ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

কোরবানির কিছু জরুরি মাসায়েল

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
কোরবানির কিছু জরুরি মাসায়েল

ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। মুসলিম উম্মাহর দু’টি উৎসবের অন্যতম একটি এই ঈদ।


ঈদুল আজহার প্রধান আকর্ষণ পশু কোরবানি করা। নিজের অর্থে কেনা পশুটি আল্লাহর নামে উৎসর্গ করে জবাই করার মাধ্যমে একজন প্রকৃত মুসলমান মূলত নিজেকে আল্লাহর কাছে সমপর্ণের শিক্ষা নেয়।

পশু কোরবানির অনেক ফজিলত রয়েছে। দু’টি পর্বে কোরবানির পশু কেনা ও জবাই সংক্রান্ত ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ মাসআলা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হবে। মঙ্গলবার দেওয়া হলো ১২টি মাসআলা।

১ মাসআলা: যার ওপর ছদকা ফিতর ওয়াজিব তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। আর যে এমন সম্পদশালী নয় তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব হবে না। কিন্তু ওয়াজিব না হওয়া সত্ত্বেও যদি করতে পারে, তবে সওয়াব পাবে।
২ মাসআলা: মুসাফিরের ওপর (যখন সে তার ঘরবাড়ি ও এলাকার বাইরে সফরে থাকে) কোরবানি ওয়াজিব নয়।
৩ মাসআলা: ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সন্ধ্যা পর্যন্ত এই তিনদিন কোরবানি করার সময়। এই তিন দিনের মধ্যে যেদিন ইচ্ছা সেদিনই কোরবানি করা যায়; কিন্তু প্রথম দিন সবচেয়ে উত্তম, তারপর দ্বিতীয় দিন ও তারপর তৃতীয় দিন।
৪ মাসআলা: ঈদুল আজহার নামাজের আগে কোরবানি করা জায়েজ নয়। ঈদের নামাজের পর কোরবানি করতে হবে।
৫ মাসআলা: ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করা জায়েজ। সূর্যাস্তের পর আর কোরবানি হবে না।
৬ মাসআলা: কোরবানির তিনদিনের মধ্যে যে দু’টি রাত অন্তুর্ভূক্ত, সেই দুই রাতেও কোরবানি করা জায়েজ। কিন্তু রাতের বেলায় জবাই করা ভালো নয়। যদি কোনো একটি রগ কাটা না হয় তবে কোরবানি জায়েজ হবে না।
৭ মাসআলা: কেউ জিলহজের ১০ বা ১১ তারিখে সফরে ছিল বা গরীব ছিল, কিন্তু ১২ তারিখে সূর্যাস্তের আগে সে বাড়ি এসেছে বা কোনোভাবে সম্পদশালী হয়েছে অথবা কোথাও ১৫ দিন থাকার নিয়ত করেছে, এসব অবস্থায় তার কোরবানি ওয়াজিব হবে।
৮ মাসআলা: নিজের কোরবানির পশু নিজ হাতে জবাই করা মুস্তাহাব। যদি নিজে জবাই করতে না পারে, তবে অন্যের দ্বারা জবাই করা যাবে। কিন্তু নিজে সামনে দাঁড়িয়ে থাকা ভালো। মেয়েরা পর্দার ব্যাঘাত হয় বলে যদি সামনে উপস্থিত না থাকতে পারে, তবে তাতে কোনো ক্ষতি নেই।
৯ মাসআলা: কোরবানি করার সময় মুখে নিয়ত করা ও দোআ উচ্চারণ করা জরুরি নয়। শুধু মনে চিন্তা করে নিয়ত করে মুখে শুধু বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করলে তার কোরবানিও জায়েজ হবে। কিন্তু স্মরণে থাকলে জায়েজ হলেও উক্ত দোআ দু’টি পড়া বেশি উত্তম।
১০ মাসআলা: কোরবানি শুধু নিজের পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয়। এমন কি অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তান যদি সম্পদের মালিক হয়, তবুও তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব নয় ও মা-বাবার উপরও ওয়াজিব নয়। যদি কেউ সন্তানের পক্ষ থেকে কোরবানি করতে চায়, তবে তার নফল কোরবানি হবে। কিন্তু অপ্রাপ্তবয়স্কের সম্পদ থেকে কিছুতেই কোরবানি হবে না।
১১ মাসআলা: বকরী, পাঠা, খাসি, ভেড়া, দুম্বা, গাভি, ষাঁড়, বলদ, মহিষ, উট এই ধরনের গৃহপালিত পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ। হরিণ ও অন্যান্য হালাল বন্যপশু দিয়ে কোরবানি আদায় হবে না।
১২ মাসআলা: গরু, মহিষ ও উট- এই তিন প্রকার পশুতে সাতজন পর্যন্ত অংশীদার হয়ে কোরবানি করতে পারে। তবে কোরবানি জায়েজ হওয়ার জন্য শর্ত হলো- কারো অংশ যেন সাত ভাগের এক ভাগের চেয়ে কম না হয় ও কারো যেন শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত না থাকে, সবারই যেন কোরবানির নিয়ত থাকে। অবশ্য যদি কারো আকিকার নিয়ত থাকে, তবে সেটাও জায়েজ হবে। কিন্তু যদি একজনেরও শুধু গোশত খাওয়ার নিয়ত থাকে, কোরবানির বা আকিকার নিয়ত না থাকে, তবে কারো কোরবানিই জায়েজ হবে না। এমনিভাবে যদি মাত্র একজনের অংশ সাতভাগের এক ভাগের চেয়ে কম হয়, তবে অংশীদারদের সবার কোরবানি নষ্ট হয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৩ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২৪
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।