ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ঈমানের মেহনতের জন্য আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
ঈমানের মেহনতের জন্য আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শুক্রবার মাগরিবের পর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে ঈমানের তাৎপর্য সম্পর্কে বয়ান করেছেন তাবলিগের কেন্দ্রীয় মারকাজ দিল্লি নিজামুদ্দিনের মুরুব্বি মাওলানা শওকত। মাঠে উর্দূ বয়ানটি তাৎক্ষণিকভাবে বাংলায় অনুবাদ করেছেন মাওলানা নূরুজ্জামান। বাংলানিউজের পাঠকের জন্য সেই বয়ানের চুম্বুকাংশ তুলে ধরেছেন মাওলানা উবায়দুল হক খান

আসমান জমিনে যত প্রাণি রয়েছে সবকিছুকে আল্লাহতায়ালাই রিজিক দান করেন। মানুষ যতই চেষ্টা করে না কেন, সে তার জন্য বরাদ্দকৃত রিজিকের চেয়ে অতিরিক্ত কিছু পাবে না।


 
মানুষ কী খাবে, কতটুকু খাবে সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহ তা লিখে দিয়েছেন। এর বাইরে সে একটি দানাও খেতে পারবে না। তার খাবার থেকে সে এক দানা কমও খাবে না।

সাহায্যের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ ছাড়া কেউ সাহায্য করতে পারে না। তাই সাহায্য একমাত্র আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে। অন্য কারও কাছে সাহায্য চাওয়া যাবে না।

.আমাদেরকে ঈমানের জন্য মেহনত করতে হবে। মক্কায় হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম ঈমানের জন্য মেহনত করেছেন। আল্লাহ ছাড়া কারও প্রতি রাসূল ও সাহাবায়ে কেরামের আস্থা ও বিশ্বাস ছিলো না। তাই একমাত্র আল্লাহর প্রতি আমাদেরকে আস্থা আর বিশ্বাস রাখতে হবে। এতেই রয়েছে মানুষের সফলতা।  

একবার হজরত উমর (রা.) হাজরে আসওয়াদের সামনে কাঁদতে ছিলেন। এ অবস্থা দেখে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, এ জায়গাটি কাঁদার জায়গা। সুতরাং এখানে কাঁদা উচিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, এ পাথর জান্নাতে যাবে। হাশরের মাঠে এ পাথরকে চক্ষু ও জবান দেওয়া হবে। এ পাথরকে যে নেক উদ্দেশ্যে চুমু খেয়েছে সে তার জন্য সুপারিশ করবে। সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবে।

আমরা সবাই আল্লাহর কুদরতের অধীন। আল্লাহর কুদরতের বাইরে কিছু নেই। এমনকি হজরত আজরাঈলও আল্লাহর কুদরতের অধীন।  

পৃথিবীতে যা কিছু হবে সবকিছু আল্লাহর জানা আছে। রোদ-বৃষ্টি সব আল্লাহর ইচ্ছায় হয়। তুফানের মধ্যে একটি পাতা কতবার নড়বে সেটাও আল্লাহতায়ালা নির্ধারণ করে দেন। সমস্ত প্রাণি মিলে যদি এ পাতাকে এর চেয়ে বেশি নাড়াতে চায়, খোদার কসম করে বলি- একটুও পারবে না।

সাহাবাদের জীবন আমাদের জন্য নমুনা। সাহাবায়ে কেরাম ঈমানের জন্য অনেক মেহনত করেছেন। তারা তাদের ঈমান বাড়ানোর জন্য মসজিদে জমা হয়েছেন। সেখানে হালকা বানিয়ে দ্বীনের আলোচনা করে উপকৃত হয়েছেন। আমাদেরও সেই পথ ও পন্থা অবলম্বন করতে হবে।  

..ঈমানের মেহনতের জন্য আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন। তাই আমাদেরকে সর্বাবস্থায় ঈমানের মেহনত করতে হবে।  

আমাদের ঈমান তো সাহাবায়ে কেরামের কোরবানির মাধ্যমে এসেছে। সাহাবায়ে কেরাম মদিনায় আসার পর মসজিদে নববীতে রাসূল ও সাহাবায়ে কেরাম জমা হতেন। একত্র হয়ে তারা ঈমানের আলোচনা করতেন।  

মসজিদ ইবাদতের জায়গা। ঈমানের আলোচনার জায়গা। হজরত উমর (রা.) গাশত করতেন। তিনি গাশত করে করে মানুষকে মসজিদমুখি করতেন। তাদেরকে ঈমানের কথা শুনাতেন। এর ফলে তাদের ঈমান মজবুত হতো।

সাহাবায়ে কেরাম বলতেন, জান্না- জাহান্নাম না দেখার পরও আমাদের যে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে, জান্নাত-জাহান্নামকে যদি আমাদের সামনে আনা হয় তার পরেও আমাদের ঈমান আগের চেয়ে একটুও বাড়বে না। একটু চিন্তা করে দেখা দরকার, কেমন ছিল তাদের ঈমান?

সাহাবায়ে কেরামের মনে আশা ও ভয় উভয়টি বিদ্যমান ছিলো। হজরত উমর (রা.) বলতেন, আল্লাহ যদি আমাকে মাফ না করেন তাহলে আমার উপায় নেই। অথচ রাসূল (সা.) তার সম্পর্কে বলেছেন, আমার পর যদি কেউ নবী হতো তাহলে উমরকে নবী বানানো হতো। তিনি আরও বলেন, উমর যে রাস্তা দিয়ে চলে সে রাস্তায় শয়তান চলে না।

হজরত উমর (রা.) এর পরও যদি আল্লাহর ক্ষমার মুখাপেক্ষি হন, তাহলে আমরা কী করে আশা করে বসি এমনি এমনি ক্ষমা লাভের?

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।