প্রযুক্তির বদৌলতে আমরা অনেক কিছু পেয়েছি। সেই সঙ্গে হারিয়েছিও অনেক মূল্যবান কিছু।
স্বার্থবিহীন উদার ও লৌকিকতামুক্ত অকৃত্রিম বিনয় এবং সবার সঙ্গে মার্জিত ব্যবহার ইসলামের প্রথম শিক্ষা। কারণ এমন গুণাবলী দিয়েই তো আল্লাহপাক প্রথমে তার পাঠানো নবীদের সুশোভিত করেছেন। তারপর দায়িত্ব দিয়েছেন নবুওয়তের। তারপর মানুষকে কাছে টানার জন্য নবীদের হতে বলেছেন সরল ও সহজ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেছেন, আপনি আপনার অনুসারী মুমিনদের জন্য নিজেকে কোমল করে রাখুন। -সূরা শুয়ারা: ২১৫
আরেক আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘আপনি যদি কঠোর হতেন তবে মানুষ আপনার কাছ থেকে দূরে সরে থাকত। আপনি তাদের ক্ষমা করতে থাকুন, তাদের জন্য মাগফিরাত প্রার্থনা করুন এবং তাদের নিয়ে পরামর্শ করুন। -সূরা আলে ইমরান: ১৫৯
স্বয়ং আল্লাহ্পাক তার প্রিয় মানুষটিকে শেখাচ্ছেন কীভাবে সমাজে সবার সঙ্গে তিনি মেলামেশা করবেন। সর্বময় গুণের অধিকারী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শেখানোর মাধ্যমে বরং তিনি আমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন। বিনয়ের আসল অর্থ সত্যকে দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নেওয়া- হোক তা যে কারও কাছ থেকে। এর আর একটি অর্থ নিজেকে অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মনে না করা।
তিরমিজি শরীফে বর্ণিত আছে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, মৃত্যুকালে যে মুসলমান অহঙ্কার, উগ্রতা, বাড়াবাড়ি ও ঋণ থেকে মুক্ত সে জান্নাতে যাবে।
ধরাধামের বুকে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ ছিলেন আমাদের নবী। এমন সম্মানিত মানুষ হয়েও কি অসাধারণ বিনয় ও ঔদার্যের মায়াজালে তিনি পথ ভোলা মানুষকে কাছে টেনেছেন। মদিনায় কারও অসুস্থতা কিংবা মৃত্যুর সংবাদ শুনলে ছুটে যেতেন। সান্তনা দিতেন। নিজের হাতে ঘরের কাজকর্ম করতেন। স্ত্রীদের সংসারে সাহায্য করতেন। তার কোমলতার কথা লিখে শেষ করা যাবে না।
আমাদের সমাজে বাড়ছে অস্থিরতা। কারও জন্য আমরা ধৈর্য ধরতে রাজি নই। অথচ আত্মীয়-অনাত্মীয় প্রতিবেশীর সঙ্গে সদাচরণ ও সৌহার্দ প্রতিষ্ঠা পবিত্র কোরআনের নির্দেশ। সহিষ্ণুতা সম্প্রীতি ও মানবতার ধর্ম ইসলামে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।
বিশ্ব মানবতার মুক্তির কল্যাণকামী ধর্ম বা জীবন ব্যবস্থা ইসলাম দিয়েছে অনেক মর্যাদা ও অধিকার। যার নজীর অন্য ধর্ম ও মানব রচিত মতবাদে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
এমএইউ/