রমজানের গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনা করতে যেয়ে বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি) জামে মসজিদের খতিব আলহাজ হাফেজ মাওলানা আবদুল কুদ্দুস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কোরআনে কারিমে রমজান মাসে মানুষের জন্য করণীয় এবং বর্জনীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা আছে।
হজরত রাসূলে কারিম (সা.) রমজান মাসের আগমনকে সামনে রেখে ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কাছে একটি মাস এসেছে। এ মাস হলো- অত্যন্ত বরকতময় মাস। যে মাসের ইবাদত অন্য মাসের তুলনায় বেশি ফজিলতময়।
মাওলানা আবদুল কুদ্দুস আরও বলেন, রমজান মাসে দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো অনেক সওয়াবের কাজ। কারণ রমজান মাসকে বলা হয় সহানু্ভূতির মাস। মানুষ তার অধীনস্তদের প্রতি, গরীবের প্রতি, দরিদ্রদের প্রতি, ব্যবসায়ী ক্রেতার প্রতি অর্থাৎ প্রত্যেক জায়গায় একজন আরেকজনের প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে উদারতার এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, রোজাকে পরিপূর্ণতায় পৌঁছানোর জন্য সকল পাপের কাজ পরিহার করা, মিথ্যা না বলা, গীবত থেকে বিরত থাকা দরকার। সেই সঙ্গে চোখের পাপ, কানের পাপ, হাতের পাপ থেকে শুরু করে সব ধরনের গোনাহ থেকে বেঁচে থেকে নিজেকে সুন্দর একজন মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার অপূর্ব সুযোগ এই রমজান।
রমজানের দান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) বলেন, নবী করিম (সা.) সারা বছরই দান করতেন। কিন্তু রমজান মাসে গরীবের প্রতি, অসহায় মানুষের প্রতি দানের পরিমাণ বেড়ে যেত। তার মতো এত বেশি দান আর কেউ করতেন না।
আমরা যারা রাসূলে কারিমকে (সা.) দেখি নাই। আমরা রমজান মাস পেয়েছি। এখন আমরা যদি রমজান মাসে গরীব-মিসকিনদের ইফতার সেহরিতে অংশগ্রহণ করাতে পারি, তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়াতে পারি- তাহলে আশা করা যায়, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)- কিয়ামতের দিন আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন।
রমজান মাসে রোজাদারের করণীয় প্রসঙ্গে খুবির খতিব বলেন, রমজান মাসে বেশি করে কোরআন পাঠ করা। রাসূলে কারিম (সা.) বলেছেন, উম্মত রমজান মাসে যে কাজগুলো বেশি বেশি করবে এর অন্যতম হলো- কালিমা তায়্যিবা লা ইলাহা ইল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা.) পাঠ করা, ইসতেগফার বেশি বেশি পড়া, গোনাহ থেকে তওবা করা এবং আল্লাহর নিকট জান্নাতের জন্য প্রার্থনা করা আর জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।
গরীব-মিসকিনদের ইফতারি করানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রমজান মাসে অনেক ইফতারের অনুষ্ঠান হয়। যদি আমরা সত্যিকারে আল্লাহকে খুশি করার জন্য এমন আয়োজন করি, তাহলে ওই ইফতার আয়োজনে যেন প্রকৃত অভাবী কিংবা গরীব মানুষ থাকে। তাহলে ওই আয়োজন সফল হবে এটা আল্লাহ পছন্দ করেন।
দেখুন, সত্যিকার অর্থে রমজান মাস হলো- নাজাত, রহমত ও মাগফিরাতের মাস। সুতরাং রমজান মাসকে সেভাবে পালন করলে জান্নাতি বান্দা হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় সেওয়া সম্ভব। আমাদের মনে রাখতে হবে, এই কথাগুলো কোরআন-হাদিসের মধ্যে আছে। সুতরাং আমরা যেন আমল করে এবারের রোজার মাসকে সঠিকভাবে কাটিয়ে আগামী ১১টি মাস সুন্দরভাবে চলার এক আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারি সেই চেষ্টা করতে হবে।
এভাবে যদি কেউ রমজান অতিবাহিত করে, তাহলে আশা করা যায় নবীজীর হাদিস অনুযায়ী সে সফলকাম। অাল্লাহতায়ালা আমাদের সত্যিকারভাবে রমজানের রোজা পালন করার তওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৪০৫ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০১৭
এমআরএম/এমএইউ