প্রতিটি পরিবার হচ্ছে শিশুর জন্য পাঠশালা ও বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কারণ শিশুরা গড়ে ওঠে পরিবার থেকে।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, হাল সময়ে চিরচেনা পরিবার প্রথা বিলুপ্তের পথে। এটা একটি সামাজিক বিপর্যয়ও বটে। পারিবারিক বিপর্যয়রোধে অনেকেই চিন্তিত। নানা কলাকৌশল প্রয়োগ করে পারিবারিক শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যাপৃত। অথচ মানব চিন্তা যতই শানিত যুক্তির কষ্টিপাথরে উন্নীত হোক না কেন, আল্লাহ প্রদত্ত নির্ভুল জ্ঞানের সহায়তা ব্যতীত প্রকৃত সফলতা সম্ভব নয়। সেই সূত্রে বলা যায়, পারিবারিক বিপর্যয়রোধে ইসলামের বিধানের অনুগামী হওয়া দরকার। এ পথেই রয়েছে সমাধান। কারণ, পরিবার ঠিক হলে ব্যক্তি ঠিক হয়ে যায়। আর ব্যক্তি ঠিক হয়ে গেলে পরিবার ও সমাজ উভয়ই ঠিক হয়ে যায়।
একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করার পুর্বে যেমন প্রথমতলা অথবা বহুতল ভবনের ফাউন্ডেশন করতে হয়, তেমনি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র, সমাজ গঠন করতে হলে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিবারের কোনো বিকল্প নেই। কাজেই সমাজবিজ্ঞানী ও ইসলাম বিশেষজ্ঞদের দৃষ্টিতে মানবসমাজ ও রাষ্ট্রের প্রাথমিক ভিত্তি হচ্ছে পরিবার।
ইদানীং আমরা ভুলতে বসেছি, পারিবারিক বন্ধনের কথা। আমাদের মূল্যবোধ ক্রমেই লোপ পাচ্ছে। পরিবারের প্রতি আমরা বৈষ্যমূলক নানা অন্যায়-আচরণ করছি। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না পরিবারের বড়দের। স্নেহসুলভ আচরণ করছে না বড়রা ছোটদের প্রতি। অথচ ইসলামে বলা হয়েছে পারস্পরিক সম্পর্কের কথা। পারিবারিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, ইসলামের বিধানে তার সবকিছু বিদ্যমান।
পরিবারের সুখ, শান্তি এবং পারস্পরিক সম্পর্ক ছাড়াও রয়েছে একটি আইনগত ও সামাজিক দিক। জীবনের সব পর্যায়ে যদি আল্লাহ প্রদত্ত ও মহানবী (সা.) প্রদর্শিত বিধান মেনে চলা যায়, তাহলেই পারিবারিক বিপর্যয়রোধ সম্ভব হবে। নতুবা মানবীয় প্রচেষ্টা মরীচিকার মতো নিষ্ফল ও ব্যর্থ হতে বাধ্য। ইসলামে পরিবারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, পরিবারের সব সদস্যের মধ্যে প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা ও মনের প্রশান্তি লাভ। নৈতিক ও চারিত্রিক উৎকর্ষতা সাধনের মাধ্যমে মানবতার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের শিক্ষা পরিবার থেকে লাভ করে মুসলিম সন্তানরা।
তাই আসুন, আমরা কোরআন এবং হাদিসের আলোকে একটি পূর্ণাঙ্গ পরিবার প্রতিষ্ঠা করি। তাহলেই একটি সমাজ ও রাষ্ট্র পূর্ণাঙ্গ ইসলামের আওতায় আসতে বাধ্য।
লেখক: সাংবাদিক ও স্থানীয় সরকার বিষয়ে গবেষক
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪১ ঘন্টা, মে ১৫, ২০১৫
এমএ/