেইজিং এটাকে ‘শান্তিপূর্ণ মুক্তি’ বলে অভিহিত করে। ১৯৫৯ সালে তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দলাই লামা চীনা শাসনের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ডাক দেন। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে বর্তমানে ভারতে নির্বাসনে আছেন।
এ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ তিব্বতী নির্বাসনে বাস করছেন।
১৯৫৯ সালের পর থেকে তিব্বত বিশ্বের অন্যতম সীমাবদ্ধ এবং সংবেদনশীল অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। সাংবাদিক, কূটনীতিক এবং অন্যান্য বিদেশিদের সরকারি সফরের বাইরে সেখানে ভ্রমণ করা নিষিদ্ধ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০২১
নিউজ ডেস্ক