হজরত নুহ (আ.) ছিলেন আদিপিতা হজরত আদম (আ.)-এর অষ্টম অথবা দশম অধঃস্তন পুরুষ। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে হজরত নূহ (আ.)-এর কাহিনী, তার সম্প্রদায়ের যারা তাকে অস্বীকার করেছিলো তাদের মহাপ্লাবন দ্বারা শাস্তি প্রদান ও আর যারা তার কথায় ঈমান এনেছিল তাদের নৌকায় আরোহণের মাধ্যমে কিভাবে মুক্তি পেয়েছেন- সে ব্যাপারে বর্ণনা প্রচুর বর্ণনা রয়েছে।
আল্লাহতায়ালার নির্দেশে প্রবল ঝড় ও বন্যার হাত থেকে তৎকালীন ঈমানদার মানুষ ও জীবজন্তুকে বাঁচানোর জন্য হজরত নূহ (আ.) একটি বৃহৎ নৌকা তৈরি করেছিলেন। এ ঘটনার পুরো বিবরণ রয়েছে বিভিন্ন আসমানি ও হাদিস শরিফে। নৌকায় প্রত্যেক প্রজাতির পশু-পাখির জোড়া, হজরত নুহ (আ.)-এর অনুসারীরা উঠলে মহাপ্লাবন শুরু হয়। নৌকার আরোহীরা বাদে বাকি সবাই প্লাবনে ডুবে মারা যায়।
ওই নৌকাটির দৈর্ঘ্য ছিল ১২শ’ গজ, প্রস্থ ছিল ৬শ’ গজ এবং এটি তিন তলা বিশিষ্ট ছিল। প্রথম তলায় গৃহপালিত ও হিংস্র জীব-জন্তু, দ্বিতীয় তলায় মানুষ এবং তৃতীয় তলায় ছিল পাখ-পাখালি। নৌকায় চল্লিশ জোড়া নারী-পুরুষ মিলে মোট আশিজন ছিল। তারা এতে ১২০ দিন অবস্থান করে। প্লাবনের পর নৌকাটি ‘জুদি’ পাহাড়ে গিয়ে নোঙর করে। স্থানটি বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর কাছাকাছি।
ঐতিহাসিক এই নৌকা নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে ও হবে। এসব ছাপিয়ে কোরআন-হাদিসের বর্ণনার সঙ্গে মিল রেখে আমেরিকায় হজরত নূহ (আ.)-এর ওই বৃহৎ নৌকার ন্যায় একটি নৌকা তৈরি করা হয়েছে। নৌকাটি আমেরিকার কেন্টাকি স্টেটে নির্মাণ করা হয়েছে। ১৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট নৌকাটি দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য জাদুঘরের মতো করে নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক ‘ক্যান হ্যাম’ জানিয়েছেন, হজরত নূহ (আ.)-এর কিস্তির নকশা অনুযায়ী এই নৌকাটি তৈরি করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পবিত্র বাইবেলের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী নৌকাটি নির্মাণ করা হয়েছে এবং সেসময়ে যে সব জীবজন্তু নৌকার ভেতরে ছিল তার অনুরূপ পশুপাখি নৌকার ভেতরে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, এই নৌকাটি পবিত্র বাইবেলের বর্ণনা অনুযায়ী নির্মাণ করা হয়েছে এবং আশা করেছি প্রতি বছর ২০ লাখ দর্শক এটি পরিদর্শন করার জন্য আসবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৬
এমএইউ/