ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের দিনকাল

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের দিনকাল শ্রীলঙ্কার মুসলমানরা বেশ ভালোই আছেন- নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে

শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। প্রধান শহরের নাম কলম্বো। প্রায় ২ কোটি জনসংখ্যার দেশটি প্রাচীনকাল থেকেই বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। সম্ভবত শ্রীলঙ্কাই হচ্ছে একমাত্র অমুসলিম দেশ, যেখানে টেলিভিশন এবং রেডিওতে ৫ ওয়াক্ত নামাজের আজান সম্প্রচার করা হয়।

নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সংবলিত সমুদ্রসৈকত, ভূদৃশ্য তদুপরী সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শ্রীলঙ্কাকে সারা পৃথিবীর পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

সিংহলি সম্প্রদায়রা শ্রীলঙ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী।

শ্রীলঙ্কার মুসলমানরা মুর নামে পরিচিত। তারা দেশটিতে তৃতীয় বৃহত্তম জাতিগত সম্প্রদায়। দেশটির মোট জনসংখ্যার দশ শতাংশ মুসলমান।  

বর্তমানে শ্রীলঙ্কায় ১৫শ’টি মসজিদ, ১০০টি কোরআন শিক্ষাকেন্দ্র এবং ২০০টির মতো মাদরাসা ও স্বতন্ত্র ইসলাম শিক্ষাকেন্দ্র রয়েছে। যেগুলো ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত।

শ্রীলঙ্কার মুসলিম জনগোষ্ঠী দেশটির গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। দেশটিতে রয়েছে ঐতিহাসিক ও প্রাচীন অনেক মসজিদ। তন্মধ্যে কুরগালায় দশম শতাব্দীতে নির্মিত মসজিদটি উল্লেখযোগ্য। আর শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চল ডাম্বুলার সবচেয়ে বড় মসজিদের বয়স ৬০ বছরের বেশি।  

কেটচিমালাই মসজিদটি শ্রীলঙ্কার বেরুওয়ালায় অবস্থিত। সাদা, লম্বা এবং উচুঁ মিনারের এ মসজিদটির চারদিক নারিকেল গাছ দিয়ে বেষ্টিত। শতাব্দী প্রাচীন দৃষ্টি নন্দন মসজিদটি দেখতে পর্যটকরা ভীড় করেন। প্রাচীন আরবি স্থাপত্য রীতিতে নির্মিত মসজিদটি দূর থেকে দেখতে অনেকটা ছবির মতো মনে হয়।  

শ্রীলঙ্কায় দাওয়াতে তাবলিগের কাজ চালু আছে। তাবলিগের মারকাজ গ্র্যান্ডপাস রোডের মসজিদটিও বেশ বিখ্যাত।

২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার সর্ববৃহৎ মসজিদের উদ্বোধন করা হয়েছে। ওই মসজিদে এক সঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের মানার শহরে ওই মসজিদটি অবস্থিত।

রাজনীতিতে সংখ্যালঘু মুসলমানদের রাজনৈতিক দল শ্রীলঙ্কান মুসলিম কংগ্রেস বেশ প্রভাবশালী। অন্য রাজনৈতিক দলেও মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ রয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় দেওবন্দের অনুসরণে বেশ কিছু মাদরাসা রয়েছে। এখানকার মুসলমানদের প্রায় সিংহভাগই তাবলিগের কাজের সঙ্গে যুক্ত। বাকীরাও বেশ ধর্ম পরায়ণ। শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের মাঝে সুফিবাদের প্রভাব বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়।

প্রতি বছর প্রায় ৩ হাজার মুসলমান শ্রীলঙ্কা থেকে হজ পালন করেন। যদিও শ্রীলঙ্কান মুসলমানরা সৌদি আরবের কাছে হজের কোটা বাড়ানোর আবেদন করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই।  

গৃহযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে শ্রীলঙ্কার নতুন সংবিধানে সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণে বিশেষ বিধান যুক্ত করা হয়েছে।  

শ্রীলঙ্কার মুসলমানদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে প্রচুর সামাজিক কাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়। যা তাদের দিয়েছে আলাদা পরিচিত। সব মিলিয়ে বলা চলে, সেখানকার মুসলমানরা বেশ ভালোই আছেন- নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।