ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

হজ পালন সহজ করতে স্থল ও জলপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হোক

মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৬
হজ পালন সহজ করতে স্থল ও জলপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হোক ছবি: ফাইল ফটো

হজ মুসলমানদের অবশ্য পালনীয় ইবাদত। তবে হজ সবার জন্য অবশ্য পালনীয় নয়; শুধু সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য।

বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চল ও দেশ থেকে প্রতি বছর লাখ লাখ সামর্থ্যবান মুসলমান হজ পালনের জন্য মক্কা মোকাররমায় সমবেত হন। বাংলাদেশ থেকেও প্রতি বছর লক্ষাধিক মুসলমান হজ পালন করে থাকেন।
 
হজ পালনের জন্য বাংলাদেশি মুসলমানদের একমাত্র বাহন হচ্ছে আকাশপথের উড়োজাহাজ। একটা সময় ছিল এ ভূখণ্ডের মুসলমানরা স্থল পথে এবং সমুদ্র পথে হজে যেতে পারতেন। স্থল ও সমুদ্রপথে হজে যাওয়ার খরচ ছিল অনেক সাশ্রয়ী। স্থল ও সমুদ্র পথে খরচ কম হওয়ায় তখন অনেক সাধারণ মুসলমান হজে যেতে পারতেন।
 
সত্তরের দশকে সমুদ্রপথে হজে যাওয়ার সহজ সুযোগটি বন্ধ  হয়ে যায়। আর পঞ্চাশের দশকে বন্ধ হয়ে যায় স্থলপথে হজে যাওয়ার সুযোগ। বর্তমান সরকারের আগেরবার (২০০৯-২০১৪) চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সমুদ্রপথে হজে যাওয়ার সুযোগটি চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে সেই সাশ্রয়ী খরচের সহজ পথটি শেষ পর্যন্ত আর চালু হয়নি। আলোচনাও বেশিদূর এগোয়নি। তাই বাংলাদেশিদের হজে যাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে আকাশপথের উড়োজাহাজ। আকাশপথের খরচ অনেক বেশি হওয়ায় দরিদ্র এ দেশটির অনেক মুসলমানের পক্ষে হজে যাওয়ার সামর্থ্য হয় না।
 
ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে স্থল, জল ও আকাশ এ তিনপথেই বাংলাদেশের মুসলমানদের হজে যাওয়া সম্ভব। স্থল ও জলপথে হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির জন্য সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। স্থলপথে ট্রেনে করে ভারত, পাকিস্তান ও ইরান হয়ে সৌদি আরবের মক্কায় পৌঁছা সম্ভব।
 
আর জলপথে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে আরব সাগর হয়ে জেদ্দা সমুদ্র বন্দর দিয়ে মক্কা মোকাররমায় পৌঁছা সহজতর। তবে এজন্য সর্বাগ্রে দরকার বাংলাদেশ সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত ও কূটনৈতিক উদ্যোগ।
 
স্থল ও জলপথে হজ গমনে শারীরিক সক্ষমতার বিষয়টি জড়িত কিন্তু এ দু’পথে আর্থিক খরচ অবশ্যই কম হবে। আকাশ পথে আর্থিক খরচ বেশি হওয়ায় বাংলাদেশের অনেক মুসলমানের পক্ষে যাতায়াত খরচ মিটিয়ে হজে যাওয়া সম্ভব হয় না। আকাশপথে উড়োজাহাজের ভাড়াসহ সার্বিক ব্যয়ভার বাংলাদেশের মতো একটি দেশের সাধারণ মুসলমানের জন্য বেশি হওয়ায় তাদের পক্ষে হজ পালন করা সম্ভব হয় না।
 
সরকার যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কূটনৈতিক উদ্যোগের পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় এবং জল, স্থল ও আকাশ- এ তিন পথে হজে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে তাহলে বাংলাদেশের অনেক সাধারণ মুসলমানের পক্ষে হজ পালন করা সম্ভব হবে। স্থল ও জলপথে হজ পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করলে সরকারের পক্ষে জনসমর্থনও মিলবে।
 
আমরা আশা করি, বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানের হজ সম্পাদনের বিষয়টি সহজসাধ্য করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কূটনৈতিক ও নীতিগত সহায়তা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। কারণ, হজ পালনের বিষয়টির সঙ্গে মুসলমানের ঈমান ও আবেগের একটি সম্পর্ক রয়েছে। সরকার এ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে এ প্রত্যাশা সবার।
 
আলোচ্য বিষয়টি নিয়ে আমরা পাঠকদের কাছ থেকে মতামত প্রত্যাশা করছি। বর্ণিত বিষয়ে বিদগ্ধ পাঠকের কোনো মতামত, পরামর্শ ও অালোচনা থাকলে তা আমাদের মেইল করুন। আমরা গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করবো। লেখা পাঠাতে মেইল করুন- [email protected]
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।