ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ধনী-দরিদ্র সবাই সমান, সবার একই খাবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০২৪
ধনী-দরিদ্র সবাই সমান, সবার একই খাবার রমজান মাসজুড়ে বায়তুল মোকাররমে ইফতার বিতরণ করছে বসুন্ধরা গ্রুপ

ঢাকা: মসজিদকে বলা হয় আল্লাহর ঘর। আর আল্লাহর ঘরে মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই।

একই নীতি অনুসরণ করে প্রতি বছর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ইফতারের আয়োজন করে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। প্রতিদিন তিন হাজার রোজাদার বায়তুল মোকাররমে ইফতার করছেন। রমজানের প্রথম দিন থেকেই জাতীয় মসজিদটিতে ইফতার বিতরণ করছে।  

এই আয়োজননে মূল বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে ধনী-দরিদ্রের কোনো ভেদাভেদ নেই। বসার বা খাবারের আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে আশপাশের দোকানি, পথচারী, ভিক্ষুক, ভবঘুরে সবাই পাশাপাশি বসে ইফতার করেন। একই খাবার খান তারা। এমনকি একপাত্রে অনেককে খেতে দেখা যায়। সবাইকে সমান মর্যাদায় অতিথি হিসেবে আপ্যায়ন করা হয়।

শনিবার (৬ এপ্রিল) আসরের নামাজের পর মসজিদের পূর্ব সাহানে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই আসরের নামাজ শেষে আর বাইরে যাননি। বয়ান হচ্ছিল। মুসল্লিরা বয়ান শুনছিলেন। হামদ ও নাত চলছিল। সময় যত গড়াচ্ছিল, অতিথির সংখ্যা ততই বাড়ছিল। কেউ নামাজের সারির মতো লম্বা লাইনে বসছিলেন, কেউ বসেছিলেন বৃত্তাকারে।

আশপাশের দোকানের কর্মচারী, গুলিস্তান এলাকায় কেনাকাটা করতে আসা সাধারণ মানুষ, ভিক্ষুক, ভবঘুরে, এতিম-মিসকিন সবাই অপেক্ষা করতে থাকেন ইফতারের জন্য। ইফতার পরিবেশনসহ অন্যান্য কাজেও অংশ নিচ্ছিলেন তারা। দেখতে দেখতে মাগরিবের আজান ভেসে আসে। শুরু হয়ে যায় ইফতার।

রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসার পাশাপাশি জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে পবিত্র রমজান মাসব্যাপী রোজাদারদের জন্য ইফতারের এই ব্যবস্থা করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর। প্রতিদিন ৩ হাজার রোজাদারের জন্য ইফতারসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে   বায়তুল মোকাররমে। সেই ইফতারে শামিল হচ্ছেন আশপাশের এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, পথচারী, বিভিন্ন মেসে থাকা শিক্ষার্থী, রিকশাচালক থেকে ছিন্নমূল শিশুরাও।

বিশাল এই আয়োজন সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে কাজ করছে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ মুসল্লি কমিটি। মুসল্লি কমিটির সেক্রেটারি মিজানুর রহমান মানিকের তথ্য মতে, প্রতিদিন ৩ হাজার মানুষের ইফতারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে এখানে। রমজানের ৩০ দিনে ৯০ হাজার মানুষের ইফতার আয়োজন করা হবে। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মিজানুর রহমান মানিক বলেন, জাতীয় মসজিদে ইফতার করতে আসা মানুষজনের মধ্যে একেবারে দরিদ্র মানুষ যেমন থাকেন, তেমনি থাকেন অর্থবিত্তের মালিকরাও। সবাই এখানে অতিথি। ভ্রাতৃত্বপূর্ণ পরিবেশে পাশাপাশি বসে ইফতার করেন তারা। এখান থেকে ইসলামের সমতার শিক্ষা গ্রহণ করার আছে বলে মনে করেন তিনি।

বায়তুল মোকাররমে ইফতার করতে এসেছিলেন আলী আফতাব মজুমদার। একসময় সরকারি চাকরি করেছেন তিনি। বর্তমানে একটি বিমা প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। মতিঝিলে অফিস। কথা প্রসঙ্গে তিনি বললেন, বায়তুল মোকাররমে জামাতে নামাজ পড়তে আসি। ইফতার করে ফিরতে ফিরতে মাগরিবের নামাজ শেষ হয়ে যায়। তাই ইফতারটাও এখানে করি। আমার আশপাশে অনেক সাধারণ দরিদ্র মানুষও বসেন। তাদের সঙ্গে আমি কথা বলি। একে অপরের দিকে শরবতের গ্লাসটা ঠেলে দিই। খুব ভালো লাগে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০২৪
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।