ভোলা: ভোলায় নির্মিত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন মসজিদ। শহরের উকিল পাড়ায় প্রায় দেড় একর জমির ওপর নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায় মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
চোখজুড়ানো বাহারি কারুকাজ আর সৌর্ন্দয্যমন্ডিত মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ভীড় জমান।
নানা রঙয়ের মার্বেল পাথরসহ বিভিন্ন পাথরে কারুকাজ দ্বারা নির্মিত দুইতলা বিশিষ্ট এই মসজিদে রয়েছে পুরুষ ও নারীদের জন্য আলাদা অজুখানা এবং নামাজের ব্যবস্থা।
নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, ২০১০ সালের জুন মাসে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এ পর্যন্ত ৫২ হাজার শ্রমিক মসজিদ নির্মাণ কাজে অংশ নিয়েছেন। আর্কিটেক্ট ফোরামের ডিজাইনার কামরুজ্জামান লিটন মসজিদটির ডিজাইন করেছেন।
মসজিদে ১২০ ফুট উচ্চতার মিনার ও প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতার গম্ভুজ রয়েছে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ও হেফজখানা। মসজিদটির কারুকাজে আরবি ক্যালিওগ্রাফি ও আল্লাহ লেখা ডিজাইনের ফোয়ারাসহ আধুনিক নানা স্থাপনা ব্যবহার করা হয়েছে।
এ ছাড়াও মসজিদের চারপাশে ফুল বাগান তৈরি করা হয়েছে। মসজিদে একসঙ্গে ২ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ও পানির সুবিধার পাশাপাশি রয়েছে নিজস্ব জেনারেটর ব্যবস্থা।
আধুনিক অজুখানা, এয়ারকণ্ডিশন ও ফ্যান ছাড়াও রয়েছে শ্বেত পাথরের টাইলস, বিছানো হয়েছে কার্পেট।
৩০ ডিসেম্বর জুমা আদায়ের মাধ্যমে মসজিদে নিয়মিত নামাজ শুরু হবে মসজিদটিতে। উদ্বোধনী দিনে জুমার নামাজে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী।
মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদও উপস্থিত থাকবেন।
মসজিদটি সরেজমিন পরিদর্শনকালে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এটি দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম কোনো আধুনিক মসজিদ, যা দ্বীপজেলা ভোলায় নির্মিত হলো।
শহরের প্রাণকেন্দ্র উকিল পাড়ায় দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটিকে ঘিরে মানুষের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার মসজিদটি নামাজের জন্য উন্মুক্ত করার পর থেকে মুসল্লিরা নিয়মিত নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এ বিষয়ে নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সমাজসেবক নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, নাম কিংবা পরিচিতির জন্য নয়, মূলতঃ আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি পেতেই সেবাসেবামূলক কাজ করছি। সাধ্যমতো অসহায় দুঃস্থদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। গরীর মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যই আল্লাহতায়ালা আমাকে ভাগ্যবান করেছেন এবং আর্থিক স্বচ্ছতলতা দান করেছেন। আল্লাহতায়ালার কাছে অশেষ শোকরিয়া; তিনি আমাকে গরীব অসহায় মানুষের সেবার করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে একদিন এই পৃথিবী থেকে চলে যেতে হবে। তাই মৃত্যুর আগে সওয়াবের জন্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ থেকেই এই মসজিদটি নির্মাণ করেছি। অহসায় দুঃস্থদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার পাশাপাশি তাদের জন্য সেবামূলক কাজ করছি। সে কারণে বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছি। চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে বিনামূল্যে রোগীদের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, সমাজসেবক নিজাম উদ্দিন আহমেদ শহরে একটি চক্ষু হাসপাতাল, ১৫টি মসজিদ, এতিমখানা, একটি বৃদ্ধাশ্রম ও ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠাসহ অসংখ্য সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
এমএইউ/