ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইসলাম

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মুসলিম ফুটবলাররা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মুসলিম ফুটবলাররা আলজেরীয় খেলোয়াড় জাহান বখশ। ছবি: সংগৃহীত

আধুনিক ফুটবলের ঘরোয়া লিগগুলোর মধ্যে দর্শকপ্রিয়তায় শীর্ষে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ (ইপিএল)। বর্তমানে লিগের বিভিন্ন দলে মুসলিম খেলোয়াড়ও রয়েছেন। নিজ নিজ জায়গা থেকে অবদান রেখে চলেছেন তারা। 

বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য এবার থাকছে ইংলিশ লিগের মুসলিম খেলোয়াড়দের কথা। আর এসব তুলে ধরেছেন ইসলাম বিভাগের নিউজরুম এডিটর মুফতি মুহাম্মাদ মিনহাজ উদ্দিন

 

বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা বলছে, ১৯৯২ সালে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া লিগ যখন ‘ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ’ নামে শুরু হয়, তখন একমাত্র মুসলিম খেলোয়াড় ছিলেন।  

মোহাম্মদ সালাহ।                                          ছবি: সংগৃহীত টটেনহ্যাম হটস্পার্সের হয়ে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আলী আমর নাঈম খেলেছেন সেই মৌসুমে। এরপর গত দুই দশকে ইংলিশ লিগে মুসলিম ফুটবলারের সংখ্যাই কেবল বাড়েনি সেই সঙ্গে ফুটবল মাঠে বেড়েছে মুসলিম সংস্কৃতির চর্চাও।

২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সেন্ট জেমস পার্কে নিউক্যাসল ইউনাইটেড বনাম অ্যাস্টন ভিলার ম্যাচের একটি গোল উদযাপনের ভঙ্গিমাই পরবর্তীতে লিগে মুসলিম সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে ওঠে।  ওই খেলার ৩০ মিনিটের মাথায় ইউনাইটেডের হয়ে গোল করেন সেনেগালের মুসলিম খেলোয়াড় ডেম্বা বা।  

তিনি গোল উদযাপনের জন্য দৌড়ে কর্নারের পতাকার কাছে চলে যান। তার স্বদেশী আরেক খেলোয়াড় পাপিস সিসে সেখানে দাঁড়িয়েছিলেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে দুই সতীর্থ গোল উদযাপনের জন্য সিজদায় লুটিয়ে পড়েন।

এরপর থেকে এই সিজদাই প্রিমিয়ার লিগে মুসলিম সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে ওঠে। এখন এই প্রতীক মুসলিম খেলোয়াড়রা ইংলিশ লিগ ছাড়াও আন্তর্জাতিক ম্যাচেও এভাবেই গোল উদযাপন করছেন।

মোহাম্মেদ ইলনেন।  ছবিধ সংগৃহীত মুসলিম ফুটবলাররা ইংলিশ লিগে নিজেদের প্রমাণের পাশাপাশি নিজের দেশের প্রতিনিধিত্বও করছেন। খেলতে গিয়ে এসব খেলোয়াড় প্রচুর অর্থ ও যশ-খ্যাতি অর্জন করছেন। কিন্তু তারপরও নিজেদের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিচয় তারা ধরে রাখেন।  

মুসলিম খেলোয়াড়দের দাবি মতো লিগে দলগুলো তাদের জন্য হালাল খাবারের ব্যবস্থা করে। এমনকি ইবাদতের জন্যও সময়-সুযোগ করে দেয়।

২০১৮-১৯ মৌসুমে ইংলিশ লিগে মুসলিম ফুটবলারদের সংখ্যা মোট ৫১ জন। সর্বোচ্চ সাত মুসলিম ফুটবলার আছেন লিচেস্টার সিটি এফসিতে। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচজন রয়েছেন আর্সেনালে।  

আর ম্যানচেস্টার সিটি এফসি, লিভারপুল এফসি, হুডার্সফিল্ড এফসি, এভার্টন, ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসি এফসিতে আছেন চারজন করে। চলতি মৌসুমের ইংলিশ লিগে মুসলিম প্লেয়াররা হলেন- 

আর্সেনাল এফসি
শেডরান মুস্তাফি, জার্মান ডিফেন্ডার।
সিড কোলাসিন্যাক, বসনিয়ান ডিফেন্ডার।
মেসুত ওজিল, তুর্কি বংশোদ্ভুত জার্মান মিডফিল্ডার
মোহাম্মদ এলেনি, মিশরীয় মিডফিল্ডার
গ্রানিট সাকা, সুইস মিডফিল্ডার।

