একজন ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, তারা বিকল্প নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। স্থায়ী মেটাল ডিটেক্টরের পরিবর্তে এখন থেকে সেখানে হাতে বহনযোগ্য ডিটেক্টর ব্যবহার করা হবে।
জেরুজালেম পুলিশ প্রধান ইয়োরাম হেলেভি ও মেয়র নির বেরেকাট এ সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন।
গত শুক্রবার থেকে দুই পক্ষের সহিংসতায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি ও তিনজন ইসরাইলি নিহত হয়।
এ নিয়ে ক্ষমতাধর দেশগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ও জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার জরুরি বৈঠক ডেকেছে।
ঘটনার সূত্রপাত্র জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে মেটাল ডিটেক্টর বসানো ও ৫০ বছরের কম বয়সী কেউ আল আকসা মসজিদে ঢুকতে পারবে না- এমন নিষেধাজ্ঞার সূত্র ধরে।
ইসরাইল বলছে, ওই এলাকায় ফিলিস্তিনিদের হামলায় দু’জন ইসরাইলি পুলিশ নিহত হওয়ার পর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তারা এই মেটাল ডিটেক্টর বসিয়েছে।
কিন্তু ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস মনে করেন, নিরাপত্তা-টিরাপত্তা কিছু না, এটা স্রেফ ইসরাইলিদের নিয়ন্ত্রণ আরোপের একটি অপকৌশল। ফলে তিনি ইসরাইলের সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মাহমুদ আব্বাস বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থা বাতিল করা না হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত সব পর্যায়ে ইসরাইলিদের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ আমরা বিচ্ছিন্ন করছি।
ইলেকট্রনিক গেট বসানো নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে যে উত্তেজনা দানা বেঁধেছিল তার চূড়ান্ত রূপ পায় শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে। ইসরাইলি সৈন্যদের গুলিতে পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অপরদিকে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন তিনজন ইসরাইলি।
সার্বিক পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য শান্তি স্থাপনের জন্য ক্ষমতাধর দেশ ও সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে গঠিত কোয়ারটেট গ্রুপ উদ্বেগ জানানোর পর ইসরাইল ইঙ্গিত দিচ্ছে তারা এখন নিরাপত্তা বিধানের ভিন্ন কোনো পদ্ধতির কথা বিবেচনা করছেন।
বিবিসি আরবি বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ইয়োয়াভ মোরদেচাই বলেন, আমরা আশা করি চলমান সমস্যার প্রেক্ষাপটে নিরাপত্তা বিধানের জন্য জর্ডান এবং অন্যান্য আরব জাতিগুলো ভিন্ন কোনো সমাধান নিয়ে আসবে। যে কোনো সমাধান সে হোক ইলেকট্রনিক, সাইবার কিংবা আধুনিক প্রযুক্তিগত অন্য কোনো কিছু। ইসরাইল সমাধানের জন্য প্রস্তুত।
আমাদের নিরাপত্তা সমাধান দরকার, ধর্মীয় কিংবা রাজনৈতিক সমাধান নয়।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যালান জনস্টন বলছেন, এটা ইসরাইলের পক্ষ থেকে সুর নরম করার একটি লক্ষণ এবং চলমান ইস্যুতে এই প্রথম তাদের নরম হতে দেখা গেল।
আল আকসা পরিস্থিতি নিয়ে আগামীকাল সোমবার জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি জরুরি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জুনের গোড়ার দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তেল আবিব সফরে গিয়ে ইসরাইলি সরকারের প্রতি যে নিঃশর্ত সমর্থন ঘোষণা করেছেন, তার ফলে দখলদার সরকারের ঔদ্ধত্য অনেক বেড়ে গেছে। আর এসব তারই বহিঃপ্রকাশ।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, জুলাই ২৩, ২০১৭
এমএইউ/