ঢাকা, সোমবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০০ জিলকদ ১৪৪৬

ইসলাম

বিনয় মুমিনের সৌন্দর্য 

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:০২ এএম, মার্চ ২, ২০২৫
বিনয় মুমিনের সৌন্দর্য  সংগৃহীত ছবি

বিনয় মানুষের জীবনে শোভা-সৌন্দর্য বাড়ায়। বিনয়ী সবসময় ভালোবাসা, শ্রদ্ধা-সম্মান ও মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়।

বিনয়ের মাধ্যমে সহজে অন্যের সঙ্গে সৌহার্দ্য ও ভালোবাসার বন্ধন তৈরি করা যায়। পবিত্র কোরআনে বিনয়ীদের আল্লাহর বন্ধু বলা হয়েছে, ‘তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনগণ, যারা বিনত হয়ে নামাজ কায়েম করে ও জাকাত দেয়। ’ (সুরা মায়েদা, আয়াত: ৫৫)

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর জন্যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে মর্যাদাসিক্ত করেন। তখন সে নিজের চোখে তুচ্ছ হলেও মানুষের চোখে অনেক বড় বিবেচিত হয়।

’ (বায়হাকি, হাদিস নং: ৭৭৯০)
মুমিনের বিনয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রকাশ পায়। তার কথাবার্তা, ওঠা-বসা, হাঁটা-চলা ও অন্যান্য প্রতিটি কাজে-কর্মে। যারা আল্লাহর প্রকৃত প্রিয় বান্দা, তাদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘‘রাহমান’-এর বান্দা তো তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে। ’ (সুরা ফুরকান, আয়াত: ৬৩)

বিনয় ও নম্রতার আদেশ দিয়ে অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ভূপৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, পদভারে তুমি তো কখনোই ভূপৃষ্ঠ বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বতসম হতে পারবে না। (সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৭)

প্রিয় নবী (সা.)-এর ব্যবহার-আচরণ ছিল বিনয় ও নম্রতার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। কোমল আচরণে তিনি মানুষকে আপন করে নিতেন। তার মুগ্ধকরা ব্যবহারের কারণে কেউ বুঝতেই পারতো না যে, তিনিই আল্লাহর প্রিয় রাসুল (সা.)। সমাজের প্রত্যেক শ্রেণির মানুষের কাছে তিনি অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন এবং তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় বাস করতেন। যে কেউ যেকোনো মুহূর্তে তার সঙ্গে কথা বলতে পারতো।  

হাদিসে এসেছে, ‘তিনি ছিলেন সুবিশাল হৃদয়ের মহানুভব। সত্যবাদিতায় সর্বাগ্রে, নম্রতা আর কোমলতায় অনন্য, আচার-আচরণে অভিজাত। যে প্রথম তাকে দেখতো, ভয় করতো। কিন্তু যে-ই তার সঙ্গে মিশতো, তাকে ভালোবাসতে শুরু করতো। (তিরমিজি, হাদিস নং: ৩৬৩৮)

আল্লাহর রাসুলের বিনয় ও নম্রতার কথা কোরআনে উল্লেখ হয়েছে এভাবে, ‘আল্লাহর অনুগ্রহে আপনি তাদের প্রতি কোমল হৃদয় হয়েছিলেন। আপনি যদি রূঢ় ও কঠোর চিত্ত হতেন, তবে তারা আপনার কাছ থেকে সরে পড়তো। (সুরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৫৯)

অহংকার ত্যাগ করে বিনয় ও নম্রতাকে আপন করে নেওয়া সর্বাত্মক জরুরি। হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি আদম-সন্তানের সর্দার, তবে এতে গর্বের কিছু নেই। কেয়ামতের দিন আমার কবরের মাটিই প্রথম সরানো হবে, এটাও গর্বের কিছু নয়। সেদিন আমিই প্রথম সুপারিশ করবো, আমার সুপারিশই প্রথম গৃহীত হবে; এতেও অহংকার করার কিছু নেই। সেদিন ‘হামদে’র পতাকা আমার হাতে থাকবে, তাতেও কোনো বড়াই নেই। (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং: ৪৩০৮)

প্রতিটি আচরণে ও উচ্চারণে বিনয় মুমিনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ। আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হতে চাইলেও বিনয় আবশ্যক। যে বিনয়কে নিজের ভূষণ বানিয়ে নেবে, দুনিয়া ও আখেরাতে তার সম্মান বাড়বে। মানুষের ভালোবাসায় সে সিক্ত হবে, আল্লাহর নৈকট্য লাভেও ধন্য হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০২ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৫
এসআরএস

বাংলাদেশ সময়: ১১:০২ এএম, মার্চ ২, ২০২৫ /

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।