অন্যান্য ইবাদত থেকে রোজার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, রোজা পালনের সময়ের ব্যাপারটি। যেমন এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট, জাকাত আদায়ের জন্য প্রয়োজন কেবল কয়েকটি মুহূর্ত।
যেমন শেষ রাতে সাহরি খাওয়া, সারাদিন পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি চোগলখুরি, কাউকে গালগাল করা, অশ্লীল কথা বলা, কারও সঙ্গে ঝগড়া করা, সুদ-ঘুষ গ্রহণ, অন্যের ওপর জুলুম করা, নাচ-গান, বাদ্য, ব্যভিচার, একজন আরেকজনকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করা ইত্যাদি যাবতীয় খারাপ এবং অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকা, সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বৈধ উপায়ে অর্জিত হালাল খাদ্য দিয়ে ইফতার করা, একটু পরই আবার ইশার নামাজের সঙ্গে অতিরিক্ত ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়া, ঘুমানোর আগে রাতের কিছু অংশ কোরআন ও হাদিস অধ্যয়ন করা, শেষ রাতে উঠে সাহরির আগে কয়েক রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহপাকের কাছে নিজের গোনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করা।
এভাবে ক্রমাগতভাবে ৩০টি দিন গোটা মুসলিম উম্মাহ এক বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকে। এমনি একটি সামগ্রিক প্রশিক্ষণের ফলে গোটা বিশ্বময় সৃষ্টি হয় এক মনোরম জান্নাতি ও তাকওয়ার পরিবেশ। আর এ ধরনের একটি জান্নাতি পরিবেশের দ্বারা প্রভাবান্বিত হয়ে প্রতিটি মুসলমানের অন্তর ভরে যায় তাকওয়া আর পরহেজগারিতে, ফলে মিটে যায় নফস ও দেহের যাবতীয় অবৈধ অনাকাঙ্ক্ষিত চাহিদা। সৃষ্টি হয় আত্মসংযমের এক মহাশক্তি। ফলে একজন রোজাদার বিনয়াবনত হয় সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে, কেবল তারই সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নিজের আনুগত্যের মস্তক, তার যাবতীয় হুকুমের সামনে অবনত করে দেয়। আর এটিই হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজানের আসল তাত্পর্য। আল্লাহতায়ালা সবাইকে পবিত্র রমজানের পূর্ণ হক আদায়সহ সম্পূর্ণ রোজা পালনের তওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৮ ঘন্টা, জুলাই ০৩, ২০১৫
এমএ