ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সকাল-সন্ধ্যায় জিকিরের গুরুত্ব

মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
সকাল-সন্ধ্যায় জিকিরের গুরুত্ব

দেহ ও আত্মার সমন্বিত রূপের নাম মানুষ। ইসলাম স্বভাব অনুকূল জীবন ব্যবস্থা।

অস্বাভাবিক বা প্রকৃতি বিরুদ্ধ কোনো কিছুর অস্তিত্ব ইসলামে নেই। দেহ ও আত্মা উভয়টিকে ইসলাম স্বীকার করে ও সম্মান করে।

উভয়ের প্রয়োজনকে ইসলাম স্বীকৃতি দেয়। উভয়ের প্রয়োজন পূরণের সর্বোত্তম বিধি-বিধান ও দিক-নির্দেশনা ইসলামে রয়েছে। আত্মার প্রয়োজন ও চাহিদাকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করে শুধু দেহের চাহিদা পূরণের দিকে সকল চেষ্টা ও মনোযোগ নিবদ্ধ রাখাকে ইসলাম ঘৃণা করে। আবার দেহকে অবমাননা করে, অবজ্ঞা করে; দেহের সকল প্রয়োজন ও চাহিদাকে অস্বীকার করে শুধুমাত্র আত্মার চাহিদা পূরণের প্রতি যতœশীল হওয়াকেও ইসলাম ঘৃণা করে। ইসলামের ভিতর রয়েছে দেহ ও আত্মার প্রয়োজন পূরণের অপূর্ব সমন্বিত জীবন ব্যবস্থা।

পানাহার, নিদ্রা, গোসল দেহকে সতেজ করে। ক্লান্তি দূর করে দেহে স্বস্তি আনে। আত্মার ক্ষুধা, পিপাসা ও ক্লান্তি দূর হয় আল্লাহর জিকির দ্বারা। আল্লাহর জিকির দ্বারা মানবাত্মা স্বস্তি ও শান্তি লাভ করে, পূর্ণ সতেজ হয়ে উঠে । এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘জেনে রাখ, আল্লাহর জিকির দ্বারা মানুষের কলব শান্ত হয়। -সূরা রাদ : ২৮

আমাদের দেহের জন্য যেমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারিত সময় আছে। যখন দেহের প্রয়োজন প্রবল হয়ে উঠে। সে সময়ের হেরফের দেহের জন্য কষ্টকর ও ক্ষতিকর হয়। তেমনি আমাদের আত্মার জন্যও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারিত সময় আছে। যখন আত্মার প্রয়োজন প্রবল হয়ে উঠে। সকাল, দুপুর ও রাতে তিনবেলা খাবার গ্রহণ করা, রাতে ঘুমানো, পূর্বাহ্নে গোসল করা ইত্যাদি সময়ের কাজগুলো দেহের সুস্থ্যতার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রাখে। আত্মার প্রয়োজন ও চাহিদা প্রবল হয়ে উঠে সকাল, সন্ধ্যা ও শেষ রাতে। তাই এ‌ই সময়গুলোতে জিকিরের প্রতি আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে কারিমেও সকাল-সন্ধ্যায় জিকির করার প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ আল্লাহর জিকির অনেক বেশি করে করো। সকাল-সন্ধ্যা জিকির করো। ’ -সূরা আহযাব : ৪১-৪২

পবিত্র কোরআনের অন্যত্র আরও ইরশাদ হয়েছে,  তুমি বিনীতভাবে ভীতপ্রদ অবস্থায় অনুচ্চস্বরে সকাল-সন্ধ্যা মন দিয়ে তোমার প্রভুর জিকির করো। যারা জিকিরের ব্যাপারে অলস তুমি তাদের দলভূক্ত হবে না। -সূরা আরাফ : ২০৫

কোরআনে আরও ইরশাদ হচ্ছে, ‘অতএব, তোমরা সকাল ও সন্ধ্যায় আল্লাহর নামের তাসবিহ পাঠ করো। ’ -সূরা আর রূম : ১৭
 
জিকিরের আলোচনায় কোরআন ও হাদিসে উল্লেখিত সকালের ব্যাখ্যায় ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেছেন, সকাল বলতে বুঝায় ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। আর সন্ধ্যা বলতে বুঝায় আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

অনেকে আবার এ কিষয়ে ভিন্নমতও পোষণ করেছেন। তাদের অভিমত হলো, সন্ধ্যা বলতে বুঝায় মাগরিবের নামাজের পর থেকে রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত।

আমরা জানি, দেহ সুস্থ-সবল ও কর্মক্ষম রাখার জন্য সমান্য খাবার যথেষ্ট নয়।   আবার একই ধরণের খাবারও যথেষ্ট নয়। বরং পরিমাণ মতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হয়। আত্মাকে সুস্থ-সবল রাখার জন্যও যৎসামান্য জিকির যথেষ্ট নয়। আত্মার চাহিদা, প্রয়োজন পূরণ ও আত্মাকে সবল রাখার জন্য পরিমাণ মতো জিকির করতে হবে এবং এমন জিকির করতে হবে যা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য।



বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।