ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

জুমাতুল বিদা: আবেগ ও উদ্দীপ্ত অনুভূতির নাম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৬
জুমাতুল বিদা: আবেগ ও উদ্দীপ্ত অনুভূতির নাম

পবিত্র জুমাতুল বিদা শুক্রবার (০১ জুলাই)। রমজান মাসের শেষ জুমাবার হওয়ার কারণে এদিনের জুমাকে জুমাতুল বিদা বলা হয়।

রমজান মাসজুড়ে রোজা পালন আর ইবাদত-বন্দেগির পর আজকের জুমায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা রমজান মাসকে বিদায় জানাতে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করবেন।

জুমাতুল বিদাকে আরও মহিমান্বিত করেছে, রমজানের শেষ শুক্রবারকে আল কুদস দিবস হিসেবে পালন করার ঘোষণা। কারণ প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবারে বিশ্বের মুসলমানরা ইসরাইলের কবল থেকে মসজিদুল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাসকে মুক্ত করার জন্য নতুন শপথ নিয়ে থাকেন। এজন্য রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আল কুদস দিবসও বলা হয়।

আল্লাহর নবী হজরত দাউদ (আ.)-এর পুত্র হজরত সোলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগর প্রতিষ্ঠা করেন। আল্লাহর মহিমা তুলে ধরতে তিনি সেখানে মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদুল আকসা নির্মাণ করেন। মক্কার মসজিদে হারাম ও মদিনার মসজিদে নববীর পর মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান হচ্ছে বায়তুল মোকাদ্দাস বা মসজিদুল আকসা। সেই বায়তুল মোকাদ্দাস দীর্ঘ দিন ধরে অবরুদ্ধ। আজকের জুমা শেষে বিশ্বের মুসলমানরা বায়তুল মোকাদ্দাসের মুক্তির জন্যও আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করবেন।

সাধারণ হিসাবে একটি রমজানে সাধারণত ৪ থেকে ৫টি জুমা পাওয়া যায়। আর শেষ জুমাটিকে মনে করা হয় রমজানের বিদায়ী ঘোষণা। বলা হয় জুমাতুল বিদা। এ জুমায় থাকে ঈমান আমলের মওসুম ও রহমত মাগফিরাতের সুসময় চলে যাওয়ার বেদনা। থাকে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের প্রার্থনা, আবেগ ও উদ্দীপ্ত অনুভূতি।

এরই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ ভরদুপুরে দেশের আড়াই লাখের বেশি মসজিদে মহান আল্লাহর দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পড়ে জীবনের সার্থকতা কামনা করেন।

পৃথিবীর প্রায় ২শ’ কোটি মুসলমান এ দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে উদযাপন করে থাকেন।   রোজা অবস্থায় জুমার নামাজে সমবেত হয়ে মহান আল্লাহর গুণগানের পাশাপাশি শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পরম প্রতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সালাম পেশ করবেন। জুমার পূর্বে মসজিদের খতিবের মুখে দীনি আলোচনা শুনে, দু’রাকাত ওয়াজিব নামাজসহ বহু নফল নামাজ পড়ে, দান-খয়রাত ও দোয়া-মোনাজাত করে দিনটিকে বিদায়া জানাবেন। জুমাতুল বিদার তাৎপর্য, গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য এখানেই নিহিত।

ইসলামি স্কলারদের মতে, অন্যান্য দিনের চেয়ে শুক্রবার তথা জুমার দিনে মর্যাদা অন্য দিনের তুলনায় বেশি। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। তাই আজকের জুমার গুরুত্ব অনেক বেশি। তাই এদিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।

এই গুরুত্বের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মুসল্লি আবেগভরা উপস্থিতিতে ভরে তুলবেন লাখো মসজিদ। নানা বয়সি মুসল্লিদের উপচে ওঠা ভিড় মসজিদ নেমে চলে আসবে মসজিদ প্রাঙ্গণে, পার্শ্ববর্তী চত্বর, ফুটপাত রাজপথ ও খোলামাঠে। দেখা যাবে আল্লাহর রহমত কামনায় মশগুল কাতারবন্দি শুভ্র-সফেদ লাখো মানুষের ইবাদতের এক অনুপম দৃশ্য।

রাজধানীর কর্মজীবী মানুষ বিপণিকেন্দ্র, বাজার, আড়ত, রাস্তায় জায়নামাজ, কাগজ, কার্টনের শিট, সংবাদপত্র ইত্যাদি বিছিয়ে নামাজে শরিক হচ্ছে মানুষ। কোনো বিশেষ আনুষ্ঠানিকতা নেই। আছে শুধু আকুলতা, মুক্তি কামনা ও রহমত র্প্রাথনা। তরুণ, যুবক, শিশু-কিশোর, বয়স্ক-প্রবীণ সবাই একাকার হয়ে যাবেন আজকের জুমায়। সবার একটাই চাওয়া, আল্লাহর রহমত।

এমন আবেগ, অনুভব মূলত আল্লাহর কাছে রহমত, মাগফিরাত, নাজাত, দীন-দুনিয়ার মঙ্গল, মানবজাতির শান্তির জন্য।

বাংলাদেশ সময়:  ০২৩০ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৬
এমএইউ/

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।