ইরানের আওকাফ ও জনকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে সপ্তাহব্যাপী ৩৩তম তেহরান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতা মঙ্গলবার (১৭ মে) রাতে শেষ হয়েছে। প্রতিযোগিতায় ৭৫টি দেশের ১৩০ জন ক্বারি ও হাফেজ প্রতিনিধি অংশ নেন।
‘এক গ্রন্থ, এক উম্মাহ’ শিরোনামের এই প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো অন্ধ হাফেজদের আলাদা একটি গ্রুপ ছিলো। সেই গ্রুপে বাংলাদেশের অন্ধ হাফেজ তানভীর হোসাইন ৪র্থ স্থান লাভ করেছেন।
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি প্রতিনিধির তেলাওয়াতে বিচারকরা মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। জন্মান্ধ তানভির ২০১২ সালে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত ৭৩ দেশের প্রতিযোগীদের হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তার বয়স ২০ বছর।
অন্ধ হাফেজদের এ প্রতিযোগিতায় ইরানের প্রতিনিধি আবদুল গাফুর জুহারচি প্রথম হয়েছেন। আর তুরস্কের প্রতিনিধি আহমাদ সারিকায়া ও তিউনিশিয়ার প্রতিনিধি পর্যায়ক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন।
আরও পড়ুন >> মালয়েশিয়ার কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি কারির সাফল্য
প্রতিযোগিতার কোরআন তেলাওয়াত গ্রুপে শীর্ষ স্থান দখল করেছেন ইরানের হামিদ ওয়ালিজাদে। এরপর পর্যায়ক্রমে আফগানিস্তানের মোহাম্মদ জাভেদ আকবর, ইন্দোনেশিয়ার বাহার উদ্দিন সাঈদ, জার্মানের সাইয়্যেদ আব্বাস আলী ও হল্যান্ডের মোস্তফা আলী সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন।
আর হেফজ বিভাগের সেরা পাঁচজন হলেন যথাক্রমে- ইরানের মুজতবা ফার্দফানি, মিসরের আবুদল আজিজ আহমদ, অস্ট্রেলিয়ার মোহাম্মদ আলী আবদুল্লাহ, আইভরিকোস্টের খালিদ সাঙ্গারি ও নাইজারের মোহাম্মদ তাহা হাসান।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশি প্রতিনিধি অন্ধ হাফেজ তানভীর হোসাইন তার সফলতা প্রসঙ্গে বলেন, কোরআন হেফজ করার মাধ্যমে আমি নিজেকে খুঁজে পেয়েছি। কোরআন হেফজ করার পূর্বে কেউ আমাকে চিনত না। তবে যখন আমি কোরআন হেফজ করলাম, তখন থেকে অনেক বরকত খুঁজে পেয়েছি।
আমি বিভিন্ন স্থানে অনেক পুরস্কার ও পদক পেয়েছি; তবে সেগুলো আমার নিকট ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমার নিকট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মহান আল্লাহর বরকত, যা আমাকে তিনি দান করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ইরান প্রথমবারের মতো শুধুমাত্র দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য কোরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এটা খুবই ভালো একটি উদ্যোগ।
তানভীর হোসাইন ৫ বছর বয়স থেকে কোরআন মুখস্থ করা শুরু করেন। ১৮ বছর বয়সে তিনি পুরো কোরআন মুখস্থ করতে সক্ষম হন। তানভীর হাফেজ কারী নেছার আহমাদ আন নাছিরী পরিচালিত যাত্রাবাড়িস্থ (৩০৬ উত্তর দনিয়া, কাজলা) মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র।
উল্লেখ্য যে, ১১ মে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতাটি শেষ হয় ১৭ মে। প্রতিযোগিতায় তিন বাংলাদেশি অংশ নেন। তারা হলেন- হেফজ বিভাগে বিভাগে মো. শরীফ আল আমিন, অন্ধ হাফেজ গ্রুপে জন্মান্ধ হাফেজ তানভীর হোসাইন ও ক্বেরাত বিভাগে মো. হাবিবুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৬
এমএ/