হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যখন শাবানের মধ্য দিবস আসবে, তখন তোমরা রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। ’ -ইবনে মাজাহ
ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ।
হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যে ব্যক্তি মাগরিবের পর বিশ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহতায়ালা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। ’ –সুনানে তিরমিজি
আর কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘রাতের শ্রেষ্ঠতম ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। ’ সূরা বনি ইসরাইল : ৭৯
আজকের রাতে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে মোমিন-মুসলমানরা বিভিন্ন আমল করবেন। এসব আমলের মাধ্যমে শবেবরাতের ফজিলত, আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত অর্জিত হয়। আমলেও অন্যতম হলো নফল নামাজ। শবেবরাতে কমবেশি সবাই চেষ্টা করেন নফল নামাজ পড়ার।
হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি নফল নামাজ আদায় করে, সে ব্যক্তি নামাজের মাধ্যমে তার পালনকর্তার অতি ঘনিষ্ঠতা লাভ করে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘সিজদা করো আর আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভ করো। ’
শবেবরাতের নফল নামাজের কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই। যত রাকাত ইচ্ছা এবং যে কোনো সূরা দ্বারা আদায় করতে পারবেন।
বাজারে প্রচলিত কিছু বই-পুস্তকে শবেবরাত উপলক্ষ্যে বিশেষ ধরনের নফল নামাজের বিভিন্ন নিয়মের কথা বলা আছে। সেখানে বিশেষ বিশেষ সূরা দিয়ে নামাজ পড়া বা নির্ধারিত রাকাত নামাজ বিশেষ সূরা দ্বারা আদায় করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু হাদিসে শবেবরাতের বিশেষ পদ্ধতির কোনো নামাজের কথা বলা হয়নি।
যারা শবেবরাত উপলক্ষ্যে নফল নামাজ পড়তে চান, তাদের জন্য ইসলামি শরিয়তের নির্দেশনা হলো- সব সময় যেভাবে নামাজ পড়া হয় সেভাবেই নামাজ পড়বেন। অর্থাৎ দুই রাকাত করে যতো রাকাত সম্ভব হয় নামাজ আদায় করবেন এবং যে সূরা দিয়ে সম্ভব হয় পড়বেন।
নফল নামাজের ক্ষেত্রে মনে রাখবেন, নামাজটা যেন একটু দীর্ঘ করা এবং সিজদায় দীর্ঘ কাটানো। এ বিষয়ে হাদিসের বর্ণনা পাওয়া যায়।
বলাবাহুল্য, যে কোনো বই-পুস্তিকায় কোনো কিছু লিখিত থাকলেই তা বিশ্বাস করা উচিত নয়। বিজ্ঞ আলেমদের নিকট থেকে জেনে আমল করা উচিত।
আরেকটি কথা, শবেবরাতের যাবতীয় নফল আমলসমূহ, বিশুদ্ধ মতানুসারে একাকী করণীয়। ফরজ নামাজ তো অবশ্যই মসজিদে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে হবে। এরপর যা কিছু নফল পড়ার- তা নিজ নিজ ঘরে একাকী পড়বেন। এসব নফল আমলের জন্য দলে দলে মসজিদে এসে সমবেত হওয়ার প্রমাণ হাদিস শরিফেও নেই আর সাহাবায়ে কেরামের যুগেও এর রেওয়াজ ছিল না।
তবে কোনো আহ্বান ও ঘোষণা ছাড়া এমনিই যদি কিছু লোক মসজিদে এসে যায় তাহলে প্রত্যেকে নিজ নিজ আমলে মশগুল থাকবে, একে অন্যের আমলে ব্যাঘাত সৃষ্টির কারণ হবে না।
এ ছাড়া আজকের রাতে সালাতুস তাসবিহ এবং অন্যান্য নফল নামাজ আদায় করা যায়। রজব শাবান মাসের রাতের নফল নামাজ তারাবির নামাজ বা কিয়ামুল লাইলের প্রস্তুতি বিশেষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘন্টা, মে ২২, ২০১৬
এমএ/