১. শাবান মাসের শেষ দিনে রমজানের চাঁদ দেখা: আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর নির্দেশ- তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখবে, চাঁদ দেখে ঈদ করবে। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
২. দিনে রোজা রাখা: আল্লাহতায়ালা বলেন- তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি রমজান মাসে উপনীত হবে, সে যেন রোজা রাখে।
৩. রাতে তারাবির নামাজ পড়া: আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসে রাতে জেগে নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তার পেছনের গোনাহ মাফ করে দেবেন। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
৪. শেষ সময়ে সাহরি খাওয়া: হাদিসে এসেছে, মানুষ কল্যাণের মধ্যে থাকবে, বিলম্ব না করে ইফতার করবে এবং শেষ সময়ে সাহরি খাবে। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
৫. সময়ের কাজ সময়ে করা: বিলম্ব না করে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
৬. ইফতারের আগে ও দিনভর দোয়া করা: তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। ... রোজাদার ব্যক্তির- ইফতারের আগ পর্যন্ত। -সুনানে তিরমিজি, আহমদ ইবনে খুজাইমা ও ইবনে হিব্বান
৭. কথা ও কাজে মিথ্যাচার এবং মূর্খতা বর্জন করা: যে ব্যক্তি (রোজা রেখে) মিথ্যা কথা ও কাজ পরিত্যাগ করল না, তার উপবাস থাকায় আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। -আহমদ, আবু দাউদ ও তিরমিজি
৮. বিবাদ-বিতণ্ডা এড়িয়ে চলা: কেউ তাকে (রোজাদারকে) গালি দিলে বা ঝগড়া করলে সে যেন বলে- আমি রোজাদার। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
৯. রোজাদারকে সাধ্যমত ইফতার করানো: যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তাকে রোজাদারের সমপরিমাণ সওয়াব দেয়া হবে। তবে রোজাদারের সওয়াবে কোনো কর্তন করা হবে না। -সুনানে তিরমিজি
১০. কোরআন তেলাওয়াত, মর্মচর্চা ও শিক্ষা করা: রমজানের প্রতি রাতে হজরত জিবরাইল (আ.) আল্লাহর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাত করতেন এবং তাকে কোরআনের দরস দিতেন। -আহমদ ও সহিহ বোখারি
১১. অধিক হারে দান-সদকা করা: সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসূল ছিলেন সবার চেয়ে দানশীল। আর রমজানে তার দানশীলতা বেড়ে যেত, যখন তার কাছে হজরত জিবরাইল (আ.) আগমন করতেন। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
১২. মিসওয়াক করা: জনৈক সাহাবি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সা.) কে রোজা রেখে (এত বেশি পরিমাণ) মেসওয়াক করতে দেখেছি, যার সংখ্যা গুনে আমি শেষ করতে পারব না। -সহিহ বোখারি
১৩. সামর্থ্য থাকলে উমরা করা: আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, রমজান মাসে উমরা করা হজের সমতুল্য। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
মুসলিমের অপর এক বর্ণনায় এসেছে, আমার সঙ্গে হজের সমতুল্য।
১৪. শেষ দশ দিন ইবাদতের জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম করা: আল্লাহর রাসূল (রমজানের) শেষ দশ দিন (ইবাদতে) যে পরিমাণ পরিশ্রম করতেন অন্য কোনো সময় তা করতেন না। শেষ দশ দিন এলে তিনি কমর বেঁধে নিতেন, রাত জাগতেন এবং পরিবারের লোকদের জাগিয়ে দিতেন। -সহিহ মুসলিম
১৫. শেষ দশ দিন মসজিদে ইতিকাফ করা: আল্লাহর রাসূল (সা.) মৃত্যু পর্যন্ত রমজানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করতেন। -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
১৬. শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবেকদর প্রাপ্তির জন্য ইবাদত করা: তোমরা রমজানের শেষ দশ দিনের বেজোড় রাতগুলোতে শবেকদর অন্বেষণ করো। -সহিহ বোখারি
১৭. সদকাতুল ফিতর আদায় করা: আল্লাহর রাসূল (সা.) জাকাতুল ফিতর বা সদকাতুল ফিতর ধার্য করেছেন রোজাদারের অনর্থকতা ও পাপাচার থেকে পবিত্র করার জন্য এবং মিসকিন ব্যক্তিদের খাদ্য হিসেবে। যে ব্যক্তি তা ঈদের নামাজের আগে আদায় করবে তা গ্রহণযোগ্য এবং যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের পরে আদায় করবে তা সাধারণ সদকা বলে গণ্য হবে। -সুনানে আবু দাউদ ও ইবনে মাজা
১৮. ক্ষমা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া করা: হাদিসে এসেছে, (এই মাসে) অনেক লোককে আল্লাহতায়ালা জাহান্নাম থেকে মুক্ত করেন। আর তা প্রতি রাতে। (সহিহ ইবনে খুযাইমা, আহমদ ও ইবনে মাজা) অন্য হাদিসে এসেছে- আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান পেল অথচ তার গোনাহ মাফ হয়নি, অতঃপর জাহান্নামে প্রবেশ করল...। -ইবনে হিব্বান ইবনে, খুজাইমা, বায়হাকি ও সহিহুত তারগিব ওয়াত তারহিব
১৯. সাধারণ নেক আমল অধিকহারে সুন্দরভাবে সম্পাদন করা: রমজানের প্রথম রাতে একজন ঘোষক ঘোষণা দেয়, হে সত্কর্মেচ্ছু, অগ্রসর হও, হে মন্দ কর্মেচ্ছু, বিরত থাক। -সুনাননে তিরমিজি ও ইবনে মাজা
২০. পাপাচার পরিত্যাগ বা তাকওয়ার অনুশীলন করা: এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার। -সূরা আল বাকারা: ১৮৩
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘন্টা, জুলাই ০৭, ২০১৫
এমএ/