ইসলাম মনে করে, ভালো নয় দান গ্রহণ করার মতো দরিদ্রতা, তেমনি ভালো নয় আল্লাহবিমুখ ধনাঢ্যতা। কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি ধনী হয় আর সে জাকাত, হজ, সদকা ইত্যাদি যাবতীয় হক আদায় করে, তাহলে তার প্রশংসাও এসেছে পবিত্র হাদিসে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, এই দুই শেণির মানুষের মধ্যে উত্তম কোন ব্যক্তি? দেখা যাক কোরআন-হাদিসের কিছু বর্ণনা।
১. হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা খোদাভীরু ধনাঢ্য বান্দাকে পছন্দ করেন। -সহিহ মুসলিম: ২৯৬৫
২. হজরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কুফর এবং দরিদ্রতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, উভয়ে সমান? তিনি (নবী করিম সা.) বললেন, হ্যাঁ। ’ -মিশকাত
অধিকাংশ ইসলামি স্কলারের অভিমত হলো, হাদিসে বর্ণিত দরিদ্রতা বলতে যে দরিদ্রতা উদ্দেশ্য সেটা হলো- যে দরিদ্রতার কারণে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর অসন্তুষ্ট হয়, ধৈর্য্যহীন হয়ে যায়।
বিষয়টি বুঝার জন্য আরও কিছু হাদিস উল্লেখ করা যেতে পারে।
১. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! আমাকে মিসকিন অবস্থায় জীবিত রাখুন, আমাকে মিসকিন অবস্থায়ই মৃত্যু দান করুন এবং মিসকিনদের কাফেলায় আমাকে পুনরুত্থিত করুন। হজরত আয়েশা (রা.) জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কেন? তিনি বললেন, কেননা তারা ধনীদের চল্লিশ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। ’ –সুনানে তিরমিজি: ২৩৫২
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, জান্নাতে সেই ধনীরা যাবেন, যারা সম্পদের যাবতীয় হক আদায় করবেন। এরও আগে দরিদ্ররা যাবেন। এতে কৃতজ্ঞ ধনীর তুলনায় ধৈর্য্যশীল দরিদ্রই উত্তম বুঝা যায়।
২. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দরিদ্র মুহাজিরদের উসিলায় বিজয় কামনা করতেন। অথচ ধনীদের ক্ষেত্রে এমন কোনো বর্ণনা নেই। -মিশকাত: ৫১৭৫
৩. সবচেয়ে বড় কথা হলো, হজরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং দরিদ্র ও মিসকিনের ন্যায় জীবনযাপন করেছেন। যদি কৃতজ্ঞ ধনী উত্তম হতো, তাহলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সেই জিন্দেগি দেওয়া হতো।
দুই দিকের হাদিসসমূহ পর্যালোচনা করে অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও উলামায়ে কেরাম বলেছেন, কৃতজ্ঞ ধনীর তুলনায় ধৈর্য্যশীল দরিদ্র উত্তম।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
এমএইউ/