ঈদুল ফিতর ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিবস। এ দিবসের রয়েছে তাৎপর্য ও করণীয়।
আল্লাহতায়ালা উম্মতে মুহাম্মদিকে সম্মানিত করে এ দু’টো ঈদ দান করেছেন। আর এ দু’টো দিন বিশ্বে যত উৎসবের দিন ও শ্রেষ্ঠ দিন রয়েছে তার সব ক’টির চেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন ও সেরা ঈদ।
ইসলাম মতে এ দু’টো উৎসবের দিন শুধু আনন্দ-ফুর্তির দিন নয়। বরং এ দিন দু’টোকে খুশি-আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে জগৎসমূহের প্রতিপালকের ইবাদত-বন্দেগি দ্বারা সুসজ্জিত করা হবে। যিনি জীবন দান করেছেন, দান করেছেন সুন্দর আকৃতি, সুস্থ শরীর, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পরিবার-পরিজন, যার জন্য জীবন ও মরণ তাকে এ আনন্দের দিনে ভুলে থাকা হবে আর সব কিছু ঠিকঠাক মতো চলবে, এটা কিভাবে মেনে নেয়া যায়?
তাই ইসলাম আনন্দ-উৎসবের এ দিনটাকে আল্লাহতায়ালার ইবাদত-বন্দেগি, তার প্রতি শোকরিয়া-কৃতজ্ঞতা প্রকাশ দ্বারা সুসজ্জিত করেছেন।
ঈদের সকালে করণীয়
মাসয়ালা: গোসল করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা। ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা মোস্তাহাব। কেননা এ দিনে সব মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য মিলিত হয়। যে কারণে জুমার দিন গোসল করা মোম্তাহাব সে কারণেই ঈদের দিন ঈদের নামাজের পূর্বে গোসল করা মোস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) দুই ঈদের দিন গোসল করতেন। -মুসনাদে বাযযার, হাদিস: ৩৮৮০
মাসয়ালা: ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন। -মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হাদিস: ৬০৯
মাসয়ালা: ঈদগাহে হেঁটে যাওয়া এবং এক পথ দিয়ে যাওয়া ও অন্য পথ দিয়ে ঘরে আসা সুন্নত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদগাহে এক পথ দিয়ে গিয়ে অন্য পথ দিয়ে ঘরে ফিরে আসতেন। -মুসনাদে বাযযার, হাদিস: ১১১৫
মাসয়ালা: উত্তম পোশাক পরিধান করা ও সুগন্ধি ব্যবহার মোস্তাহাব। পোশাক নতুন হওয়া জরুরি নয়, বরং নিজের নিকটে থাকা সর্বোত্তমটাই যথেষ্ট।
ঈদের দিনে খাবার গ্রহণ
মাসয়ালা: সুন্নত হলো ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণ করা। আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের নামাজের পূর্বে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত।
হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবি করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের নামাজের পূর্বে খেতেন না। নামাজ থেকে ফিরে এসে কোরবানির গোশত খেতেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ১৪২২
অধিক তাকবির পাঠ
মাসয়ালা: হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন। ঈদের নামাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন। যখন নামাজ শেষ হয়ে যেত তখন আর তাকবির পাঠ করতেন না। আর কোনো কোনো বর্ণনায় ঈদুল আজহার ব্যাপারেও একই কথা পাওয়া যায়। আরও বর্ণিত আছে যে, ইবনে উমর (রা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে ঈদগাহে আসা পর্যন্ত উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করতেন। ঈদগাহে এসে ইমামের আগমন পর্যন্ত এভাবে তাকবির পাঠ করতেন।
মাসয়ালা: ঈদের নামাজ আদায়ের পর নিজের জন্য ও জীবিত-মৃত সব মুসলমানদের জন্য দোয়া করা উত্তম। -সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৫৩৯
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৬
এমএইউ/