ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

ভালো নিয়তে করা বৈধ কাজও ইবাদত হিসেবে গণ্য

আতাউর রহমান খসরু, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০১৭
ভালো নিয়তে করা বৈধ কাজও ইবাদত হিসেবে গণ্য ভালো নিয়তে করা বৈধ কাজও ইবাদত হিসেবে গণ্য

মুসলমানের জীবনব্যবস্থার সঙ্গে ইসলামের দূরত্বই মুসলিম সমাজের অধপতনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. ফয়সাল গাজাভি। 

রোজার পর প্রথম জুমার খুতবায় তিনি একথা বলেন।  
 
ইমামুল হারাম বলেন, ভালো নিয়তে করা বৈধ কাজও ইবাদত হিসেবে গণ্য হয়।

কেউ যদি কল্যাণের নিয়তে কোনো বৈধ কাজ করে, তবে আল্লাহতায়ালা তাকে পুণ্যের প্রতিদান দেবেন।

আল্লাহতায়ালা মানুষ ও জিন জাতিকে তার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু ইসলামে ইবাদতের অর্থ শুধু নামাজ, জাকাত, রোজা ও হজ নয়। বরং শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-এর মতে ইবাদত একটি ব্যাপক শব্দ। এর দ্বারা উদ্দেশ্য এমন সব কথা ও কাজ যা মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেন এবং যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। এ হিসেবে সত্য কথা, সততা, পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ, আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা, অঙ্গীকার পূরণ করা, ভালো কাজে উৎসাহ দেওয়া, মন্দ কাজ থেকে নিরুৎসাহিত করা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরা, এতিম-অসহায়-অধীনস্থ-কর্মচারীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, জিকির ও তেলাওয়াত সবকিছুই ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে।

আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর ভালোবাসা, খোদাভীতি, নিষ্ঠা, ধৈর্য্য, কৃতজ্ঞতা, ভাগ্য, সন্তুষ্টি, আল্লাহর ওপর আস্থা, তার অনুগ্রহের আশা রাখা, পরকালীন শাস্তি ভয় পাওয়া সবকিছুই ইবাদতের সংজ্ঞায় পড়ে।
 
তিনি বলেন, মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য ইবাদত। অথচ মানুষ ইবাদতের অর্থ নির্ণয় করতে ভুল করে। কতিপয় ফরজের মধ্যে ইবাদত সীমাবদ্ধ করে ফেলে। আর ভুল ধারণা থেকে ইবাদত করার মানসিকতা হারিয়ে ফেলে।  

তিনি আরও বলেন, ইবাদত কবুল হওয়ার কিছু নিদর্শন আছে। ইবাদত কবুলের অন্যতম নিদর্শন ইবাদতের পূর্বে ও পরের অবস্থায় পার্থক্য হওয়া। ইবাদত করার পর বান্দার অবস্থা যদি পূর্বের তুলনায় ভালো হয়, তবে বুঝতে হবে ইবাদত কবুল হয়েছে।  

শায়খ ফয়সাল বলেন, ইবাদত বান্দার আচার-আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে। আল্লাহতায়ালা বলেছেন, নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। যদি কোনো ব্যক্তি নামাজ পরার পর মন্দ কাজ ও অশ্লীলতা পরিহার করে তবে বুঝতে হবে তার নামাজ কবুল হয়েছে। একইভাবে রমজানের পর কারও যদি আল্লাহর ইবাদত করতে ভালো লাগে এবং অবাধ্য হতে খারাপ লাগে তাহলে বুঝতে হবে তার রোজা কবুল হয়েছে।

ইবাদত কবুলের শর্ত হলো হজরত রাসূল (সা.)-এর সুন্নত অনুসারে তা করা এবং ইবাদতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। যদি তাতে কষ্ট হয় এবং কোনো সংকটে পড়তে হয়- তাও। কেননা আল্লাহতায়ালা ইবাদতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা পছন্দ করেন।

-জুমায় প্রদত্ত ভাষণের আরবি সংক্ষিপ্ত সংস্করণের অনুবাদ

বাংলাদেশ সময়: ০৫৪১ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০১৭ 
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।