করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়লেও ২০২০ সালে চীনের রপ্তানি বেড়েছে ৩.৬ শতাংশ। কিন্তু ভবিষ্যতে চীনা বাণিজ্যের এ ধারা অব্যাহত নাও থাকতে পারে।
চীনের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে জোরপূর্বক শ্রমের অভিযোগে সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। ঘটনাক্রমে, সাম্প্রতিক অতীতে মোট ১০টি শীর্ষ বাণিজ্যিক অংশীদারের মধ্যে সাতজন চীনে মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশগুলি হলো, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, তাইওয়ান, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাজ্য। ভারতও এই তালিকার একটি অংশ এবং একই মত পোষণ করে। তবে দু'দেশের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বিদ্যমান উত্তেজনা যাতে না বাড়ে সে কারণে সরাসরি মন্তব্য করা থেকে বিরত রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ১১ বারের জন্য চীনা পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটন জিনজিয়াং প্রদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং জোরপূর্বক শ্রমের ব্যাপক ব্যবহারের কারণ দেখিয়ে চীন থেকে পোশাক এবং কম্পিউটার যন্ত্রাংশের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল। পরবর্তীতে এই বছরের জানুয়ারিতে আমেরিকা জিনজিয়াং থেকে তুলা এবং টমেটো আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কারণ সেখানে সংখ্যালঘু উইগুর মুসলিমরা নির্যাতন, অমানবিকতার শিকার। এর ফলে চীন ২০২০ সালে ৫৪.৩ মিলিয়ন ডলার লোকসান করেছে, ২০১৯ সালে তাদের ৬২.৫ মিলিয়ন ডলারের নিট মুনাফা ছিল।
কিছুদিন আগে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন তাই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন যাতে জোর পূর্বক শ্রম ব্যবহারের সাথে জড়িত মাছ ধরার কার্যক্রমে ভর্তুকি না দেওয়া হয়। এর পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি চীনা মৎস্য সংস্থা থেকে টুনা, সোর্ডফিশ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক খাবার আমদানি নিষিদ্ধ করে।
মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারি আলেজান্দ্রো এন মেয়রকাস বলেছেন, যেসব কোম্পানি তাদের কর্মীদের শোষণ করে তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করার কোন জায়গা নেই। জোরপূর্বক শ্রম থেকে তৈরি পণ্য কেবল শ্রমিকদের শোষণ করে না, বরং আমেরিকান ব্যবসাগুলিকে আঘাত করে এবং ভোক্তাদের অনৈতিক কেনাকাটার সম্মুখীন করে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২১
নিউজ ডেস্ক