ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানিয়েছে, এসব মসজিদ নির্মাণে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা থাকবে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদ এর অনুদান।
তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হবে। এ-ক্যাটাগরিতে ৬৮টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মজজিদে থাকবে লিফট। এগুলো নির্মাণ হবে ৬৪টি জেলা শহরে এবং চারটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। এগুলোর আয়তন হবে দুই লাখ ৮১ হাজার ৫৮৪ বর্গমিটার। এক লাখ ৬৪ হাজার ৭৪২ বর্গমিটার আয়তনের বি-ক্যাটারির মসজিদ হবে ৪৭৬টি। আর ৬১ হাজার ২৫ বর্গমিটার আয়তনের সি ক্যাটাগরির মসজিদ হবে ১৬টি।
লাইব্রেরি সুবিধাও থাকবে মডেল মসজিদগুলোতে। প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক এক সঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাত করাসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।
মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে। আরো থাকবে ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতিবছর ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। পবিত্র হজ পালনের জন্য করা হবে ৫০ শতাংশ ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা।
এসব মসজিদে আরো থাকবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মৃতকে গোসল করানোর কক্ষ। উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোতে নিচ তলা ফাঁকা থাকবে।
ক’বছর আগেই সৌদি অনুদানে এসব মসজিদ নির্মাণের কথা ছিলো। কিন্তু অনুদান না পাওয়ায় দীর্ঘদিন প্রকল্পটি ঝুলে ছিলো। গত বছরের জুনে (৩-৭ জুন) সৌদি আরব সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সফরে দ্বিপক্ষীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন-সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়। সর্বশেষ বুধবার (৫ এপ্রিল) ভোরে বাংলাদেশে আসা মক্কা ও মদিনার দুই ইমামসহ ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শুরু থেকেই ৫৬০টি মডেল মসজিদ প্রকল্প প্রণয়নে দিনরাত পরিশ্রম করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) লুৎফর রহমান সরকারসহ প্রায় এক ডজন কর্মকর্তা।
প্রকল্প প্রসঙ্গে লুৎফর রহমান সরকার বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশে এই প্রকল্পটি আইকন হিসেবে থাকবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল বাংলানিউজকে বলেন, ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণে সৌদি বাদশা ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা নির্মাণ খরচ দেবেন। আমাদের সরকার ১ হাজার ২৯ কোটি দেবেন ভূমি অধিগ্রহণের জন্য। সৌদি বাদশার অনুদানের বিষয়টি অনেকটাই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। সৌদির দুই ইমাম বাংলাদেশে এসেছেন অনুদানের বিষয়টা আরও এগিয়ে যাবে। আমরা আশা করছি আগামী একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি) প্রকল্পটি সভায় ‘ইস্টাবিলিসিং ৫৬০ মডেল মস্ক অ্যান্ড ইসলামিক কালচার সেন্টার ইন জেলা অ্যান্ড উপজেলা অব বাংলাদেশ’ প্রকল্প উত্থাপন করবো। আশা করছি দ্রুত সময়েই প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এমআইএস/জেডএম