ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মিশিগানে অমুসলিম শিক্ষার্থীদের পাহারায় নামাজ আদায়ের বিরল নজির

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
মিশিগানে অমুসলিম শিক্ষার্থীদের পাহারায় নামাজ আদায়ের বিরল নজির ছবি: সংগৃহীত

মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে অনন্য এক নজির স্থাপন করল শিক্ষার্থীরা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শত শিক্ষার্থী যখন নামাজ আদায় করছিলেন, তখন তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন অমুসলিম শিক্ষার্থীরা।

সেন্টার ফর ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি পৃথিবীর সেরা ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। ওই তালিকায় আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান রয়েছে উনিশতম স্থানে।

সেই মিশিগান ইউনিভার্সিটিতে অনন্য এক নজির স্থাপন করল শিক্ষার্থীরা। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শত শিক্ষার্থী যখন নামাজ আদায় করছিলেন, তখন তাদেরকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন অমুসলিম শিক্ষার্থীরা। বিশ্বের আলোচিত প্রায় সব গণমাধ্যমে খবরটি প্রকাশ পেয়েছে। ফলে এটা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা।

প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, হিজাব পরা এক নারীর নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হওয়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।  

লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্টের খবরে বলা হয়েছে, অ্যান আরবোর পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, একজন নারী মাথায় হিজাব পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। এ সময় পুলিশ তাকে হিজাব সরাতে বলে। কিন্তু তিনি তাতে অসম্মতি প্রকাশ করেন। এ সময় পুলিশ তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, তিনি হিজাব না সরালে লাইটার দিয়ে তার দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।

এ ঘটনায় উত্তেজনা দেখা দেয়। সতর্কতা অবলম্বন করা হয় সর্বত্র। এরই মধ্যে নামাজের সময় হয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়টির মুসলিম স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন (এমএসএ) নামাজের আয়োজন করে এবং অমুসলিম শিক্ষার্থীদের তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করার আহ্বান জানায়। তাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নামাজের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে অমুসলিম শিক্ষার্থীরা।  

এ বিষয়ে এমএসএ’র সভাপতি ফারহান আলী বলেন, অমুসলিম শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তারা আনন্দিত। তারা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করেন- তখন শত শত অমুসলিম চারদিক থেকে তাদেরকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।  

ফারহান আলী হাফিংটন পোস্টকে বলেছেন, নামাজ আদায়ের সময় আক্রান্ত হতে পারেন এমন আতঙ্ক ছিল অনেকের মাঝে। তাই আমরা সহপাঠীদের আহ্বান জানাই সমর্থন ও সহযোগিতা দিতে। তারা আমাদের চারদিক থেকে ঘিরে রেখে নিরাপত্তা দেয়। এ এক বিস্ময়কর ব্যাপার। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, আমরা একে অন্যের সহায়তায় পাশে গিয়ে দাঁড়াই।

মোহাম্মদ ইশতিয়াক নামের এক শিক্ষার্থী বলেছেন, এ নিরাপত্তায় অংশ নিয়েছিল ক্যাম্পাসের ইহুদি ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় কোনো কোনো সদস্যের হাতে ছিল স্লোগান সম্বলিত ব্যানার।

তাতে লেখা ছিল- ‘এ স্থানটি তোমরাও পেতে পারো। ’ তিনি এক ইমেইল বার্তায় বলেন, যদিও ওই দিনের রাতটি ছিল খুব ঠাণ্ডা। তা সত্ত্বেও আমাদেরকে যে পরিমাণ মানুষ সমর্থন দিয়েছিল তা হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। এমন সংহতির ঘটনা আমাদের মাঝে আশার সঞ্চার করেছে। মনে হয়েছে আমরা একা নই, আমাদের ভীত হওয়ারও কোনো কারণ নেই। এভাবেই আমরা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করি। আমাদের এমন একটি সমাজ রয়েছে, যেখানে সবাই মিলেমিশে থাকি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৬
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।