ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সাক্ষাৎকার

মেয়রদের ইন্টারভিউ

সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে ভুল ধারণা পাল্টে দেবেন মতিয়ার

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
সীমান্তবর্তী এলাকা নিয়ে ভুল ধারণা পাল্টে দেবেন মতিয়ার ছবি: বাংলানিউজেটোয়েন্টিফোর.কম

চুয়াডাঙ্গা: নির্বাচনের আগে পৌরবাসীকে দেওয়া প্রত্যাশা বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে যেতে চাই। এছাড়া সীমান্ত এলাকা নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে তাও আমি পাল্টে দিতে চাই।



বাংলানিউজের কাছে এসব প্রত্যয়ের কথা ব্যক্ত করেন দর্শনা পৌরসভায় তৃতীয়বারের মতো নির্বাচিত মেয়র মতিয়ার রহমান।

সম্প্রতি বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথাই বলেন তিনি। পাঠকদের জন্য তার উল্লেখযোগ্য কথোপকোথন তুলে ধরা হলো:

বাংলানিউজ: দর্শনাকে মাদকমুক্ত ও সীমান্তে অপরাধ রোধে আপনার পরিকল্পনা আছে কি?

মতিয়ার রহমান: দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমেই আমি সীমান্ত শহর দর্শনাকে মাদক মুক্ত করার ব্যাপারে কাজ শুরু করবো। তবে এ শহরকে মাদক মুক্ত করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য আমি সবার সহযোগিতা কামনা করছি। এছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে সীমান্ত এলাকা সম্পর্কে যে ভুল ধারণা (চোরাচালান, মাদকদ্রব্য ও আগ্নেআস্ত্র পাচার)  রয়েছে তাও পাল্টে দিতে আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকবো।

বাংলানিউজ: দর্শনা পৌরসভাকে উপজেলা ও পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নের দাবি সবার এতে আপনার ভূমিকা কি?

মতিয়ার রহমান: আমার বাবা এ পৌরসভায় একাধিকবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। দর্শনা উপজেলা এবং এখানে পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়ন করা ছিল আমার বাবার স্বপ্ন। এখন মনের মধ্যে আমি এ স্বপ্নকে লালন করছি। এটা পৌরবাসীর প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে তাই আমার বাবার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করাই আমার প্রধান কাজ। আমি এ আন্দোলনের সঙ্গে একমত।

বাংলানিউজ: আপনার এলাকার প্রধান সমস্যা কি?

মতিয়ার রহমান: ড্রেনেজ ও রাস্তাঘাটের অব্যবস্থাপনা এ পৌর এলাকার প্রধান সমস্যা। ড্রেনেজ ও রাস্তাঘাট ঠিকমতো না থাকায় কয়েকটি মহল্লার মানুষ বিশেষ করে পৌর এলাকার আজিমপুর, মোহাম্মদপুর ও হিন্দুপাড়া এলাকার মানুষ স্বল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এছাড়াও দর্শনার আরো একটি সমস্যা হলো অপ্রশ্বস্ত সড়ক। পৌর এলাকার এসব সড়ক প্রশ্বস্ত করাসহ দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। তাছাড়া পৌর এলাকায় ওয়াটার সাপ্লাই সিস্টেম, যা বিগত দিনেই প্রক্রিয়াধীন ছিল। এটা এখন দ্রুত চালু করা দরকার।

বাংলানিউজ: এ সব সমস্যাগুলোর সমাধান করবেন কিভাবে?

মতিয়ার রহমান: জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে নৌকা প্রতীক দিয়েছেন, আমি নির্বাচনে জয়ী হয়েছি। এখন নেত্রীর কাছে কাজের ব্যাপারে কোনো আবদার করলে তিনি পূরণ করবেন বলে আশা রাখি। দেশের উন্নয়ন যেভাবে হচ্ছে, সেই ধারাবাহিকতায় দর্শনারও উন্নয়ন হবে। ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমাধান করে জলাবদ্ধতা নিরসনের উদ্যোগ নেব। এবং আরও উন্নয়নের জন্য দর্শনার সচেতন নাগরিকদের সঙ্গে নিয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করবো।

বাংলানিউজ: আপনার কাজের পরিকল্পনা কি?

মতিয়ার রহমান: পৌরসভার নয়টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, মহিলা কাউন্সিলর ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে পর্যায়ক্রমে এসব সমস্যার সমাধান করবো।

চুয়াডাঙ্গা জেলার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ছোট্ট শিল্প নগরী দর্শনা। ১৯৯১ সালের ২৭ নভেম্বর পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে দর্শনা। ১৫.৪৪ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভা ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে তৃতীয় শ্রেণি থেকে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়।

এ পৌরসভার মধ্যে রয়েছে এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি কল কেরু অ্যান্ড কোং, দর্শনা আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন ও কাস্টমস চেকপোস্টের মতো নানান অবকাঠামো।

প্রায় এক লাখ জনসংখ্যা নিয়ে গঠিত দর্শনা পৌরসভা। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে প্রথমবার দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে জয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মতিয়ার রহমান।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকে ১১ হাজার ৮০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত নেতা (স্বতন্ত্র) আশকার আলী পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৫৯ ভোট।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।