আলোচিত মসজিদটি শুক্রবার (০৩ মার্চ) জুমার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম মজলিসে দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমুদুল হাসান। তিনি মসজিদের উদ্বোধনী জুমার নামাজের ইমামতি করবেন।
মসজিদের উদ্বোধন উপলক্ষে ইজতেমা ও ওয়াজ মাহফিলে আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, ইজতেমা ও ওয়াজ মাহফিলে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটবে।
ময়মনসিংহ জেলার চরখরিচা গ্রামে নির্মিত হচ্ছে আধুনিক এই মসজিদটি। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য সংযোজন। সৌদি আরবের মসজিদে নববীর আদলে নির্মিত মসজিদটির বিশেষত্ব হচ্ছে- বৈদ্যুতিক গম্বুজ সংযোজন। সুইচ অন করলেই সরে যাবে এর গম্বুজ এবং মসজিদের ভেতর থেকে দেখা যাবে পুরো আকাশ।
মনোরম, দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদের নাম রাখা হয়েছে মদিনা মসজিদ। এটি ময়মনসিংহ জেলার চর সিরতা ইউনিয়নের চর খরিচা গ্রামের সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশে নির্মিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে মসজিদের নির্মাণ কাজ ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
এলাকাবাসীর ধারণা সৌন্দর্য ও নান্দনিকতায় মসজিদটি ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নেবে সহজেই।
২০১১ সালে এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৪ তলা বিশিষ্ট মসজিদের ভেতরে কাতারের সংখ্যা ১৯টি। প্রতি কাতারে ১১০ জন মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারবে।
মসজিদে পাঁচটি গম্বুজ থাকবে। চারটি স্থির এবং একটি বৈদ্যুতিক গম্বুজ। উঁচু মিনার থাকবে দু’টি। এই মিনারের উচ্চতা চার তলার ওপর থেকে ১৬০ ফুট করে। মসজিদটির কারুকাজে ব্যবহৃত হচ্ছে মারবেল পাথর আর কাঠ। কাঠগুলো আনা হয়েছে মিয়ানমার থেকে।
মসজিদে মুসল্লিদের উঠানামার জন্য একটি চলন্ত সিঁড়িসহ মোট পাঁচটি সিঁড়ি স্থাপন করা হবে। থাকবে মসজিদের ছোটবড় মোট ছয়টি দরজা।
বিশাল আয়তনের দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২শ’ কোটি টাকা।
মসজিদ নির্মাণ ও উদ্বোধন প্রসঙ্গে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মসজিদের পুরো নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও নামাজের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হবে মসজিদটি। শুক্রবার মসজিদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরাম উপস্থিত থাকবেন। আর মসজিদের উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত ইজতেমা ও ওয়াজ মাহফিলে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটবে। তাই ৬০ হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
অনন্য দৃষ্টিনন্দন এই মসজিদের উদ্যোক্তা মজলিসে দাওয়াতুল হক বাংলাদেশের আমির, জামিয়া মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম মুহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
জন্মস্থান চর খরিচার নিজবাড়িতে তিনি মসজিদটি গড়ে তুলছেন। মসজিদের পাশে নিজ নামে একটি বড় কওমি মাদরাসাও প্রতিষ্ঠা করেছেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান। ইতোমধ্যেই মাদরাসাটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে।
মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, মসজিদ মহান রাব্বুল আলামিনের ঘর। আমরা দিনে পাঁচবার তার ঘরে যাই। তার কাছে নত হয়ে ইবাদতে মশগুল থাকি। দুনিয়াতে আমরা আমাদের ঘরগুলোকে সুন্দর করতে ব্যস্ত। অথচ আল্লাহর ঘরকে সুন্দর করার দিকে মনযোগী হই না। এটা ঠিক না। প্রত্যেক মানুষের আল্লাহর প্রতি অপরিসীস প্রেম ও ভালোবাসা থাকতে হবে। সেই মহব্বত ও ভালোবাসা থেকে আল্লাহর ঘর নির্মাণের উদ্যোগ আল্লাহ আমার মাধ্যমে শুরু করিয়েছেন। এর পেছনে অগণিত মুসলমান ধর্মপ্রাণ মানুষের শ্রম ও ঘাম রয়েছে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
এমএইউ/