পবিত্র কোরআনে কারিমে এমন কিছু আয়াত রয়েছে, যেগুলোর তেলাওয়াত করলে বা শুনলে মুমিন পাঠক ও শ্রোতাকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে একটি সিজদা করতে হয়। এই সিজদাকে সিজদায়ে তেলাওয়াত বলা হয়।
এই সিজদা ফরজ নয়, ওয়াজিব। এ সিজদা না কলে গোনাহ হবে। তেলাওয়াতে সিজদার পদ্ধতি হলো, হাত না উঠিয়ে দাঁড়ানো থেকে আল্লাহু আকবার বলে সোজা সিজদায় চলে যেতে হবে এবং সুবহানা রাব্বিয়াল আলা তিনবার পড়ে আল্লাহু আকবার বলে দাঁড়াতে হবে। সিজদা মাত্র একটি হবে। এতে তাশাহ্হুদ নেই, সালামও নেই। এ সেজদার জন্য হাত উঠাতে বা হাত বাঁধতে হবে না এবং দুটি সেজদাও করতে হবে না। যদি না দাঁড়িয়ে বসে বসে সেজদা করে অথবা সেজদা করে বসে থাকে তাও জায়েজ আছে। পুরুষদের জন্য আল্লাহু আকবর জোরে বলা উত্তম।
সে ইচ্ছাপূর্বক শুনে থাকুক কিংবা অন্য কাজে নিয়োজিত থাকাবস্থায় শুনে থাকুক অথবা অজুহীন অবস্থায় শুনে থাকুক, সেজদার আয়াত যে শুনবে, তার ওপরই সেজদা করা ওয়াজিব। এ জন্য সিজদার আয়াত তেলাওয়াতকালে চুপে চুপে তেলাওয়াত করা ভালো, যাতে অপর কোনো ব্যক্তিকে অসুবিধায় পড়তে না হয়।
নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যেসব শর্ত আছে, যেমন অজু থাকা, জায়গা পাক, শরীর পাক, কাপড় পাক এবং কেবলামুখি হওয়া। তেলাওয়াতের সিজদার জন্যও এসব শর্ত প্রযোজ্য।
নামাযের সিজদা যেভাবে আদায় করতে হয়, তেলাওয়াতের সিজদাও সেভাবে আদায় করতে হবে। কেউ কেউ কোরআনে কারিমের ওপর সিজদা করে, এতে সিজদা আদায় হবে না। বুঝমান নাবালেগ শিশু থেকে সিজদার আয়াত শুনলেও শ্রোতার ওপর সিজদায়ে তেলাওয়াত ওয়াজিব হয়।
নামাজরত ব্যক্তি যদি বাইরের লোকের কাছে অথবা বাইরের লোক নামাজরত ব্যক্তির কাছে আয়াতে সিজদা শোনে তাহলেও তাদের ওপর সিজদা ওয়াজিব হবে। তবে নামাজরত ব্যক্তি নামাজ শেষ করে আলাদাভাবে সিজদা আদায় করবে।
হানাফি মাজহাব মতে পবিত্র কোরআনে কারিমের সিজদার আয়াতসমূহ হলো-
১. সূরা আরাফ, আয়াত ২০৬।
২. সূরা আর রাদ, আয়াত ১৫।
৩. সূরা আন নাহল, আয়াত ৪৯।
৪. সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত ১০৯।
৫. সূরা মারইয়াম, আয়াত ৫৮।
৬. সূরা হজ, আয়াত ১৮।
৭. সূরা আর ফোরকান, আয়াত ৬০।
৮. সূরা আন নামল, আয়াত ২৬।
৯. সূরা আস সিজদাহ, আয়াত ১৫।
১০. সূরা সাদ, আয়াত ২৫।
১১. সূরা হা-মীম সিজদা, আয়াত ৩৮।
১২. সূরা আন নাজম, আয়াত ৬২।
১৩. সূরা আল ইনশিকাক, আয়াত ২১।
১৪. সূরা আল আলাক, আয়াত ১৯।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘন্টা, আগস্ট ০৪, ২০১৫
এমএ/