বেশ কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন ছাপা পত্রিকায় পবিত্র কোরআনে কারিমের আয়াত হুবহু আরবিতে ও বাংলা অক্ষরে ছাপা হচ্ছে। এমনকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মঞ্চের পেছনে কালেমা ও বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আল্লাহতায়ালার গুণবাচক বিভিন্ন নাম কিংবা পবিত্র কোরআনের আয়াত লেখা সম্বলিত ব্যানার লাগানো হচ্ছে।
বিভিন্ন প্রচারপত্র, হ্যান্ডবিল, বিয়ের কার্ড, পোস্টার, পাঠ্যবই ও ইসলাম ধর্ম শিক্ষা বইয়েও পবিত্র কোরআনের আয়াত লিপিবদ্ধ হচ্ছে ও আছে। প্রয়োজন ফুরালে কিংবা বছর শেষে এসব বিক্রি করে দেওয়া হয় দোকানদারদের কাছে। ওরা ওই কিতাব বা পাঠ্যবই ছিঁড়ে মালপত্র বাঁধার কাজে ব্যবহার করে, ঠোঙা বানায়। ব্যবহার শেষে কাগজখানা যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়। এমনকি পবিত্র কোরআনের আয়াত লিখিত প্রচুর কাগজ রাস্তা-ঘাট ও আবর্জনার স্তূপ থেকে শুরু করে নাপাক জায়গায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। এটা এখন অনেকটা স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এতে পবিত্র কোরআনের আয়াতের অমর্যাদা হচ্ছে। এ জন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে নিশ্চয়ই জবাব দিতে হবে।
পবিত্র কোরআনের আয়াত লিখিত ছেঁড়া কাগজ কবরস্থানে বা পবিত্র স্থানে ‘দাফন’ করার হুকুম রয়েছে। এ বিষয়ে কথা বলা, মানুষকে জানানো ও সতর্ক করার জন্য মসজিদের ইমাম-খতিবদের প্রতি বিশেষ নিবেদন রইল। সেই সঙ্গে মাদ্রাসা ও স্কুল-কলেজের প্রধানদেরও বিষয়টি নিয়ে নিজ নিজ মহলে সচেতনতা সৃষ্টির আহবান রইল।
দেশের গণমাধ্যমের প্রতি নিবেদন, আলোচ্য বিষয়ে জনগণকে জানিয়ে গোনাহের কাজ থেকে বেঁচে থাকতে সহযোগিতা করা। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়কেও এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে এসে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কোরআন শরিফের স্বতন্ত্র একটি আয়াত। এর মর্যাদা ও সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। এর হুকুম কোরআনের অন্যান্য আয়াতের মতোই। তাই অজু ছাড়া তা স্পর্শ করা যাবে না। বিসমিল্লাহ লিখিত কাগজ কোনো অসম্মানের স্থানে ব্যবহার করাও জায়েয নয়। তাই দাওয়াতনামা, পোস্টার ও ব্যানার, যা নির্ধারিত সময়ের পর কোনো প্রয়োজন না থাকার দরুণ পথে-ঘাটে ও নর্দমায় পড়ে থাকার আশঙ্কা থাকে এমনকি অনেক সময় পদপিষ্ট হয়। এসব ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কিংবা কোরআনের অন্য আয়াত লেখা থেকে বিরত থাকা উচিত। চাই তা আরবিতে লেখা হোক বা বাংলা উচ্চারণে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৫০ ঘন্টা, মে ০৬, ২০১৬
এমএ/