লোকমুখে একটি হাদিস প্রচলিত রয়েছে যে মসজিদে দুনিয়াবি কথা বললে ৪০ বছরের আমল নষ্ট হয়ে যায়। তবে এ রকম কোনো হাদিস নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত নেই।
দুনিয়াতে মসজিদ হলো অত্যন্ত সম্মানিত ও মর্যাদাপূর্ণ স্থান। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনুল কারিমে মসজিদকে নিজের দিকে সম্পৃক্ত করেছেন এবং মসজিদ আবাদকারীদের প্রশংসা করেছেন।
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, اِنَّمَا یَعۡمُرُ مَسٰجِدَ اللّٰهِ مَنۡ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ وَ اَقَامَ الصَّلٰوۃَ وَ اٰتَی الزَّکٰوۃَ وَ لَمۡ یَخۡشَ اِلَّا اللّٰهَ فَعَسٰۤی اُولٰٓئِکَ اَنۡ یَّکُوۡنُوۡا مِنَ الۡمُهۡتَدِیۡنَ
অর্থ: একমাত্র তারাই আল্লাহর মসজিদসমূহ আবাদ করবে, যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করে না। আশা করা যায়, ওরা হিদায়াতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’। (সূরা: আত তাওবা, আয়াত: ১৮)
মসজিদের মর্যাদা রক্ষা করা মুসলমানদের কর্তব্য ও তাকওয়ার দাবি। কোরআনুল কারিমের আল্লাহ বলেছেন, ذٰلِکَ وَمَنۡ یُّعَظِّمۡ شَعَآئِرَ اللّٰهِ فَاِنَّهَا مِنۡ تَقۡوَی الۡقُلُوۡبِ
অর্থ: এটাই আল্লাহর বিধান এবং কেউ আল্লাহর নিদর্শনাবলীকে সম্মান করলে এটাতো তার অন্তরের তাকওয়ারই বহিঃপ্রকাশ’। (সূরা: হজ, আয়াত: ৩২)
মসজিদ ইবাদতের স্থান। মসজিদে দুনিয়াবি কাজকর্ম, কথাবার্তা থেকে বিরত থাকার যথাসাধ্য চেষ্টা করা উচিত। কোরআনে আল্লাহ তাআলা মসজিদকে মর্যাদায় সমুন্নত করার ও মসজিদে তার নাম স্মরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং মসজিদে ইবাদতকারীদের প্রশংসা করেছেন।
আল্লাহ বলেন, فِیۡ بُیُوۡتٍ اَذِنَ اللّٰهُ اَنۡ تُرۡفَعَ وَ یُذۡکَرَ فِیۡهَا اسۡمُهٗ ۙ یُسَبِّحُ لَهٗ فِیۡهَا بِالۡغُدُوِّ وَ الۡاٰصَال رِجَالٌ لَّا تُلۡهِیۡهِمۡ تِجَارَۃٌ وَّ لَا بَیۡعٌ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰهِ وَ اِقَامِ الصَّلٰوۃِ وَ اِیۡتَآءِ الزَّکٰوۃِ ۪ۙ یَخَافُوۡنَ یَوۡمًا تَتَقَلَّبُ فِیۡهِ الۡقُلُوۡبُ وَ الۡاَبۡصَارُ
অর্থ: ‘যেসব গৃহকে মর্যাদায় সমুন্নত করতে এবং তাতে তার নাম স্মরণ করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে সকাল ও সন্ধ্যায় তার পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এমন ব্যক্তিরা যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং ক্রয় বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ থেকে, নামাজ কায়েম ও জাকাত প্রদান থেকে বিরত রাখে না, তারা ভয় করে সেই দিনকে যেদিন অন্তর ও দৃষ্টিসমূহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে’। (সূরা: নূর, আয়াত: ৩৬, ৩৭)
নিছক দুনিয়াবি কথাবার্তা ও কাজকর্মের জন্য মসজিদে যাওয়া এবং সেখানে অবস্থান করা নাজায়েজ। তবে কোনো দ্বীনী কাজের উদ্দেশে মসজিদে যাওয়ার পর প্রসঙ্গক্রমে অন্যের নামাজ বা ইবাদতে অসুবিধা সৃষ্টি না করে দুনিয়াবি কোনো বৈধ কথাবার্তা বলা জায়েজ।
অন্যান্য ইবাদতকারীর অসুবিধা করে মসজিদে কথা বলা, জোরে জিকির বা কোরআন তেলওয়াত করা নাজায়েজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০২৪
জেএইচ