প্রথমটি মধ্য কলকাতার পার্কস্ট্রিট সংলগ্ন এসপ্ল্যানেড অঞ্চলে, দ্বিতীয়টি দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জে। প্রথম মসজিদটি কেবল ধর্মীয় কারণে নির্মিত হলেও দ্বিতীয়টি তা নয়।
ঐতিহাসিক এ দুটি মসজিদের নথি জোগাড় করা খুবই দুষ্কর। মসজিদের ইমাম-মুয়ায়াজ্জিনরাও পরিপূর্ণ ইতিহাস জানেন না।
গোলাম প্রিন্স শাহ (টিপু সুলতানের পরিবার) ট্রাস্টির তথ্য বলছে, টিপু সুলতানের ১১তম ও সবচেয়ে কনিষ্ঠ পুত্র মোহাম্মদ গোলাম প্রিন্স শাহ তার বাবা টিপু সুলতানের স্মরণে মসজিদটি দুটি নির্মাণ করেন। মধ্য কলকাতার এসপ্ল্যানেড অঞ্চলে ১৮৩২ খ্রিস্টাব্দে জমি কিনে প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করেন তিনি। যা শেষ হয় ১৮৪২ সালে।
১৯৮০-র দশকে মাটির তলা দিয়ে কলকাতায় মেট্রোরেল নির্মাণের সময় মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মেরামত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে মসজিদ সুরক্ষা ও কল্যাণ কমিটি এবং মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে মসজিদটিকে মেরামত করে। এরপর ফের ২০০৪ সালে কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুনামি ঝড়ে মসজিদটি আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মসজিদ কমিটিকে ২১ হাজার ৫শ’ ডলার কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে সহযোগিতা করেন। বারবার ক্ষয়ক্ষতি ও মেরামতের ফলে মসজিদটির আসল স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক অবলুপ্তি ঘটে।
১০টি গম্বুজ ও ৪টি বড় মিনার ও ১২টি ছোট মিনার দ্বারা মসজিদটি নির্মিত। এ মসজিদে একসঙ্গে ১৫শ’ মানুষ নামাজ পড়েতে পারেন। মসজিদটিতে রমজান ও ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এটি কলকাতার স্থাপত্য ও সংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অন্যতম বড় নিদর্শন।
এ মসজিদের অপর বৈশিষ্ট্য হলো এর প্রাঙ্গণে বিভিন্ন জাতের কবুতরের দীর্ঘদিনের বসবাস। নামাজিরা নামাজে পর নিয়মিত কবুতরদের খেতে দেন। কেউ চাইলে গোটা রমজান এখানেই কাটাতে পারেন। বর্তমানে অনেকেই শুয়েবসে কোরান পাঠের মধ্য দিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গণে দিন কাটাচ্ছেন। রমজান মাসে ব্যবস্থা থাকে ইফতারের। মসজিদটি নামাজ পরিচালনার জন্য একজন ইমাম ও মুয়াজ্জিন ছাড়াও দেখভালের জন্য রয়েছেন বেশ কয়েকজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৮
এমজেএফ