ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

পৌরবাসীর সেবা করতেই মেয়র হয়েছেন লিয়াকত আলী

একরামুল কবীর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
পৌরবাসীর সেবা করতেই মেয়র হয়েছেন লিয়াকত আলী লিয়াকত আলী

গোপালগঞ্জ: সবাই স্বপ্ন দেখে, কারো স্বপ্ন হয়তো বাস্তবেও রুপ নেয়। সেই ১৯৮৮ সালের কথা।

যখন তিনি গোপালগঞ্জ পৌরসভার কমিশনার ছিলেন। তখনই স্বপ্ন দেখেছিলেন, একদিন মেয়র হবেন। পৌর কমিশনার হিসেবে তিনি জনগণের সঠিক সেবা অর্থাৎ জনগণের চাহিদা অনুযায়ী এলাকার উন্নয়ন করতে পারেননি।

সে সময় চেয়ারম্যানের ইচ্ছা ছাড়া কিছুই করা যায়নি। তখনই ভেবেছিলেন, একদিন গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হবেন। জনগণের সুবিধার জন্য যেসব কাজ করা দরকার তা করবেন। গোপালগঞ্জ পৌরসভাটিকে একটি আধুনিক পৌরসভায় রুপান্তরিত করবেন। বাইরে থেকে লোকজন এসেই যেন অবাক হয়ে যায়। এ উন্নয়নের সব জায়গায় তার হাতের একটা ছাপ থাকবে।

দীর্ঘ ২৭ বছর পর এমন নানা স্বপ্ন নিয়েই গত ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন কাজী লিয়াকত আলী লেকু।

রোববার(০৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন কাজী লিয়াকত আলী লেকু।

তিনি পৌর এলাকার প্রধান সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন সুপেয় পানিকে। সুপেয় পানির সমস্যায় ভুগছেন সোয়া লাখ পৌরবাসী। এটির সমাধান করবেন তিনি।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলেছেন শহরের রাস্তা-ঘাট উন্নয়নের ব্যাপারে। পৌর এলাকার ড্রেনেজ সমস্যা, জলাবদ্ধতা সমস্যা নিরসনসহ শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যও কাজ করবেন।

কাজী লিয়াকত আলী লেকু বাংলানউজকে জানান, জনগণের সেবা করার জন্য তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। জনগণের পাশে থেকে তাদের নানা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন। ১৯৮৮ সালে সাবেক ৩নং ওয়ার্ড (বর্তমান ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ড) থেকে প্রথম কমিশনার নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৯০ সালে গোপালগঞ্জ পৌরসভার ভাইস-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯২ সালে সাবেক ৩নম্বর ওয়ার্ড থেকে তিনি ফের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে জেলা কৃষকলীগের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৪ সাল থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১১ সালে তিনি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও পরাজিত হন। কিন্তু মেয়র হওয়ার স্বপ্ন থেকে একটুও পিছু হটেননি। স্বপ্নপূরণে অবিচল থেকেছেন সব সময়। এরই মধ্যে ২০১৫ সালে কাউন্সিলের মাধ্যমে তাকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যেতে থাকেন। স্থানীয় সরকারের পৌরসভা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ার ঘোষণা দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন যেন তার হাতের মুঠোয় এসে ধরে দেয়। আর আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যান তিনি।

গোপালগঞ্জে বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে নবনির্বাচিত মেয়র কাজী লিয়াকত আলী লেকু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথার কথা বাংলানিউজকে জানালেন।

তিনি বললেন, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ডিপের পানির ভালো। ওই এলাকায় প্রকল্প গ্রহণ করে গোপালগঞ্জে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেখান থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গোপালগঞ্জে সুপেয় পানি আনা হবে। ওই পানি দিয়ে গোপালগঞ্জ পৌরবাসীকে পানি সরবরাহ করা হবে।

শহরের যানজট দূর করার জন্য তিনি শহরের পুলিশ লাইন থেকে ঘোনাপাড়া মোড় পর্যন্ত প্রধান সড়কটিকে ফোর-লেনে উন্নীত করবেন। পুরো সড়কের মাঝখান দিয়ে সোডিয়াম বাতির ব্যবস্থা রাখবেন। এছাড়া শহরের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন দৃষ্টি নন্দন প্রকল্প গ্রহণ করবেন বলে জানান।

গোপালগঞ্জ প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়ার পরও এখানে পৌরবাসী কিংবা শিশুদের চিত্তবিনোদনের কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তিনি শহরের মরা মধুমতি নদীর তীরের শেখ রাসেল শিশু পার্কটিকে আধুনিকায়ন করবেন। এখানে শিশুদের আনন্দদায়ক বিভিন্ন রাইড স্থাপন করাসহ শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহমান লেকটিকে রক্ষণাবেক্ষণ ও সৌন্দর্য বর্ধনে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। এছাড়া গোপালগঞ্জ ড্রেনেজ ব্যবস্থায় আধুনিকায়নসহ একটি সুষম উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছেন।

কাজী লিয়াকত আলী লেকু ছাত্রজীবন থেকে রোভার স্কাউটের গোপালগঞ্জ জেলার দলনেতা ছিলেন। বর্তমানে তিনি ১০৩ নং এস এম মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জেলা রাইফেলস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ও প্রচীনতম ক্লাব দি জুবল্যান্ট রেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের প্রায় ১০ বছর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৭২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
পিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।