অস্ট্রেলিয়ায় কয়েকশ’ মসজিদ রয়েছে। যদিও নতুন মসজিদ নির্মাণের আবেদন নিষ্পত্তি হতে অনেক সময় লাগে।
দেশটিকে প্রথম মসজিদ আফগান উটচালকদের উদ্যোগে এডিলেডে ১৮৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সিডনি শহরের প্রথম মসজিদটি নির্মিত হয় ১৯৬০ সালের দিকে সারি হিলস এলাকায়। তবে সবচেয়ে বড় মসজিদ লাকেম্বা ও অবার্নে। অবার্ন মসজিদের নাম গ্যালিপলি মসজিদ, যা তুর্কি ইমিগ্রান্টরা তৈরি করেছেন। এ মসজিদে একসঙ্গে পাঁচ হাজার লোক নামাজ আদায় করতে পারেন। লাকেম্বা মসজিদটি লেবাননি মুসলমানেরা তৈরি করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ মানুষ ইসলাম ও মুসলমানদের সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন। তাদের মতে, মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তিতে অস্ট্রেলিয়া আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। মুসলমানরা তাদের কর্মপ্রচেষ্টা, জ্ঞান ও কলাকৌশল দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার মূলস্রোতে মিশে গেছেন।
তার পরও মুসলমানরা বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টায় নানা কর্মসূচি পালন করেন। এরই অংশ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী ক্যানবেরার গঙ্গালিন এলাকায় ৯৯ গম্বুজ বিশিষ্ট ব্যতিক্রমধর্মী নকশার একটি মসজিদ নির্মাণ করছেন। ব্যতিক্রমধর্মী নকশার মসজিদটি ইতোমধ্যেই আগ্রহে পরিণত হয়েছে। মসজিদটি তৈরির অনুমোদন পেতে সময় লেগেছে ১৪ বছর।
আগামী রমজান মাসে নামাজের জন্য মসজিদটি খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। মসজিদটির নকশা করেছেন এঙ্গেলো কান্দালেপাস।
যদিও তিনি খ্রিস্টান। মুসলমানরা মসজিদের নকশার জন্য তার কাছে এলে প্রথমে একটু অবাক হন। কারণ তিনি ভয় করছিলেন যে, ইসলাম সম্পর্কে তার গভীর ধারণা নেই। মসজিদের নকশা তৈরি করতে গিয়ে আবার কোনো ভুল না করে বসেন। শেষ পর্যন্ত যখন তিনি নকশা করতে রাজি হন। মসজিদের নকশার প্রয়োজনে তিনি ভারতের আগ্রা থেকে আহমেদাবাদ পর্যন্ত গেছেন।
মসজিদের ডিজাইনে তিনি মুসলিম ঐতিহ্য এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সম্মিলন ঘটানোর পরিকল্পনা করেন।
মসজিদের ৯৯টি গম্বুজে আরবিতে লেখা হবে আল্লাহর ৯৯টি গুণবাচক নাম। গম্বুজে আল্লাহর নামগুলো লিখতে তুরস্ক থেকে আনা হবে দক্ষ ক্যালিওগ্রাফারদের।
এই মসজিদের ডিজাইনের বিশেষত্ব হলো- মসজিদের নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যাতে করে সব ধর্মের অনুসারীরা এটা দেখে আবেগপ্লুত হন।
মসজিদটির নির্মাণে খরচ হবে ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি টাকায় সাড়ে ৭৪ কোটি টাকা)।
মসজিদের নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে, গত সেপ্টেম্বরে সিডনি আর্কিটেকচার ফেস্টিভ্যালে অসমাপ্ত মসজিদটি দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল। তখন বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীরা মসজিদটি দেখতে ভিড় জমান। তখন আগ্রহীদের মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্ম বিশ্বাস সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দেওয়া হয়।
-সিএনএন অবলম্বনে
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৮
এমএইউ/