আসন্ন হজ ও ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে সৌদি সরকার ৩০ লাখ কোরবানির পশু আমদানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমদানিকৃত এসব পশুর মাঝে রয়েছে গরু, ভেড়া ও উট।
সৌদি স্থানীয় বাজারে বৃহত্তম পশু আমদানিকারকদের অন্যম ফাহাদ আল সালমি এ বিষয়ে বলেন, আসন্ন হজ ও ঈদুল আজহায় ৩০ লাখেরও বেশি ভেড়া ও উট আমদানি করা হবে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ভেড়া আমদানি করা হচ্ছে হজযাত্রীদের পশু কোরবানির চাহিদাকে সামনে রেখে।
ফাহাদ সালমি আরও বলেন, ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) আমদানি করছে প্রায় ১০ লাখ পশু। আর স্থানীয় আমদানিকারকরা আমদানি করছেন আরো ২০ লাখ পশু। এতে হজের সময় পশুর চাহিদা পুরণ হবে এবং বাজারে পশুর দাম স্থিতিশীল থাকবে।
উল্লেখ্য, হজযাত্রীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আইডিবিতে কোরবানির টাকা জমা করলে ব্যাংক নির্ধারিত সময়ে হাজীদের পক্ষে তার পরিশোধিত মূল্যের বিপরীতে পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। কোরবানিটি কোন সময়ে তার পক্ষ থেকে সম্পন্ন হবে সেই সময়টিও আগাম জানিয়ে দেয় ব্যাংক। ফলে ওই হাজী সাহেব নিশ্চিন্তে ইহরাম ছেড়ে হালাল হতে পারেন।
আল সালমি আরো জানান, সুদান ও সোমালিয়াসসহ পশু রপ্তানীকারি দেশগুলো ইতোমধ্যেই হজের সময় পশুর চাহিদা পুরণে পযাপ্ত পশু সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েছে এবং এতে কোনো প্রকার সমস্যা বা ঘাটতি না পড়বে না বলেও জানিয়েছে তারা। হজের সময় বেশিরভাগ হাজী ছাগল বা ভেড়া কোরবানি দেয়ার জন্য বেছে নেয়। যার প্রতিটির দাম পড়ে প্রায় ৫০০ সৌদি রিয়াল।
ফাহাদ আল সালমি বলেন, আলহারি, আল নাজদি ও আল রাফেদির মতো স্থানীয় পশু খামারগুলো বাজারের চাহিদা অনুয়ায়ী পশু সরবরাহের প্রস্তৃতি নিয়েছে। ফলে বাজারে পশুর দাম বৃদ্ধি পাবে না। তিনি আরো জানান, দেশীয় ভেড়া দামের ক্ষেত্রে আকার ভেদে প্রতিটি ১০০০ থেকে ১৭০০ রিয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
অন্য এক আমদানিকারন বলেন, হজের মৌসুমে পশুর চাহিদা বিশেষকরে আমদানিকৃত পশুর চাহিদা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। আইডিবির পশু কোরবানি প্রোগ্রামের মাধ্যমে সৌদি সরকার হজের সম পশুর চাহিদার যোগান দেয়। এর ফলে পশুর দাম ও সরবরাহের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকে।
মোহাম্মদ আল মাতেরি নামের স্থানীয় বাজার পর্যবেক্ষক জানান, তিনি আশা করছেন হজের সময় পশু সরবাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল থাকবে। তিনি বলেন, আমরা প্রতিবছর এই সময় পশুর দাম বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্য করি। এবার আমরা আশা করবো, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রনালয় বিষয়টি মনিটর করবে এবং নাটকীয়ভাবে পশুর দাম বৃদ্ধি করা থেকে ব্যবসায়ীদের বিরত রাখবে।
উল্লেখ্য যে, হজের অংশ হিসেবে জামারায় (শয়তানকে পাথর মারার স্থান) পাথর মেরে হাজিদের পশু কোরবানির প্রস্তুতি নিতে হয়। ১০ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পশু কোরবানি দেওয়া যায়। হজে কোরবানির পশুর মধ্যে ছাগল, দুম্বা, উট উল্লেখযোগ্য।
হাজিদের একটি অংশ নিজে মুস্তাহালাকায় (পশুর হাট ও জবাই করার স্থান) গিয়ে কোরবানি দেন। একটি অংশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকে (আইডিবি) নির্দিষ্ট পরিমাণ রিয়াল জমা দিয়ে তাদের মাধ্যমে কোরবানি দেন। মক্কায় সাধারণত ৭ জিলহজের পর থেকে পশু কেনা শুরু হয়। আইডিবির তত্ত্বাবধানে সবচেয়ে বেশি কোরবানি হয় মক্কায়।
আইডিবির মাধ্যমে কৃত কোরবানির পশুর গোশত হিমাগারে সংরক্ষণ করে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের গরিব লোকজনের জন্য পাঠানো হয়। প্রতিবছর বাংলাদেশেও এ গোশত আসে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘন্টা, আগস্ট ০১, ২০১৫
এমএ