খারাপ মানুষ কারও গায়ে লেখা থাকে না। যা দেখে খারাপ মানুষকে চেনা যাবে।
মাত্রাতিরিক্ত আত্মকেন্দ্রীক: যে কোনো মানুষের সঙ্গে মেলামেলা যেমন ভালো না; তেমনি অতি আত্মকেন্দ্রীক হওয়া উচিত না। এটা ভালো মানুষের লক্ষণ নয়। একজন মানুষ এতই আত্মকেন্দ্রীক যে পাশের রুমে একজন মানুষ হাত কেটে চিৎকার করছে; আর সে ওই মানুষটিকে দেখতেও গেলো না। এত আত্মকেন্দ্রীক হওয়া ভালো না। মনে রাখবেন, পাশের রুমে থাকার কারণে আপনার প্রতি তার কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। আপনি যদি তার বিপদে এগিয়ে না আসেন- তা হলে তার হককে না হক করলেন। যার কারণে কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট জওয়াবদিহি করতে হবে।
অহংকার দেখানো: কথায় আছে অহংকার পতনের মূল। অহংকার সব সৎগুণ বিনষ্টকারী মন্দ স্বভাব। যে মানুষের অন্তরে অহংকার বাসা বাঁধে সে জীবনে উন্নতি করতে পারে না। অহংকার হলো- মহান আল্লাহতায়ালার গুণ। যে ব্যক্তি তার এ গুণ নিয়ে টানাটানি করে, আল্লাহ তাকে অপমান অপদস্ত করেন।
মিথ্যাকথা বলা: আরবিতে একটি প্রবাদ আছে, সত্য মুক্তি দেয়; মিথ্যা ধ্বংস করে। যে ব্যক্তি মিথ্যার ওপর অটল তার ভিত্তি এমন নড়বড়ে যে, তা যে কোনো সময় তার ওপর ভেঙ্গে পড়তে পারে। যে ব্যক্তি সত্যের ওপর অটল থাকবে; আল্লাহ তার মুক্তির পথ বের করে দেবেন। সত্যবাদীর সঙ্গে আল্লাহ থাকেন। আর মিথ্যাবাদীর সঙ্গে শয়তানও শেষ পর্যন্ত থাকে না। কারণ, শয়তান প্ররোচনা দিয়ে বিপদের সময় কেটে পড়ে। এটাই শয়তানের স্বভাব।
নেশাদার দ্রব্য পান করা: নেশাদার দ্রব্যপানকারী জান্নাতে যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত তওবা না করে তার এ পাপ ক্ষমা হবে না। এ ছাড়া নেশাদার দ্রব্য পান সেবন শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতি। জেনে বুঝে নিজের শরীরের ক্ষতি করাও পাপের কাজ।
ব্যভিচার করা: ব্যভিচার সমাজকে কুলষিত করে। ব্যভিচারের কারণে দুনিয়ায় আল্লাহর গজব নেমে আসে। ব্যভিচার হারাম ও জঘন্য অপরাধমূলক কাজ।
বেশি কথা বলা: বেশি কথায় বেশি বিপদ। কম কথায় কাজ আদায় হলে বেশি কথা বলার কোনো প্রয়োজন নেই। অনেক লোক শুধু শুধু কথা বলে থাকেন। যা খারাপ স্বভাব বৈ কিছু নয়। কারণ, প্রত্যেকটি কথার একদিন জবাব দিতে হবে।
আয় বুঝে ব্যয় না করা: সর্বাবস্থায় মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে যে ব্যক্তি, সে কখনও অভাবের মুখোমুখি হয় না। জীবনাচারের ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন- এটা ইসলামেরও শিক্ষা বিশেষ।
পরনিন্দা করা: পরনিন্দা একটি খারাপ স্বভাব। এটা খারাপ মানুষের লক্ষণ। কোনো মার্জিত ভদ্র মানুষ অপর মানুষের নিন্দা করতে পারে না। অপরের দোষ নিয়ে ঘাটাঘাটি না করে সংশোধনের উদ্দেশ্যে ব্যক্তির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা ভালো মানুষের লক্ষণ।
খারাপ চিন্তা করা: খারাপ মানুষ সব সময় খারাপ চিন্তা করে থাকে। কথায় বলে, খারাপ মানুষ খারাপ মানুষকেই বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে। কোনো ভালো মানুষ তার বন্ধু হয় না। ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’। খুবই পরিচিত বহুল শ্রুত একটি প্রবাদ। প্রবাদটি খুব সহজ এবং ছোট বাক্য হলেও এর বেশ গুরুত্ব প্রদান করেছে ইসলাম। সৎ বন্ধু, মুমিন ও ভালো সঙ্গী নির্বাচন করার ব্যাপারে সাহাবায়ে আজমাইনদের ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করতেন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)। আমাদেরও উচিৎ নবীর আদর্শমতে জীবন পরিচালনা করা।
গোয়েন্দাগিরি করা: কিছু মানুষের স্বভাবই এমন যে, অপর মানুষকে নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করেই তাদের সময় কাটে। মনে রাখবেন, যারা গোয়েন্দাগিরি করে কারও দোষ বের করার চেষ্টা করবে- আল্লাহতায়ালা তাদের দোষ প্রকাশ করে দেবেন। তাদেরকে অপমান অপদস্ত করবেন। যদিও সে আকাশে অবস্থান। পৃথিবীর যে স্থানেই সে থাকুক না কেন এমন স্বভাবের মানুষকে আল্লাহ তার রহমতের দৃষ্টি দিয়ে দেখবেন না।
আল্লাহতায়ালা সবাইকে এমন মন্দ স্বভাব থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৬
এমএ/