কেবল মসজিদ-মাদরাসা ও ধর্মীয় স্থাপনা নয়, স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাসাদ, ঝরনা, গোসলখানা, বাগান, বসতবাড়ি প্রভৃতি ক্ষেত্রেও ইসলামি স্থাপত্যকলা অনুপম শৈলী এবং রীতিতে সপ্রতিভ।
মুসলিম স্থাপনাগুলো উন্নত স্থাপত্যশৈলী ও কারুকার্যখচিত নকশার মাধ্যমে বিশ্বের ভ্রমণপ্রেমীদের মনে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের আভা ছড়িয়েছে।
আলহামরা প্রাসাদ, গ্রানাদা, স্পেন
একাদশ শতকে নির্মিত এই প্রাসাদটি গ্রানাদার শাসকদের আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এই প্রাসাদ থেকেই স্পেনে মুসলিম শাসনের সর্বশেষ চিহ্নটুকুও বিলুপ্ত হয়। গ্রানাদার শেষ আমির আবু আবদুল্লাহ বা দ্বাদশ মুহাম্মদ এই প্রাসাদ থেকেই স্পেনীয় সম্মিলিত খ্রিস্টান বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। মুরিশ স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই প্রাসাদটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত এবং স্পেনের অন্যতম মৌলিক ও আকর্ষণীয় পর্যটনকেন্দ্র।
বাহাউদ্দিন নকশেবন্দির কবর-কমপ্লেক্স, বুখারা, উজবেকিস্তান
সুফি-সাধনার নকশেবন্দি তরিকার প্রতিষ্ঠাতা বাহাউদ্দিন নকশেবন্দি ১৩১৮ সালে বুখারায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৩৮৯ সালে তিনি বুখারাতেই ইন্তেকাল করেন। ১৫৪৪ সালে তার কবরসংলগ্ন জায়গায় বর্তমানে দৃশ্যমান মাজার বা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। এটি মধ্য এশিয়ার মুসলমানদের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র ও আকর্ষণীয় স্থান।
তাজমহল, আগ্রা, ভারত
তাজমহলের নির্মাণকাজ শেষ হয় ১৬৪৮ সালে, উস্তাদ আহমদ লাহোরি এবং উস্তাদ ঈসার নকশা ও তত্ত্বাবধানে। এটি মূলত একটি সমাধি ও স্মৃতি-স্থাপত্য। ভারতের আগ্রা শহরে যমুনা নদীর তীরে নির্মিত এই সমাধি সৌধটি মুঘল-পারসিক স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে নির্মিত। ১৬৩২ সালে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের স্ত্রী মমতাজ মহলের ইন্তেকালের পর সম্রাট তার কবরের উপর এই সমাধি সৌধের নির্মাণকাজ শুরু করেন।
ডোম অব রক, জেরুজালেম, ফিলিস্তিন
ফিলিস্তিনের জেরুজালেমের বাইতুল মুকাদ্দাস প্রাঙ্গণে ও আল-আকসা মসজিদের উত্তরে অবস্থিত এই স্থাপনাটি ইসলামের প্রায় প্রাথমিক যুগের একটি স্থাপত্য নিদর্শন। ৬৯১ সালে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ানের শাসনামলে এটি নির্মাণ করা হয়। আরবিতে ‘কুব্বাতুস সাখরা’ নামে এটি পরিচিত। স্থাপনাটি মূলত একটি স্মৃতিচিহ্ন। বলা হয়ে থাকে, রাসুল (সা.) মিরাজের রাতে এই স্থান থেকেই ঊর্ধ্বাকাশে আরোহণ করেন। উমাইয়া শাসনামলে নির্মিত হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন শাসক এই স্থাপনাটির সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধন করেছেন।
শেখ লুতফুল্লাহ মসজিদ, ইস্পাহান, ইরান
বাহাউদ্দিন আল-আমিলি এবং উস্তাদ মুহাম্মদ রেজা ইসফাহানির নকশা ও তত্ত্বাবধানে নির্মিত শেখ লুতফুল্লাহ মসজিদটি ইরানের সাফাভি শাসনামলের স্থাপত্য নির্দশনগুলোর অন্যতম। ইরানের ইস্পাহানের নকশে জাহান ময়দানের কাছে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণকাজ শুরু হয় ১৬০৩ সালে এবং ১৬১৯ সালে এটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। সাফাভি শাসক শাহ আব্বাসের শাসনামলে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
এমএমইউ/এমজেএফ