ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

এক মসজিদের দেশ লাটভিয়া

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
এক মসজিদের দেশ লাটভিয়া ছবি: সংগৃহীত

সাধারণত বাল্টিক সাগরে প্রবেশ রয়েছে যে দেশগুলোর, সেগুলোকে বাল্টিক প্রজাতন্ত্র বলা হয়। দেশগুলো হচ্ছে- ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, পোল্যান্ড, রাশিয়া ও সুইডেন।

তবে ফিনল্যান্ড থেকে পোল্যান্ডের মাঝের তিনটি দেশ এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্টিক প্রজাতন্ত্র বলে স্বীকৃত। এর কেন্দ্রভাগের দেশটির নাম লাটভিয়া।
 
১৯৯১ সালে সমাজতান্ত্রিক রাশিয়ার পতনের পর দেশটি চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা পায়। তবে দেশটির সামাজিক জীবনে রুশরা ব্যাপক প্রভাব রেখে যায়। জনসাধারণের এক-চতুর্থাংশ রুশ ভাষায় কথা বলে।

দেশের জনসংখ্যা ২৩ লাখ। রাজধানীর নাম রিগা। আয়তন ৬৪ হাজার ৫ শত ৮৯ বর্গকিলোমিটার। ছোট দেশটিতে ২০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল রয়েছে। দেশটি ২৬টি জেলায় বিভক্ত। রয়েছে সাতটি শহর। পোশাক-পরিচ্ছদের ক্ষেত্রে লাটভিয়ানরা সাধারণত রঙিন জমকালো পোশাক পরিধান করেন।

লাটভিয়ায় মাত্র হাজারখানেক মুসলমানের বাস। আঠারো শতকের শেষ দিকে লাটভিয়ায় মুসলমানদের যাতায়াত শুরু হয়। লাটভিয়ার মুসলমানদের বেশিরভাগই তাতার ও তুর্কি বংশোদ্ভুত।

লাটভিয়ায় মুসলমানদের ইবাদত-বন্দেগির জন্য রাজধানী রিগায় একটি মাত্র মসজিদ রয়েছে। মদিনা মসজিদ নামের এই কমপ্লেক্সকে ঘিরেই হাজারখানেক মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়াদি সম্পন্ন হয়। তবে মসজিদটিকে দূর থেকে চেনার কোনো সুযোগ নেই। চিনতে হবে এর সাইনবোর্ড দেখে।

রিগায় হালাল খাবারের দোকানও বলতে গেলে হাতেগোনা। পুরো লাটভিয়ায় মাত্র তিনজন নারী হিজাব পরিধান করেন। ইউরোপের এই ছোট্ট দেশে মাত্র তিনজন নারী বোরকা পরিধান করলেও দেশটিতে বোরকা নিষিদ্ধ করা হচ্ছে অচিরেই। দেশটির আইনমন্ত্রীর বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ তথ্য জানিয়েছে।

লাটভিয়ার সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশের সংস্কৃতি রক্ষা ও সন্ত্রাসীরা যাতে বোরকার আড়ালে অস্ত্র চোরাচালান করতে না পারে সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

লাটাভিয়ার বিচারমন্ত্রী জিনতারস রাসনাকস জানিয়েছেন, ২০১৭ সালের মধ্যে আইনটি কার্যকর হতে যাচ্ছে। এতে যারা ঐতিহ্যগতভাবে বোরকা পরিধান করছেন তাদের ক্ষেত্রে কিছুই করার নেই। কারণ সম্ভাব্য অভিবাসীদের এ দেশের সংস্কৃতির মূল্যবোধের প্রতি সম্মান জানানো উচিৎ।

তিনি বলেন, প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবেই এ আইনি উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমরা কেবল লাটভিয়ার মানুষদের সংস্কৃতি-ঐতিহাসিক মূল্যবোধই রক্ষা করি না বরং ইউরোপের মূল্যবোধও রক্ষা করি।

এমন উদ্যোগে বেশ বিপাকে আছেন রাজধানী রিগায় বসবাসকারী নওমুসলিম ফাতেমা। ২৭ বছর বয়সী এই তরুণী তিনজনের একজন। তিনি প্রতিদিন নেকাব পড়ে বাইরে বের হন। বোরকা নিষিদ্ধের উদ্যোগ প্রসঙ্গে নিউইয়র্ক টাইমসকে ফাতেমা বলেন, এটা অপ্রয়োজনীয় কাজ। দেখুন, ঐতিহ্যগতভাবেই কিন্তু লাটভিয়ান নারীরা লম্বা পোশাক পরিধান করেন। পার্থক্য শুধু আমি নেকাব পড়ছি। এটা আমাকে স্বস্তি দেয়।

তিনি আরও বলেন, মানুষ আগের চেয়ে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে গেছে। রাস্তায় বের হলে অনেক অপমান সহ্য করতে হয়। মাঝে মধ্যে কেউ কেউ তো এমনটাও বলেন, যা যেখান থেকে এসেছিস সেখানে ফিরে যা।

উল্লেখ্য, শুধু লাটভিয়া নয়, ২০১১ সাল থেকে ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৬
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।