গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী ও ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে রোববার (০২ এপ্রিল) এমন কথা বলেছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান জসিম উদ্দিন রাহমানির খুৎবায় অনুপ্রাণিত হয়েছেন আসামিরা- বিচারিক আদালতে এমন জবানবন্দি দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট আরও বলেন, ‘তিনি এমন কোনো জ্ঞান দেবেন না, যেটি প্রচলিত আইন বর্হিভূত। কেউ ইসলাম বা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) অথবা অন্য কোনো ধর্ম সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে বা ফেসবুকে কোনো স্টেটমেন্ট দিলে দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। সেজন্য আইন নিজের হাতে নেওয়ার অধিকার কারও নেই’।
পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, ‘সাক্ষ্যে শরিয়া আইনের বিষয়টি এসেছে। দেশে তা প্রযোজ্য কি-না, এ বিষয়ে সর্বোচ্চ আদালত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সাক্ষ্য, দলিলাদি ও আসামিপক্ষের যুক্তি থেকে দেখা যায়, রাহমানি ছাড়া আসামিরা সবাই মেরিটরিয়াস। তারা কেন বিপথে গেলেন? এ মামলার মধ্যে আমরা তা খুঁজে পাইনি। তবে বিপথে যাওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে। কেউ কেউ অভিভাবকদের দায়ী করেন’।
পর্যবক্ষণের পর ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যার দায়ে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র রেদোয়ানুল আজাদ রানা ও ফয়সাল বিন নাঈম ওরফে দীপের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
বিচারিক আদালতের পুরো রায়ের সঙ্গেই একমত হয়েছেন উচ্চ আদালত। ফলে মোহাম্মদ মাকসুদুল হাসান অনিকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এহসান রেজা রুম্মান, নাঈম ইরাদ ও নাফিজ ইমতিয়াজের দশ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড বহাল রয়েছে। একইসঙ্গে বহাল রয়েছে প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাস করে কারাদণ্ডের আদেশও।
এছাড়া আনসারুল্লা বাংলা টিমের প্রধান মুফতি জসীমউদ্দিন রাহমানির ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদের ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ডও বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২,২০১৭
ইএস/এএসআর