ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

মক্কার দ্বিতীয় বৃহৎ মসজিদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
মক্কার দ্বিতীয় বৃহৎ মসজিদ মসজিদে আল রাজি। ছবি: মুফতি এনায়েতুল্লাহ

মক্কা নগরী থেকে: মক্কার মসজিদে হারামের পর দ্বিতীয় বৃহৎ মসজিদটি হলো- মসজিদে আল রাজি। যা আল রাজি জামে মসজিদ নামে বেশি প্রসিদ্ধ। তবে মসজিদটির আসল নাম-আয়শা বিনতে সোলাইমান বিন মনসুর জামে মসজিদ।

সৌদি আরবের বিখ্যাত ধনকুবের শেখ সোলাইমান বিন আবদুল আজিজ আল রাজি মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা। এটি মক্কার তায়েফ রোডের পাশে আন নাসিম এলাকায় অবস্থিত।



১৪৩৪ হিজরি সনের ২১ শাবান তারিখে সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের শাসনামলে মক্কার গভর্নর খালেদ আল ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ মসজিদটি উদ্বোধন করেন। এ সময় মসজিদে হারামের ইমামদের চেয়ারম্যান ও প্রধান ইমাম ড. আবদুর রহমান আস সুদাইসও উপস্থিত ছিলেন। তিনি উদ্বোধনী দিনে নামাজের ইমামতিও করেন।

মসজিদে আল রাজি।  ছবি: মুফতি এনায়েতুল্লাহআল রাজি মসজিদে একসঙ্গে ৪৮ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। বিখ্যাত এই মসজিদে মসজিদুল হারামের মুয়াজ্জিনরা নিয়ম করে এসে আজান দেন। এ ছাড়া মসজিদে হারামের ১৩ জন ইমাম-খতিবের অনেকেই এখানে নামাজ পড়ান ও বয়ান করার জন্য আসেন।
 
মসজিদ সংলগ্ন বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে পরিকল্পিত গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। মসজিদের বাইরে বিশাল এলাকাজুড়ে লাগানো হয়েছে খেজুর গাছ। দেখে মনে হবে এটি কোনো খেজুরের বাগান।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ মসজিদে বিশেষ বয়ানের ব্যবস্থা রয়েছে এবং এসব বয়ান বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে লাইভ সম্প্রচার করা হয়।

মসজিদে আল রাজি।  ছবি: মুফতি এনায়েতুল্লাহউন্নত কার্পেট, দৃষ্টিনন্দন আধুনিক ঝাড়বাতি দিয়ে মসজিদটি সাজানো। আল রাজি মসজিদের ভেতরে প্রচুর এলইডি মনিটর বসানো। যা অন্য কোনো মসজিদে দেখা যায় না। এসব মনিটরে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভেসে উঠে বিভিন্ন দোয়া। যার মুখস্থ নেই তিনি মনিটরে দেখে তা পাঠ করতে পারেন।

মুসল্লিদের সব ধরনের সুবিধা রয়েছে মসজিদটিতে। পান করার ঠাণ্ডা পানি থেকে শুরু করে, তেলাওয়াত করার জন্য কোরআন শরিফ, পাঠ করার জন্য সুপরিসর লাইব্রেরি, যাতায়াতের জন্য চলন্ত সিঁড়ি, অজুর বিশাল ব্যবস্থা ও আলাদা ডাইনিং হলও রয়েছে।

শেখ সোলায়মান বিন আবদুল আজিজ আল রাজি সৌদি আরবের অন্যতম সম্ভ্রান্ত ও সম্পদশালী হিসেবে পরিচিত। তিনি অনেক দাতব্য কাজের সঙ্গে জড়িত। সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে তিনি বাদশাহ ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করেন। ইসলামের খেদমতে অবদান রাখার জন্য তাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

মসজিদে আল রাজি।  ছবি: মুফতি এনায়েতুল্লাহবিশ্বে ইসলামি ব্যাংকিং প্রবর্তনের বিষয়ে তার ব্যাপক অবদান রয়েছে। তিনি শিক্ষা, সামাজিক ও মানবিক প্রকল্পসমূহে তার সম্পদের একটি বড় অংশ দান করেছেন।
 
আল রাজি মসজিদ সংলগ্ন বিশাল এলাকা তিনি মসজিদে জন্য ওয়াকফ করে দিয়েছেন। মসজিদ সংলগ্ন বড় বড় কয়েকটি হোটেল রয়েছে। এসব হোটেলের আয়ের পুরোটা মসজিদের ব্যয় নির্বাহের জন্য খরচ করা হয়। মসজিদের সঙ্গে রয়েছে একটি হাসপাতাল। এখান থেকে দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

আল রাজি জামে মসজিদটি নজরকাড়া নকশায় আধুনিকভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের পাঁচটি গম্বুজ আর দুই পাশের লম্বা দুটো মিনার যে কারও দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এ ছাড়া রযেছে আরও ছোট বেশ কয়েকটি গম্বুজ ও মিনার। মসজিদের মূল ভবনে পুরুষরা নামাজ আদায় করেন, আর নারীরা আণ্ডার গ্রাউন্ডে। সেখান থেকে নারীদের জন্য আলাদা গাড়ি পার্কিংয়েরও ব্যবস্থা আছে। সুপরিসর মসজিদের জমকালো প্রবেশপথের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১১১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৭
এমএইউ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।