গাজীপুর: টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে লাখ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে এবারের (৫৮তম) বিশ্ব ইজতেমা। রোববার দুপুর ১২টা ৩৭ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বাদ আছর পাকিস্তানের মাওলানা হারুনের আম বয়ানে শুরু হয় নিজামুদ্দিন মারকাজ (মাওলানা সাদ) অনুসারীদের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা। এতে অংশ নেন দেশ-বিদেশের তাবলিগ জামাতসহ লাখ লাখ মুসল্লি। আজ সকাল থেকেই আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে গাজীপুরসহ আশ-পাশের জেলা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানে আসেন।
আখেরি মোনাজাতে মহান আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত প্রার্থনা করেন। ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি স্রষ্টার দরবারে কান্নাকাটি করেন।
আখেরি মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মার ঐক্য, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। বিশ্বের পথভ্রষ্ট মুসলিমদের সঠিক পথে চলা এবং তাবলিগের কাজে সবাইকে নিয়োজিত হওয়ার তাওফিক কামনা করা হয়। এ সময় লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় আমিন-আমিন ধ্বনি।
রোববার আখেরি মোনাজাতে শেষ হলো এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার সব আনুষ্ঠানিকতা।
এর আগে ৩১ জানুয়ারি শুরু হয় শুরায়ী নেজাম (মাওলানা জুবায়ের) অনুসারীদের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা। ৫ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের শেষ হয় তাদের বিশ্ব ইজতেমা।
এর আগে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে আখেরি মোনাজাতে শেষ হয় বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলিগ জামাতের মাওলানা জুবায়ের।
এর আগে বাদ ফজর বয়ান করেন ভারতের বেঙ্গালুরুর তাবলিগের শীর্ষ মুরুব্বি ভাই ফারুক। এর তরজমা করেন মুফতি আমানুল হক। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান হেদায়াতি বয়ান করে। পরে সঙ্গে সঙ্গে এর তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আব্দুল মতিন। হেদায়াতি বয়ানের পর নসিয়তমূলক বক্তব্য পেশ করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেউলা। এরপর বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা জুবায়ের। নসিয়তমূলক বক্তব্য শেষে শুরু হয় আখেরি মোনাজাত।
বিশ্ব ইজতেমার শেষ ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আখেরি মোনাজাত। মহান আল্লাহর সান্নিধ্য পেতে, সর্বশক্তিমানের কাছে গুনাহ মাফ চাইতে জানাতে মুসল্লিরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় আমিন আমিন ধ্বনিতে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। আখেরি মোনাজাতের সময় টঙ্গীর তুরাগ তীর পরিণত হয় মুসল্লিদের জোয়ারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ মুসল্লি উপস্থিত হয় টঙ্গীর তুরাগ তীরে এ ইমানি মজমায়। ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস, ধর্মের পূর্ণাঙ্গ অনুশীলন এবং আলো আঁধারে অবিরাম ইবাদতে মুখরিত হয় টঙ্গীর তুরাগ তীর।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫
আরএস/এএটি