সমাজে আমরা এমন বহু রকমের পেশা ও কাজের লোকজনের সঙ্গে এবং বিচিত্র নৈতিক গুণের মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করি, যাদের পারস্পরিক উপলব্ধি বিভিন্ন রকমের। সেজন্য তাদের সম্পর্কে মূল্যায়ন করা খুব সহজ কাজ নয়।
অহংকার মানুষকে তার কাঙ্খিত লক্ষে পৌঁছার পথে প্রতিবন্ধক। অহংকার এমন এক জিনিস, যা অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করা কিংবা অন্যের সাহায্য চাওয়ার মানসিকতা পর্যন্ত নষ্ট করে দেয়। এ ছাড়া অহংকারী স্বার্থপর লোকের আচার-আচরণ, কর্মকাণ্ড ইত্যাদি ভয় কিংবা ত্রাস সৃষ্টি করে। যার ফলে অন্যদের অধিকার পদদলিত হয়। মঙ্গল ও কল্যাণ অনুভবের পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এমনকি নিজের যোগ্যতা, সামর্থ্য ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেধার বিকাশ রুদ্ধ হয়ে যায়। তাই তো জ্ঞানীরা বলেন, ‘মেধা ও প্রতিভা ধ্বংসের সহজতম উপায় হলো- অহমিকা। ’
অহংকারী যে ধ্বংসপ্রাপ্ত- এর উদাহরণ হলো- ইবলিস শয়তান। ইবলিস ছিলো- জিনদের অন্তর্ভুক্ত এবং ছয় হাজার বছর পর্যন্ত সে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল ছিলো। ফেরেশতাদের কাতারেও তার একটা বিশেষ পদমর্যাদা ছিলো। কিন্তু যখন ইবলিস আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে অহংকার দেখালো তখনই সে প্রত্যাখ্যাত হয়ে গেলো। একেবারে চিরদিনের জন্য বিতাড়িত, পথভ্রষ্ট হয়ে গেল সে।
আল্লাহতায়ালার কোনো সৃষ্টিরই অহংকার করা সাজে না। গর্ব ও অহংকার একমাত্র আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য। হজরত লোকমান আলাইহিস সালাম তার ছেলেকে অহংকার থেকে দূরে থাকার আদেশ দিয়ে বলেছেন, ‘ঘৃণা ও অবজ্ঞাভরে মানুষের কাছ থেকে তোমার দৃষ্টি ফিরিয়ে নিও না, গর্ব ও অহংকারের সঙ্গে দুনিয়াতে চলো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অহংকারী লোকদেরকে পছন্দ করেন না। ’
হাদিসে এ বিষয়ে কঠোর সতর্কবার্তা এসেছে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো ব্যক্তি জাহান্নামে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে শস্যদানা পরিমাণ ঈমান থাকবে এবং এমন কোনো ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার অন্তরে শস্যদানা পরিমাণ অহংকার থাকবে। ’ –সহিহ মুসলিম শরীফ: ১/৬৫
বর্ণিত হাদিসে জান্নাত থেকে দূরে এবং জাহান্নামে প্রবেশের কারণ হিসেবে অহংকারকে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ অহংকার এতো মারাত্মক গোনাহ, যার থেকে সামান্য অহংকার প্রকাশ পাবে, সে জান্নাতে স্থান পাবে না; তার ঠিকানা হবে একমাত্র জাহান্নাম। এতে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়- অহংকার আল্লাহর কাছে কী পরিমাণ নিকৃষ্ট।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৮
এমএইউ/