ঢাকা, বুধবার, ৫ ভাদ্র ১৪৩২, ২০ আগস্ট ২০২৫, ২৫ সফর ১৪৪৭

ইসলাম

সারা বছরই পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে মালয়েশিয়া

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৩, জুন ৯, ২০১৭
সারা বছরই পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে মালয়েশিয়া সারা বছরই পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়া একটি মুসলিম মডারেট উন্নত আধুনিক দেশ। ৫৪ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের ভূমিপুত্র হলো- ‘মালায়ু’ জাতি।

মালয়েশিয়ার সংবিধানমতে মালায়ূরা দেশটির মালিক। এ ছাড়া চাইনিজ (মালয়েশিয়ান চাইনিজ), ইন্ডিয়ান (মালয়েশিয়ান ইন্ডিয়ান) সহ অন্যান্য জাতি গোষ্ঠীরাও তাদের নিজ নিজ ধর্ম, নিজস্ব সংস্কৃতি স্বাধীনভাবে পালন করার অধিকার রাখেন।

 

মালয়েশিয়ার দীর্ঘ প্রবাস জীবনে দেখছি, এখানে যার যার ধর্ম তার মতো পালন করতে পারেন। ধর্ম নিয়ে তেমন কোনো বিতর্ক নেই। অন্যের ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ বা বিরূপ মন্তব্যও নেই।

এ দেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত রাজা (আগং) সবসময় মুসলমান থেকে হতে হবে- এটা সংবিধানে উল্লেখ আছে। সেই সঙ্গে উল্লেখ করা অাছে, প্রদেশগুলোর সুলতানরাও হবেন মুসলিম। এমনকি সরকারের প্রধানমন্ত্রীও হবেন মুসলমান।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এক বক্তব্যে বলেছেন, সরকারি বড় বড় প্রকল্পগুলো কাজ পেতে ভূমিপুত্র ঠিকাদাররা অগ্রাধিকার পাবেন।

দেশটির শহরে নানা জাতের মানুষের চলাফেরা দেখে বুঝা মুশকিল- এরা ভেতরে ভেতরে ইসলামি আচার-আচরণ প্রয়োগে কতটা কঠোর।

মালয়েশিয়ার সরকারি অফিসে চাকরিজীবীদের সংখ্যা পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা কম নয়। বরং দুপুরে লাঞ্চের বিরতিতে কোনো অফিসের সামনে দাঁড়ালে দেখা যায়, ভেতর থেকে পুরুষের চেয়ে নারীই বেশি বের হচ্ছে।

সবার পোশাকই মালায় পোশাক। ‘মালায়’ বা ‘মালায়ু’ মানেই মুসলিম। মালায়ু হওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে- মুসলিম হতে হবে। বলা চলে, মালয়েশিয়ার সকল মুসলিম মালায়ু নয়, তবে সকল মালায়ুই মুসলিম এবং মালায়ু মুসলিমরাই ভূমিপুত্র।

চাকরিজীবী নারীদের কথা বলছিলাম। হ্যাঁ, এসব নারীদের পরনে অবশ্যই মুসলিম পোশাক। শালীনতাপূর্ণ পোশাক ও স্কার্ফ মাথায় অফিসের ছোট থেকে বড় বড় পদে দায়িত্বপালন করছেন বেশ সাবলীলভাবে।

সরকারি-বেসরকারি প্রত্যেক অফিসেই নামাজের স্থান রয়েছে। নামাজের সময় হলে নারী-পুরুষরা যার যার সুবিধামতো সময়ে নামাজ আদায় করে নেন।  

মালয়েশিয়ার সাপ্তাহিক ছুটি রোববার। শুক্রবার কর্ম দিবস হলেও জুমার নামাজের জন্য দুপুরে এক ঘণ্টা বেশি বিরতি দেওয়া হয়।  

মুসলিম বিশ্বের সুবিধা-অসুবিধা নিয়েও মালয়েশিয়ান মুসলিমরা সদা জাগ্রত। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়, মায়ানমারের রাখাইন ও আরাকান রাজ্যে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত হওয়া বিক্ষোভ সমাবেশে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও উপ-প্রধানমন্ত্রীসহ শীর্ষ রাজনীতিকদের উপস্থিতি এবং মায়ানমারের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য।  

এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও মিসরসহ মুসলিম যে কোনো যুদ্ধবিধস্ত দেশ কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগগ্রস্ত মুসলিম দেশের জন্যে মালয়েশিয়ায় জাতীয়ভাবে সব মসজিদে জুমার দিন দোয়া করা হয়।

জুমার খুতবায় আইএস বা জঙ্গিবিরোধী বক্তব্যও দেন ইমামরা। দেশটির মসজিদে শুক্রবারের খুতবায় আধুনিক সব বিষয়াদি স্থান পায়। থাকে সমকালীন বিশ্ব নিয়ে বক্তব্য।  

মালয়েশিয়ার রাজনীতিবিদরা ইসলাম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন। মালয়েশিয়ায় জাতীয় পর্যায়ে ও মুসলিম সুলতান নিয়ন্ত্রিত নয়টি প্রদেশে ইসলামি নিয়মনীতিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়।

মালয়েশিয়ায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভিড় করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গড়ে প্রতি বছর পঁচিশ মিলিয়নের বেশি পর্যটক আসেন দেশটিতে। মুসলিম বিশ্বের পর্যটকদের জন্য তো অন্যতম এক আকর্ষণীয় দেশ মালয়েশিয়া। তাই তো দেখা যায়, সারা বছরই আরব পর্যটকের পদচারণায় মুখরিত থাকে মালয়েশিয়া।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৩ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।