ইসলামে পরামর্শের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। এমনকি আল্লাহতায়ালা মানুষকে পৃথিবীতে প্রেরণ করার আগে ফেরেশতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের মতামত জানতে চেয়েছিলেন।
ইসলামের প্রথম যুগ থেকেই সব কাজ সম্পাদিত হতো পরামর্শের ভিত্তিতে। ইসলাম বরাবরই পরস্পরের পরামর্শকে বেশ গুরুত্বের সঙ্গে দেখে আসছে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা পরামর্শের ভিত্তিতে সব কাজ সম্পাদন করো। ’
শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে পরামর্শ করেছেন এবং পরামর্শের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। খিলাফত পরিচালনারও অন্যতম ভিত্তি ছিলো পরামর্শ। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বা জাতীয় দুর্যোগে পরামর্শ করলে অনেক সহজেই তা থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া সম্ভব।
হাদিসে শরিফে আছে, ‘যে পরামর্শ নিয়ে কাজ করে তাকে লজ্জিত হতে হয় না। যে পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করে সে নিরাপদ থাকে। ’
ইসলাম সব মানুষের রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের অধিকার উদারভাবে প্রদান করেছে। ইসলাম কোনো সমাজের মানুষকে উঁচু ও নিচু বা শাসক এবং শাসিত হিসেবে বিভক্ত করার পক্ষপাতী নয়। ইসলাম নির্দেশিত এই পরামর্শ ব্যবস্থা নিজ পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য।
তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আমরা ধীরে ধীরে এ পরামর্শ ব্যবস্থা থেকে সরে আসছি। ফলে পরিবারে কলহ, সমাজে অশান্তি ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
ইসলামে পরামর্শের প্রতি এমন গুরুত্বারোপ করা হলেও তিন শ্রেণির লোকের সঙ্গে পরামর্শ করতে নিষধ করা হয়েছে। ওই তিন শ্রেণির মানুষ হলো- ভীতু, লোভী ও কৃপণ।
ভীতু ও কাপুরুষ লোকেরা দের সঙ্গে পরামর্শ করতে নিষেধ করা হয়েছে এ কারণে যে, তারা অতিরিক্ত ভয়ের কারণে কখনোই কোনো ভালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে না। কাপুরুষতা মানুষের আত্মবিশ্বাস, ঈমানের দুর্বলতা ও অক্ষমতার প্রমাণ বহন করে। এগুলো মানুষের খারাপ বৈশিষ্ট্য।
অভিজ্ঞ ইসলামি স্কলারদের অভিমত হলো, ভীরু লোকের সঙ্গে পরামর্শ করতে নেই। কেননা সে বিপদে পড়লে গোপন তথ্য ফাঁস করে দিতে পারে। কৃপণ লোকের সঙ্গেও পরামর্শ করতে নেই। কেননা সে অন্যের উন্নতি সহ্য করতে পারে না। আর লোভীদের সঙ্গে পরামর্শ করতে নেই, কেননা সে লোভ-লালসাকে সবসময় বড় করে দেখে। সুতরাং এমন লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করতে নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১১, ২০১৬
এমএইউ/