হজরত শাহ মখদুম রুপোশ (রহ.)-এর পূণ্যভূমি রাজশাহীর বরেণ্য আলেম মাওলানা মুফতি শাহাদত আলী। পদ্মার তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী জামেয়া ইসলামীয়া শাহ মখদুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ তিনি।
ইসলাম শান্তির ধর্ম
ইসলাম ধর্মে জঙ্গিবাদের বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই। কারণ ইসলাম ধর্মটাই হলো শান্তির ধর্ম। শান্তি বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কথা বা কাজে ইসলামের সম্মতি নেই। হাদিস শরিফে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন, ‘মুসলমান তো সে-ই, যার হাতের দ্বারা, কথার দ্বারা, কাজের দ্বারা অন্য কেউ কষ্ট পাবে না বরং নিরাপদে থাকবে। তাহলে এটাই দাঁড়াচ্ছে রক্তপাত জঙ্গিবাদ দিয়ে আর যাই হোক ইসলাম কায়েম করা সম্ভব নয়। আল্লাহর কোরআন এবং রাসূলের (সা.) হাদিসে জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। সমর্থন তো অনেক দূরে কথা।
নৃশংসতাকে ইসলাম সমর্থন করে না
মানুষ হয়ে কিভাবে নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা করে, গলা কাটে, কিভাবে বোমাবাজি করে। এসব দেখে কেবলই আফসোস হয়। যাদের হত্যা করা হচ্ছে তারাও তো কারো না কারো বাবা, সন্তান বা ভাই। এখন এমন নৃশংস মৃত্যু যদি হত্যাকারীদের নিজের আপনজনদের হতো তা হলে কেমন লাগতো তার। তাদের হৃদয় কি একটি বারের জন্যও কেঁপে উঠতো না, ঠিকই উঠতো। এখন নিজেদের দিয়ে অন্যদের কষ্ট যদি কেউ বুঝতে না পারে তাহলে সে ইসলামকে কিভাবে বুঝবে? আর কিভাবেই বা শান্তি ও সৌহার্দের ধর্ম ইসলামকে তারা প্রতিষ্ঠা করবে। ইসলাম প্রতিষ্ঠায় অন্যের দেওয়া বিভ্রান্তিকর দীক্ষা তো নিজেদের দিয়েই তারা বিবেচনা করতে পারে, যে তারা সঠিক না ভুল পথে রয়েছে।
যারা সন্ত্রাস করে তারা ইসলামে শত্রু
যারা সন্ত্রাস করে তারা কেবল জনগণের শত্রু না তারা দেশের শত্রু ইসলামেরও শত্রু। ইসলাম পৃথিবীতে এসেছিল মানুষের মধ্যে শান্তির প্রতিষ্ঠার জন্য। সে যুগে অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষ ছিল, জ্ঞানী মানুষ ছিল, প্রাচুর্য ছিল। কিন্তু ছিল না সহানুভূতি, ছিল না মানবতা। ইসলাম আসার পর মানবতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু এখন কোনো কোনো ক্ষেত্রে আইয়ামে জাহিলিয়াতের যুগের চেয়েও বেশি নৃশংসতা হচ্ছে। তাই যারা এই কাজটি করছেন, তদের বোঝা উচিত- ইসলাম কি বলে, কোরআন কি বলে, হাদিসে কি আছে।
ইসলাম থেকে বিচ্যুত হওয়ায় অপব্যাখা
কিছু আলেম আছেন, যারা জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে কোরআন থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছেন। তারা জিহাদ সম্পর্কে অপব্যখ্যা করছেন। এটা খুবই দুঃখজনক বিষয়। তারা জিহাদ সম্পর্কে অপব্যখা দিয়ে আসলে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করছেন। তাদের জন্য গোটা আলেম সমাজের দুর্নাম হচ্ছে। সমাজের আলেম-উলামা ও ধর্মপ্রাণ মানুষের উচিৎ তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসা।
এমন জিহাদের মৃত্যুতে শহীদের দরজা নেই
জিহাদে কোনো ব্যক্তি মারা গেলে ‘শহীদ’ হবেন এ কথা ঠিক। কিন্তু জিহাদ কোনটা? যেখানে শরিয়তের শাসন থাকবে, শরিয়তসম্মত কোনো নেতার নেতৃত্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ হবে- সেটা জিহাদ। কিন্তু বর্তমানে জিহাদের নাম দিয়ে সমাজে ফেৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমতাবস্থায় অপরকে মারবে, নিজেও মরবে। ইসলামের কোন আইন বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মারা পড়ছে যে, তারা শহীদ হবেন? এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তারা কোনোভাবেই শহীদের দরজা পাবেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৬
এসএস/এমএইউ/