বিমান-এজেন্সি সমন্বয়হীনতা, গ্যাঁড়াকলে হজযাত্রীরা
রোববার (০৬ আগস্ট) সচিবালয়ে বাংলানিউজকে এসব কথা জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত এক লাখ সাত হাজার ৪০ জন হজযাত্রীর পাসপোর্ট জমা নিয়েছে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস।
ধর্মসচিব বলেন, ভিসা সমস্যায় যেসব ফ্লাইট বাতিল হয়েছে ওইসব ফ্লাইটের যাত্রীরাও সময় মতো পৌঁছাতে পারবেন। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের সে প্রস্তুতি নেওয়া আছে। এয়ারলাইন্স দুটি এরই মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৪১ হাজার হজযাত্রী পরিবহন করেছে।
তাদের প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে। তাই দুই একদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে এবং হজে গমনেচ্ছু একজনেরও হজে যাওয়া বাকি থাকবে না।
এদিকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বেসরকারি হজ এজেন্সিগুলোর কারসাজিতেই যাত্রীসংকট তৈরি হয়েছে। তাদের চক্রান্তেই বিমানের একটার পর একটা ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। এতে ইমেজের সঙ্গে সঙ্গে আর্থিকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়েছে বিমান।
সূত্রটি আরো জানায়, এতে ভয়ের কিছু নেই। যেসব ফ্লাইট বাতিল হয়েছে তারও চেয়ে বেশি স্লট কেনা আছে বিমানের। এতে সময়মতো অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনা করে সব হজযাত্রী পরিবহন সম্ভব। তবে এতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে হতে পারে বিমানকে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) চলমান সংকটের জন্য হজ এজেন্সিগুলোকে দায়ী করেছিলেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি বলেন, আসলে ব্যাপারটা হলো এজেন্সি (এজেন্সির গাফিলতি)। এজেন্সি যদি বিলম্ব না করতো এবং আগেই ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতো তাহলে এতো সমস্যা হতো না।
ধর্মমন্ত্রী সেদিন সাংবাদিকদের জানান, সৌদি সরকারের কোটা অনুযায়ী এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর হজে যাওয়ার কথা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৯৭ হাজার ১৪০ জন হজযাত্রীর জন্য সৌদি ই-হজ সিস্টেমে ভিসার আবেদন করে এজেন্সিগুলো। যদিও সৌদি দূতাবাস দিয়েছে ৫২ হাজার ৬০০ জনের।
মন্ত্রণালয় বলছে, এই ভিসা জটিলতার সঙ্গে সৌদি আরবে মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি এবং টানা দ্বিতীয়বারের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ভিসা ফি বৃদ্ধির ব্যাপারটা জড়িত। এ দুই কারণেই এবারের হজযাত্রায় জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে হজ ফ্লাইটের সূচিতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
বিমান পরিবহনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বুধবার (২ আগস্ট) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন,সমস্যাগুলো দুই-এক দিনের মধ্যে মেটাতে না পারলে এবার বড় ধরনের ঝামেলা তৈরি হবে।
তবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে ধর্মমন্ত্রী বলেন, সবাইকে হজে পাঠাবো। ভিসা জটিলতা নিয়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হচ্ছে। সমস্যা কেটে যাবে। ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে সে মোতাবেক গতি বেড়েছে সৌদি দূতাবাসে।
এখন প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজারের মতো হজযাত্রীকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৭
আরএম/জেএম