ব্রাইটন ও হব এলবিওন
বেরাম কায়াল, ফিলিস্তিনী মিডফিল্ডার।
আলিরাজা জাহানবখশ, ইরানি মিডফিল্ডার।
এলদিন।  ছবি: সংগৃহীতচেলসি এফসি
ন’গোলো কান্তে, ফরাসি মিডফিল্ডার।
অ্যান্টনিও রুডিগার, জার্মান ডিফেন্ডার।
ক্রিস্টাল প্যালেস
বাকারি সাকো, মালিয়ান মিডফিল্ডার।
মামাদৌ সাখো, ফরাসি ফুটবলার, তিনি আগে লিভারপুলে ছিলেন।
প্যাপ সউরে, সেনেগালের ডিফেন্ডার।
চেইখু কৌয়াতে, সেনেগালের মিডফিল্ডার।
এভার্টন
ইদ্রিস গুয়ে, সেনেগালের মিডফিল্ডার।
মুহাম্মদ বেসিচ। বসনিয়ান মিডফিল্ডার।
ওমর নিসসে, সেনেগালের ফরোয়ার্ড
চেন্ক তোসুন, তুর্কি ফরওয়ার্ড।

ফুলহ্যাম এফসি
পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত আমেরিকান ধনকুবের শহিদ খান ফুলহ্যাম কিনে নিতে চাইলে আলোচনা হয় বেশ। এখন ফুলহ্যামে মুসলিম খেলোয়াড় দুইজন। বেলজিয়ান মিডফিল্ডার ইবরাহিম কিসে ও ফরাসি ফরোয়ার্ড আবু বকর কামারা।

হুডার্সফিল্ড এফসি
ফ্লোরেন্ট হাদের্গজন্জ, সুইস ডিফেন্ডার।
আবদেল হামিদ সাবিরি, মরক্কোর মিডফিল্ডার।
রমজান সোভি, মিশরীয় মিডফিল্ডার, তিনি স্টোক সিটি এসেছেন।
অ্যাডাম ডিয়াখবি, সম্প্রতি ফ্রান্সের এএস মোনাকো থেকে এসেছে।

লিচেস্টার সিটি এফসি

ইয়োহান বেনালৌয়ানে, তিউনিশিয়ার ডিফেন্ডার 
এলডিন জ্যাকুপভিক, সুইস গোলরক্ষক।
কেগলার সোয়ুনসু, তুর্কি ডিফেন্ডার।
রশিদ গেজ্জাল, আলজেরিয়ার মিডফিল্ডার।
হামজা চৌধুরী, ইংলিশ মিডফিল্ডার, তার মা বাংলাদেশি।  
ফৌসসেনি ডিয়াবাটে, মালিয়ান মিডফিল্ডার।
ইসলাম স্লিমানি, আলজেরিয়ার স্ট্রাইকার।
লিচেস্টার সিটির আরেকজন মুসলিম খোলোয়াড় ছিলেন রিয়াদ মাহরেজ, তিনি ম্যানসিটিতে ট্রান্সফার হয়েছেন।

লিভারপুল এফসি
সাদিও মানে, সেনেগালের মিডফিল্ডার
মোহামেদ সালাহ, মিশরীয় মিডফিল্ডার, গত মৌসুমে তিনি রেকর্ড করেছেন।
নাবি কেইতা, ঘানার মিডফিল্ডার।
ঝেরদান শাকিরি, ফরওয়ার্ড হিসাবে খেলে থাকেনন। তিনি স্টক সিটি থেকে যোগ দিয়েছেন।
ম্যানচেস্টার সিটি এফসি
রিয়াদ মাহরেজ, আলজেরিয়ার মিডফিল্ডার।
ইলকায় গুঁদোগান, জার্মান মিডফিল্ডার।
বেঞ্জামিন মেন্ডি, ফরাসি ডিফেন্ডার।
আব্দুল নাসির ওলুওয়াতোসিন (টসিন) আদরবিয়ায়ো, তিনি ওয়েস্ট বর্ন সেনসেশন।
ম্যাচেস্টার ইউনাইটেড
পল পগবা, ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার।
মারুয়েন ফেল্লাইনি, বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার।

নিউক্যাসেল ইউনাইটেড
আকরাফ লজার, মরক্কোর ডিফেন্ডার।  
মোহাম্মদ ডায়ম, সেনেগালের মিডফিল্ডার।

সাউথ হ্যাম্পটন এফসি 
মোহাম্মদ ইলিয়ানিউসি। নরওয়েজিয়ান মিডফিল্ডার।

টটেনহ্যাম হটস্পার
মুসা সিসোকো, ফরাসি মিডফিল্ডার।
মৌসা ডিম্বেলে, বেলজিয়ান মিডফিল্ডার।
সার্জে অরিয়ার, আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার।

ওয়াটফোর্ড এফসি
ইউনিস কাবুল, ফরাসি ডিফেন্ডার।
আবদুল্লায়ে ডকোরে, ফরাসি মিডফিল্ডার।
ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড
ইসপা ডিওপ, ফরাসি মিডফিল্ডার।

এএফসি বোনমার্থ 
আসমির বেগোভিচ, বসনিয়ান গোলকিপার।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লেখা পাঠাতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৮
এমএমইউ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।