ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

শেষ জামানার মুক্তির পথ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
শেষ জামানার মুক্তির পথ কিয়ামতের পূর্বে ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা এতটাই কঠিন, যতটা কঠিন তলোয়ারের সূক্ষ্ম ডগার ওপর খালি পায়ে হাঁটা। তবু আমাদের চলতে হবে ঈমান বাঁচিয়ে, ইসলামকে ধারণ করে

হজরত জিবরাইল (আ.) একবার ছদ্মবেশে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে হাজির হয়ে আরজ করেন, কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে? মহানবী (সা.) বলেন, জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি থেকে জিজ্ঞাসাকারী অধিক জ্ঞাত নয়। অর্থাৎ কিয়ামত কখন অনুষ্ঠিত হবে- তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না।

কিয়ামতের বড় বড় আলামত এখনও পরিদৃষ্ট না হলেও ছোট ছোট আলামতগুলো এমনভাবে সর্বত্র বিস্তার লাভ করেছে- যা রোধ করার ক্ষমতা কারও নেই। কিয়ামত কবে হবে- এ প্রশ্নের উত্তর অজানা হলেও এটা স্পষ্ট যে, আমরা এখন অতিবাহিত করছি সৃষ্টিজগতের শেষ সময়টা।

 

যে সময় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কিয়ামতের পূর্বে ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা এতটাই কঠিন, যতটা কঠিন তলোয়ারের সূক্ষ্ম ডগার ওপর খালি পায়ে হাঁটা। তবু আমাদের চলতে হবে ঈমান বাঁচিয়ে, ইসলামকে ধারণ করে।  

কিন্তু কি করে পাড়ি দেব এ কণ্টকাকীর্ণ পথ হাতে আলোর মশাল নিয়ে? কি করে এগিয়ে যাবো- ইসলামের ঝান্ডা হাতে?

মহামহিম আল্লাহতায়ালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর মমতা অপার। তাই তো তিনি রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন নবী-রাসূলদের। যারা মানুষকে জীবনপথের প্রতিটি মোড় চিনিয়ে দিয়েছেন স্নেহ ও মায়া-মমতার সঙ্গে। তারা দিয়ে গেছেন এ বন্ধুর পথ পাড়ি দেওয়ার নির্দেশনাও। বিশেষ করে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)।

তিরমিজি শরিফের (ফিতান অধ্যায়) হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত উম্মে মালিক আল বাহযিয়্যাহ (রা.)  থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) একবার ফিতনার আলোচনা করছিলেন। আমি জানতে চাইলাম, তখন উত্তম ব্যক্তি কে হবে? তিনি উত্তর দিলেন- ওই ব্যক্তি, যে নিজের পালিত পশুর হক আদায় করে ও তার রব্বের ইবাদত করে এবং ওই ব্যক্তি; যে তার ঘোড়া আঁকড়ে থেকে শত্রুকে ভয় দেখায় আর শত্রুরাও তাকে ভয় দেখায়। ’

এ হাদিসে দু’টি পথের কথা বলা হয়েছে-

১. লোকসঙ্গ বর্জন করে একাকি নিজের মতো ঈমান নিয়ে বেঁচে থাকা। নিজ প্রয়োজন সেরে কেবলমাত্র স্বীয় রব অভিমুখি হওয়া। অন্যের প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করা।

২. আল্লাহর রজ্জুকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে রাখার পাশাপাশি যারা আল্লাহ ও রাসূলের অবাধ্যতা করবে, তাদের প্রতি আঙুল তোলার স্পর্ধা দেখাবে, তাদের শক্তভাবে প্রতিহত করা। ইসলামের ঝান্ডা হাতে বিজয়ের মশাল জ্বেলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। বাতিলকে গুঁড়িয়ে দিয়ে হকের স্লোগান জবানে রাখা।

সুতরাং, ব্যক্তি শুধু নিজের ঈমান বাঁচুক ও ঈমান বাঁচিয়ে ইসলামকে এগিয়ে নিয়ে যাক- এই দু’টিকেই মুক্তির পথ বলা হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো- এ দুইয়ের মাঝে উত্তম পথ কোনটি?

এ জন্য দেখা করা যেতে পারে কোরআনে কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের বর্ণনা। যেমন, কোরআনে বিধান এসেছে সৎকাজে আদেশের ও অসৎকাজ থেকে নিষেধের। রয়েছে কিয়ামত অবধি কল্যাণ ও সৎকাজের প্রতি মানুষকে আহ্বানের আদেশ।  

এক হাদিসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো গর্হিত কাজ দেখবে, সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিহত করে। যদি না পারে, তবে যেন জবান দ্বারা প্রতিবাদ করে। তাও যদি না পারে, তবে যেন অন্তর দ্বারা ঘৃণা করে। (জেনে রেখ) তা হলো ঈমানের সবচেয়ে দুর্বল স্তর। ’ –তিরমিজি

বর্ণিত এসব আয়াত ও হাদিসের আলোকে বলা যায়, এ জামানায়ও ওই ব্যক্তিই সবচেয়ে উত্তম হবে; যে হকের পথে অবিচল থাকার পাশাপাশি বাতিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে। তা হোক অস্ত্রের মাধ্যমে, কলমের মাধ্যমে কিংবা আন্দোলনে।  

আল্লাহতায়ালা সবাইকে উত্তম পথের অনুসারী হওয়ার তওফিক দিন। আমিন।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।