ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

দরূদ পাঠে ঈমান বাড়ে

মাওলানা শওকত হোসাইন, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
দরূদ পাঠে ঈমান বাড়ে

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি দরূদ পাঠ মানুষের ঈমানি শক্তিকে বৃদ্ধি করে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমের সূরা তীনের ৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘আমি মানুষকে সুন্দর আকৃতি দিয়ে সৃষ্টি করেছি।

’ আঠারো হাজার সৃষ্টিজীবের মাঝে পবিত্র কোরআনে কারিমের ঘোষণা মতে মানুষ সবচেয়ে বেশি সুন্দর। আর সমস্ত মানুষের মাঝে সবচেয়ে সুন্দর শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৈহিক গঠন, জীবন ও চরিত্র। তিনি নবী ও রাসূলদের সর্বশ্রেষ্ঠ। ১০৪ খানা আসমানি কিতাবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে কারিম হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর নাজিল হয়েছে। উম্মত হিসেবে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।

হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে সম্মান প্রদর্শনের জন্য আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে আমাদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন। সূরা ফাতাহর ৮ ও ৯ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘আমি তোমাকে (নবী) প্রেরণ করেছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। যাতে তোমরা আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান আন এবং তোমরা রাসূলকে শক্তি যোগাও তাকে সম্মান করো। ’

সূরা আহজাবের ৫৬ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘আল্লাহর নবীর প্রতি অনুগ্রহ করেন এবং তার ফেরেশতারাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করে। হে মুমিনগণ! তোমরাও নবীর জন্য অনুগ্রহ প্রার্থনা করো ও তাকে যথাযথভাবে সালাম জানাও। ’

খাবার, পানি, বাতাস, মাটি, বৃষ্টি, আগুন, পাহাড় ও সমুদ্রকে আল্লাহতায়ালা আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ দিয়েছেন। সূর্যের আলোকে আমাদের অধীন করে দিয়েছেন দিনের বেলায় খাবার সংগ্রহের জন্য, রাতকে বিশ্রামের জন্য দিয়েছেন, সমুদ্র থেকে মৎস্য আহরণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এভাবে আরো অনেক নেয়ামত আল্লাহতায়ালা আমাদের দান করেছেন। পবিত্র কোরআনে কারিমের ঘোষণা মোতাবেক হজরত মুহাম্মদ (সা.) আমাদের জন্য রহমতস্বরূপ। সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘আমি তো তোমাকে বিশ্বজগতের প্রতি কেবল রহমতরূপেই প্রেরণ করেছি। ’ হজরত মুহাম্মদ (সা.) সব সৃষ্টির জন্য রাহমাতুল্লিল আলামিন হিসেবে আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন।

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ওপর অবতীর্ণ মহাগ্রন্থ কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা মাছ, গাছ, নদ-নদী, পাহাড়, সমুদ্র, ফল-ফলাদি, বিয়ে-শাদি, গর্ভধারণ ও সন্তান লালন-পালন থেকে শুরু করে এমন কোনো বিষয় নেই যার বর্ণনা কোরআনে নেই। সূরা কামারের ১৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি তোমাদের মধ্যে উপদেশ নেয়ার মতো কেউ কি আছে?’ সূরা আন নিসার ৮০ নম্বর আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, যে হজরত রাসূল (সা.)-এর আনুগত্য করল সে আল্লাহর আনুগত্য করল।

হাদিসে তাগাদা দেয়া হয়েছে, যে ব্যক্তি জান্নাতে এবং হাশরের মাঠে হজরত রাসূল (সা.) সঙ্গে থাকতে ইচ্ছা পোষণ করে সে যেন বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করে। সুনানে তিরমিজির ৩৯৫৭ নং হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আগুন সেই মুসলিমকে স্পর্শ করবে না যে আমাকে দেখেছে। ’ অন্য হাদিসে এসেছে, যে বেশি বেশি দুরূদ পাঠ করবে হজরত রাসূলে কারিম (সা.)-এর সুপারিশ তার জন্য ওয়াজিব হয়ে যাবে। স্বপ্নযোগে হজরত রাসূল (সা.)-এর দিদার (সাক্ষাৎ) নসিব হবে। আর যে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম উচ্চারণের সঙ্গে সঙ্গে দরূদ পাঠ করে না সে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রতি বখিলতা বা কৃপণতা প্রদর্শন করল। মেশকাত ও বায়হাকি শরিফে উল্লেখ করা হয়েছে, রাসূলে আকরাম (সা.) ইরশাদ করেন, যে বক্তি আমার কবরের নিকট দাঁড়িয়ে আমার ওপর দরূদ পাঠ করে আমি তা শুনে থাকি, আর যে ব্যক্তি দূর হতে আমার ওপর দরূদ পাঠ করে তা আমার নিকট পৌঁছানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘন্টা, জুলাই ২৬, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।